ইসলামপুরে সোলার মিনি-গ্রীড প্রকল্পে যমুনার দূর্গম মন্নিয়ারচর আলোকিত
ওসমান হারুনী,জামালপুর প্রতিনিধি: জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলায় বেলগাছা ইউনিয়নের মন্নিয়ারচর গ্রামে ইডকলের অর্থায়নে ভিনসেন-জিটেক এর বাস্তবায়নে ২৪৯.৬কিলোওয়াট পিক এর সোলার মিনি-গ্রীড প্রকল্প স্থাপন করা হয়েছে। যে চরের মানুষ কখনো স্বপ্নেও ভাবেনাই তাদের এলাকায় বিদ্যুৎ আসবে,সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়েছে ইডকলের সোলার মিনি-গ্রীড প্রকল্পের মাধ্যমে। ফলে আনন্দের বন্যা বইছে গ্রামের মানুষের। সুর্যাস্তের পরেই অন্ধকারে ঢেকে থাকা বিদ্যুৎ বিহীন গ্রামটি এখন আলোকিত।জানা যায়,মন্নিয়া গ্রামটিতে প্রায় ২০হাজার মানুষের বসবাস। জন্ম থেকেই ওই এলাকার মানুষগুলো বিদ্যুতের আলো থেকে বঞ্চিত। আর এতে করে ডিজিটালাইজ তথ্য প্রযুক্তির যুগে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছিলেন তারা। তবে আজ আর কেউ তাদের ধমিয়ে রাখতে পারবে না। সেখানে আর্শীবাদ হয়ে দাড়িয়েছে (ভিজিএল-১)সোলার মিনি গ্রীড বিদ্যুৎ কেন্দ্র। মন্নিয়া বাজার সংলগ্ন ভিনসেন জিটেক লিমিটেড ৮কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যায়ে ভিজিএল-১ সোলার মিনি গ্রীড বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপন করেছে। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ২৪৯.৬ কিঃ ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে ।ইতিমধ্যেই মন্নিয়া চরের ১৮কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ প্রদান করে গ্রামটিকে আলোকিত করেছে ভিনসেন জিটেক লিমিটেড। এতে করে কৃষি জমি আবাদ, স’মিল ও রাইস মিলসহ প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছায় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার পাশাপাশি জীবনযাত্রার মান উন্নতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। সরেজমিনে সোলার মিনি-গ্রীড প্রকল্পটি পরিদর্শনে গিয়ে জানা যায়, উৎপাদিত সোলার বিদ্যুৎ থেকে ওই গ্রামের সাতশত পরিবারকে সৌর বিদ্যুৎ পৌছে দেওয়ার লক্ষে কাজ করছে ভিনসেন-জিটেক। ইতোমধ্যে একশত পরিবার এ বিদ্যুতের আওতায় এসেছে। বাকি ঘর গুলোতে আলো পৌছে দেওয়ার লক্ষে ও গ্রাহকদেরে সচেতন করতে ইডকলের পরিচালনায় সোলার মিনি-গ্রীড গ্রাহক প্রশিক্ষণ চলছে,যার মাধ্যমে জনমনে সীমাহীন আনন্দ বিরাজ করছে,প্রশিক্ষণ প্রাপ্তরা জানতে পারছে কিভাবে তারা কম খরচে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে তাদের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন করা যাবে। সোলার মিনি-গ্রীড প্রকল্প আওতায় মন্নিয়ারচর বাসিন্দা সামাদ আকন্দ সেচ পাম্প ব্যবহার এ আগ্রহ প্রকাশ করে ব্যবসায়িক গ্রাহক হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। শুরু হয়ে গেছে দূগর্ম যমুনার জেগে উঠা চরে আধুনিক সেচ ব্যবস্থাপনা,যার মাধ্যমে কম খরচে উন্নত ফসল উৎপাদন করতে সক্ষম হচ্ছে মন্নিয়ারচর বাসিন্দারা। সেই সাথে অন্ধকার চরে আলোকিত হচ্ছে অনেক পরিবারের ঘর। ঢাকা ডিভিশনের ইডকলের ডিভিশনাল ম্যানেজার নুরুল হুদা জানান,দাতা সংস্থা ইডকল এর অর্থায়নে ইসলামপুরের মন্নিয়াচরসহ সারা বাংলাদেশে বিছিন্ন চর অঞ্চলে মোট ১৪টি সোলার মিনি গ্রীড প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৭হাজার পরিবার এবং ব্যাবসায়িক স্থাপনায় শত ভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা হয়েছে,যার মাধ্যমে সুবিধা ভোগ করছে প্রায় ৫০হাজার মানুষ। বাংলাদেশ সরকারের ভিশন ২১অর্জনের লক্ষমাত্রা নিয়ে সরকারের পাশাপাশি কাজ করে যাচ্ছে ইডকল। সেই ধারাবাহিকতায় ২০১৮ইং সালের মধ্যে ৫০টি সোলার মিনি-গ্রীড বাস্তবায়নের লক্ষ মাত্রা নিয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে ইডকল।প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কারী সংস্থা ভিনসেন-জিটেক এর চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিল্পপতি ইসলামপুর উপজেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক মোস্তফা আল মাহমুদ জানান, যেহেতু আমার জন্ম চরে আর বর্তমান দুনিয়া বিদ্যুত বিহীন জীবন অন্ধকার জীবন। তাই একদিন চরে বেড়েতে এসে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে মানুষের উপকার করার জন্যই দূর্গম এ যমুনার চর;যেখানো কোন দিন বিদ্যুৎ পৌছবে না। কারণ চারিদিকেই যমুনা নদী। সেখানে বিদ্যুৎ বিহীন জীবন থেকে মানুষ গুলোকে আলোকিত করতেই আমার এ উদ্যোগে। এখানে লাভের কোন উদ্দ্যেশ্য নেই মূলত:চরবাসীর কল্যাণই আমার উদ্দ্যেশ্য। কারণ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির মাধ্যমে এই চরাঞ্চলবাসী কৃষি কাজে বৈদ্যুতিক সেচ পাম্পসহ সকল কৃষিযন্ত্র ব্যবহার করতে পারবে। এছাড়াও চরাঞ্চলবাসী নিজ এলাকায় ক্ষুদ্র শিল্প কারখানা স্থাপন,স’মিল এবং রাইসমিলসহ পাওয়ার প্লান্টের মাধ্যমে হাসকিং মিল ও নেটওয়ার্কিং এর সুবিধা পাবে। এতে চরাঞ্চল বাসীর জীবন যাত্রার মান দ্রুত পরিবর্তন হবে।