সবাই চাইলে ইভিএম বাতিল করে দেবো: সিইসি
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: আসন্ন ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়ে নানা অভিযোগ আর আপত্তির মুখে মুখ খুলেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা অনেক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে ইভিএম টিকিয়ে রেখেছি। যদি শেষ পর্যন্ত সন্দেহ থাকে এবং সবাই যদি মনে করে ইভিএম পদ্ধতিতে নির্বাচন ভালোভাবে পরিচালনা করা যায় না কিংবা নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে- তাহলে আমরা ইভিএম ব্যবহার করবো না। বাতিল করে দেবো।’ বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) আয়োজিত ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন-২০২০ উপলক্ষে রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহায়ক কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে সিইসি বলেন, ‘আপনারা গত কয়েক বছর ইভিএমের ওপর নানাভাবে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, কর্মদক্ষতা অর্জন করেছেন। আমরা বিশ্বাস করি, ইভিএমের মাধ্যমে ভোটাররা সহজে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। এ নিয়ে কি সন্দেহ আছে?’
তিনি বলেন, ‘আমরা ইভিএম দিয়ে অনেকগুলো নির্বাচন করলাম। জাতীয় সংসদ নির্বাচনও করলাম, স্থানীয় সরকারও করলাম, সেগুলোতে সফলতাও পেয়েছি।’ রিটার্নিং কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে সিইসি আরও বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে আজকে আপনারা যে অবস্থানে এসেছেন এর জন্য কি আপনাদের কম ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। কত লোকেরই তো আঁকাবাঁকা, তেড়া কথা শুনতে হয়েছে। হয়তো আরও শুনতেও হবে।’ প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, ‘প্রার্থীদের কার কী পরিচয়, কী পদ, কী বর্ণ, কী রঙ কিংবা কার কী রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড- নির্বাচন পরিচালনাকারীদের সেটি দেখার বিষয় নয়। ভোটের মাঠে প্রত্যেককে সমান গুরুত্ব দিতে হবে, প্রত্যেকের সঙ্গে সমান আচরণ করতে হবে এবং প্রত্যেকের নির্বাচনী কর্মকাণ্ডকে মূল্যায়ন করতে হবে।’ ইভিএম নিয়ে শুরু থেকে বিএনপিসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল বিরোধিতা করে আসলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ বেশ কিছু রাজনৈতিক ইভিএমের পক্ষে রয়েছে। এর পক্ষ-বিপক্ষের মাঝেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ সিটি করপোরেশন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অনেক জায়গায় ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। এদিকে একই অনুষ্ঠানে আজ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশনের (ইসি) স্বাধীনতা নির্বাচন প্রক্রিয়ার কাছে বন্দি। কেন নির্বাচন নিরপেক্ষ, শুদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য হয় না? এ প্রশ্নের উত্তর আত্মজিজ্ঞাসার কারণেই আমাকে খুঁজতে হয়েছে।’ তিনি বলেছেন, ‘ইভিএম ব্যবহার নিয়ে অংশীজনের অনেকের মধ্যে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব রয়েছে। নির্বাচন কমিশনের জন্য একটি একটি অগ্নিপরীক্ষা। এই চ্যালেঞ্জে সফল হলে পরবর্তীতে সবক্ষেত্রে ইভিএম ব্যবহার সম্ভব হবে। তবে ইভিএমে ভোটগ্রহণ প্রশ্নবিদ্ধ হলে গোটা নির্বাচনই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যাবে।’ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহদাত হোসেন চৌধুরী, রফিকুল ইসলাম ও মাহবুব তালুকদার। আগামী ৩০ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হওয়ার কথা রয়েছে।