তানোর হাসপাতালের বড় বাবুর বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ

তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোর উপজেলা সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের (হাসপাতাল) প্রধান হিসাব রক্ষক (বড় বাবু) শাহীন সাহেবের বড় বড় অনিয়ম ও দূর্নীতির কাছে এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারিরা জিম্মি বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, বড় বাবুর অনৈতিক আবদার পূরুণে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী ব্যর্থ হলেই তাদের ওপরে নেমে আসছে শাস্তির খড়গো, হয়রানি ও অবর্নীয় দুর্ভোগ। ইতি পূর্বে বড় বাবুর অনিয়ম ও দূর্নীতি নিয়ে কথা বলায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দুই কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেয়া হয়েছে ফলে ভয়ে কেউ আর মূখফুটে প্রতিবাদ করতে পারছে না। অধিকাংশক্ষেত্রে প্রতিবাদ করেও কোনো প্রতিকার মিলছে না উল্টো প্রতিবাদকারীদের নানামূখী হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, বড় বাবুর কাছে হাসপাতালের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী জিম্মি বিভিন্ন উৎসব বোনাস বা বেতন উত্তোলনের সময় প্রায় বড় বাবু বিভিন্ন অজুহাতে ৫শ’ টাকা থেকে হাজার টাকা কেটে রাখেন। তারা বলেন, বিষয়টি টিএইচও ম্যাডামকে জানালেও কোনো প্রতিকার হয়নি। এদিকে চলতি অর্থবছরের জুন মাসে অচল জেনারেটর ও এ্যাম্বুলেন্স সচল দেখিয়ে মেরামতের নামে বিপুল অঙ্কের টাকা উত্তোলন ও আতœসাত করা হয়েছে। ওদিকে কোন খাতে কত টাকা উত্তোলন করা হয়েছে ইত্যাদি বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের কোনো সুনিদ্রিস্ট কোনো তথ্য জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে নীতিমালা লঙ্ঘন করে বড় বাবু তার শশুর বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের নিয়ামতপুর উপজেলার ঠিকানা দিয়ে চাকরি নিয়েছেন অথচ তার বাড়ি রাজশাহী শহরে নীতিমালা অনুযায়ী সরকারী চাকরির ক্ষেত্রে কেবলমাত্র নারীরা শশুর বাড়ির ঠিকানা দিয়ে চাকরি নিতে পারবেন এর ব্যতিক্রম করা ডাবে না। এছাড়াও তিনি প্রায় একযুগ হাসপাতালের বাসভবনে থাকলেও কখানো একটি টাকাও ভাড়া দেননি বলেও প্রচার রয়েছে।
অপরদিকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মচারি জানায়, চলতি বছরের জুন মাসে বড় বাবু স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রায় অচল এ্যাম্বুলেন্স সচল দেখিয়ে রক্ষণাবেক্ষন (মেরামত) বাবদ ৫ লাখ টাকা বিল উত্তোলন ও আরো ২ লাখ টাকা চাহিদা পাঠিয়েছে, একইভাবে অচল জেনারেটর সচল দেখিয়ে মেরামত বাবদ ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা, টিএইচও সাহেবের গাড়ীর মেরামত বাবদ ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, ওষুধী ও ফুল বাগানের নামে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার নামে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা, স্টেশনারী খাতে ৮৪ হাজার টাকা অথচ স্টেশনারী সামগ্রী কখানোই কেউ চোখেই দেখে না, সাহায্য-সহায়তা খাতে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা এছাড়াও হাসপাতালের ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের পোষাকের জন্য মাথা পিছু ৭ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিšত্ত বড় বাবু তাদের টাকা না দিয়ে নিম্নমাণের কাপড়ের পোষাক দিয়ে টাকা আতœসাতের চেস্টা করছে। এভাবে কোনো কাজ না করেই টিএইচও’র যোগসাজশে ভূয়া বিল-ভাওচার দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা উত্তোলন ও আতœসাৎ করে চলেছে। সরেজমিন অনুসন্ধান করা হলেও এসব অনিয়ম-দূর্নীতির সত্যতা পাওয়া যাবে, তাই তারা সরেজমিন অনুসন্ধান পূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদুক) ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এব্যাপারে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রধান হিসাব রক্ষক (বড় বাবু) শাহীন সাহেব এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কোনো অনিয়ম বা দূর্নীতির সুযোগ নাই এসব অপপ্রচার। এব্যাপারে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের (টিএইচও) ডা, রোজী আরা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে তিনি কোনো অভিযোগ পাননি, এছাড়া এখানে অনিয়ম-দূর্নীতির কোনো সুযোগ নাই। তিনি বলেন, একটি মহল অবৈধ সুবিধা না পেয়ে হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে এসব অপপ্রচার করছে। এব্যাপারে রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন ডা, কাজী মিজানুর রহমান বলেন, কারো বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *