আগাম জামিন চাইতে গিয়ে গ্রেফতার হলেন ডিআইজি মিজান

অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: জামিন আবেদনের জন্য আদালতে গেলে গ্রেফতার দেখিয়ে বিতর্কিত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে শাহবাগ থানায় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে হাইকোর্ট প্রশাসন। হাইকোর্টের নির্দেশের পর সোমবার (১ জুলাই) বিকালে তাকে গ্রেফতার করে শাহবাগ থানা পুলিশ। ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, ‘আমরা আদালতের নির্দেশ পালন করছি।’ সোমবার (১ জুলাই) দুপুরে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় হাইকোর্টে আগাম জামিনের জন্য গিয়েছিলেন। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে গ্রেফতার করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন। এরপর দুই বিচারপতি এজলাস কক্ষ ত্যাগ করেন। পরে আদালতের আদেশটি কোর্ট প্রশাসন শাহবাগ থানাকে জানালে পুলিশের রমনা বিভাগের একজন অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ও শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান হাইকোর্টে আসেন। এ বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, ‘আগাম জামিন চাইতে হলে হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ করতে হয়। যেহেতু তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিন চেয়েছেন, সেহেতু সরাসরি কারাগারে পাঠানোর এখতিয়ার আদালতের আছে। সেক্ষেত্রে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ হেফাজতে না রেখেই তাকে কারাগারে নিতে হবে। এরপর হাইকোর্টের আদেশের একটি কপি বিচারিক আদালতে গেলে তারা আসামিকে পরবর্তী শুনানির জন্য হাজির হতে বলবেন।’ এর আগে রবিবার (৩০ জুন) আগাম জামিন চেয়ে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এই ডিআইজি মিজানুর রহমান হাইকোর্টে আবেদন জানান। তবে জামিন নিতে গিয়ে তিনি বেছে নিয়েছেন অভিনব এক প্রতারণার পথ। নিয়ম অনুসারে একই আবেদন একটি কোর্টে দাখিল করার নিয়ম থাকলেও মিজান ভিন্ন দুইটি বেঞ্চে তার আবেদন দাখিল করেছেন। তবে তার এ ধরনের প্রতারণা শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রপক্ষ কিংবা দুদকের চোখ এড়াতে পারেনি। গত ২৫ জুন তিন কোটি ৭ লাখ টাকার সম্পদ গোপন এবং তিন কোটি ২৮ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ডিআইজি মিজান, স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না, ছোট ভাই মো. মাহবুবুর রহমান ও ভাগ্নে মাহমুদুল হাসানকে আসামি করে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ মামলার পরপরই আসামিরা গা ঢাকা দেন তারা। তার স্ত্রী এরই মধ্যে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন বলেও জানা গেছে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর ২৫ জুন ঘুষ দেয়ার অপরাধে মিজানুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর আগে গত ১৯ জুন আদালত এক আদেশে মিজানুর রহমানের স্থাবর সম্পদ ক্রোক এবং ব্যাংক হিসাবের লেনদেন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন ডিআইজি মিজান। সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনারও ছিলেন তিনি। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ছিলেন। পরে সেখান থেকে তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *