মুদ্রাপাচার মামলায় ৭ বিকাশ এজেন্ট গ্রেফতার
মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশের হিসাব ব্যবহার করে অবৈধভাবে রেমিট্যান্স হুন্ডি করায় ৭ বিকাশ এজেন্টকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অর্গানাইজড ক্রাইম টিম। গ্রেফতাররা হলেন মো. আবদুল মান্নান (৩০), সংগীত কুমার পাল (৪৫), মো. জামিনুল হক (৩৮), মো. মোজাম্মেল মোল্লা (৩৩), মো. হোসেন আলী (৪৫), মো. দিদারুল হক (৩১) ও আবু বক্কর।বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল ইসলাম।তাদের কাছ থেকে মোবাইল সেট, বিপুলসংখ্যক সিমকার্ড ও বিভিন্ন গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি উদ্ধার করা হয়েছে।সিআইডি জানায়, মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশের হিসাব ব্যবহার করে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেন করায় সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম টিমের কয়েকটি চৌকষ দল বুধবার (৩ জানুয়ারি) রাতে দেশের বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে ৭ হুন্ডিকারী বিকাশের এজেন্টকে গ্রেফতার এবং তাদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করেছে।গ্রেফতারকৃত হুন্ডিকারী দলের কিছু সদস্য বাংলাদেশ ও বিদেশে (সংশ্লিষ্ট দেশে) অবস্থান করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা গ্রহণ করে তা বৈধ পথে বাংলাদেশে না পাঠিয়ে এই অর্থের মূল্য স্থানীয় মুদ্রায় পরিশোধ করছে এবং অর্থ প্রদানে বিকাশের হিসাব ব্যবহার করছে। রেমিট্যান্সের অর্থ স্থানীয় মুদ্রায় অর্থাৎ অবৈধ হুন্ডির মাধ্যমে পরিশোধ প্রক্রিয়া মুদ্রাপাচার প্রতিরোধ আইনে অপরাধ।বিকাশের কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান শামসুদ্দীন হায়দার ডালিম বিকাশের হিসাব ব্যবহার করে বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স আয়কে হুন্ডি করার সঙ্গে জড়িত এজেন্টদের গ্রেফতার করায় পুলিশকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।তিনি বলেন, ‘আমাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই ৮ এজেন্টকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।আমরা কেন্দ্রিয় ব্যাংকের বিধিমালা মেনেই মোবাইল ব্যাংকিং করছি-আমরা চাই সবাই আইন-কানুন মেনেই ব্যবসা করুক।’সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ায় গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বিএফআইইউ একটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছিল সিআইডির কাছে। সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিট প্রতিবেদনটি বিস্তারিত অনুসন্ধান করে জানতে পারে একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র রেমিট্যান্স কমানোর পেছনে কাজ করছে। এ চক্রের কারণে সঠিক নিয়মে বিদেশ থেকে টাকা না আসায় সরকার বঞ্চিত হচ্ছে রেমিট্যান্স থেকে।তিনি জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকে সারা দেশের ২৮০০ বিকাশ এজেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে। এর মধ্যে ২৫টি এজেন্ট নাম্বার থেকে বিপুল পরিমাণ টাকার অবৈধ লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) একটি প্রতিবেদনেও ৭ বিকাশ এজেন্টের অবৈধ লেনদেনের অভিযোগ উঠে। এরপর তদন্তে নামে সিআইডি’র অর্গানাইজ ক্রাইম ইউনিট।