বেনাপোল বন্দরে অনিয়ম ও হয়রানি বন্ধে শুদ্ধি অভিযান শুরুর পরপরই গতিশীলতা ফিরে এসেছে আমদানি রফতানি বানিজ্যে : বাড়তে শুরু করেছে রাজস্ব আয় —
বেনাপোল সংবাদদাতা: বেনাপোল বন্দরে অনিয়ম ও হয়রানি বন্ধে শুদ্ধি অভিযান শুরুর পরপরই গতিশীলতা ফিরে এসেছে আমদানি রফতানি বানিজ্যে। বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে রাজ্স্ব আদায়। ইতিপূর্বে কাস্টমস’র হয়রানি ও অনিয়মের কারনে গত ৪ নভেম্বর বেনাপোল বন্দর থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নেয় নিটল টাটা ও ইফাদ অটো গ্রুপ সহ বেশ কয়েকটি বড় কম্পানী। বেনাপোল কাস্টমস হাউসে নতুন কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরী যোগদানের পরপরই শুরু হয় অনিয়ম ও হয়রানি বন্ধে শুদ্ধি অভিযান। অনিয়ম’র সাথে জড়িত বেশ ক’জন কাস্টমস কর্মকর্তাকে অন্যত্র সরিয়ে দিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। অনিয়মের সাথে জড়িত বেশ ক’জন আমদানি কারককে মুসলেকা দিয়ে ছাড় নিতে হয়েছে পন্য চালান। বেনাপোল আন্তর্জাতিক কাস্টমস চেকপোস্টে বন্ধ হযে গেছে ল্যাগেজ পার্টি চোরাচালানী তৎপরতা। দিনের শুল্ক দিনে আদায় করতে দ্রুত পন্য খালাশ’র নির্দেশনা দেয়ায় বেড়ে গেছে অফিসারদের কর্মতৎপরতা। নতুন কমিশনার যোগদানের পরপরই মাত্র ২২ দিনে গোটা কাস্টমস ও বন্দরের আকস্মিক পরিবর্তনে চলে যাওয়া ব্যবসায়ীরা পুনরায় বেনাপোল বন্দরে ফিরে আসতে শুরু করেছে। গত ১২ ডিসেম্বর নিটল টাটা ও ইফাদ অটো গ্রুপ তাদের মংলা বন্দরের এলসি ক্যানসেল করে বেনাপোল বন্দরে নতুন করে এলসি দিয়েছে।
কাস্টমস সুত্র জানায়, দিনের শুল্ক দিনে আদায়ের প্রক্রিয়া বেড়ে ৩২ শতাংশ থেকে ৪২ শতাংশে পৌছেছে। তা ছাড়া গত ৪ নভেম্বর থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত ভারত থেকে ৮ হাজার ৩৮ ট্রাক মালামাল আমদানি হয়। তার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৩৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। অন্যদিকে ২৬ নভেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বের পর্যন্ত ৮ হাজার ৪৪৪ ট্রাক মালামাল আমদানির বিপরীতে রাজস্ব আদায় হযেছে ২৯৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। হয়রানি ও অনিয়ম বন্ধের সাথে সাথে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে এই বন্দর দিয়ে । ইতিমধ্যে অসাধু আমদানিকারকরা গা ঢাকা দিতে শুরু করেছে। বর্তমানে বন্দরে জায়গা সংকট একটি বড় ধরনের সমস্যা বলে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ। বেনাপোল বন্দরে পন্য ধারন ক্ষমতা ৩০ লাখ মে: টন হলেও বর্তমানে বন্দরে ঠাসাঠাসি করে ১ লাখ মে: টন পন্য রাখা হচ্ছে। ভারত থেকে আমদানি বৃদ্ধি পেলেও জায়গ্রা অভাবে বন্দরে পন্য রাখা সম্ভব হচ্ছে না । ফলে ব্যাহত হচেছ দু দেশের মধ্যে আমদানি রফতানি বানিজ্য। বেনাপোল সিএন্ড এফ এজেন্টস এসোশিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, গত ৩০ বছরে বেনাপোল কাস্টমস হাউসে হয়রানি ও অনিয়ম বন্ধে কেউ এগিয়ে আসেনি। নতুন কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরী যোগদানের মাত্র ২২ দিনের মাথায় গোটা কাস্টমস ও বন্দর’র কার্যক্রম ফিরে এসেছে স্বচ্ছতা। রাজম্ব আদায়ে যেখানে বড় ধরনের ধ্বস নামতে শুরু করেছিল। মাত্র ক’দিনে আমদানি রফতানি বানিজ্যে ফিরে এসেছে গতিশীলতা, বাড়তে শুরু করেছে রাজস্ব আয়। বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরী জানান, কাস্টমস হাউসে অনিয়ম ও হয়রানি বন্ধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হযেছে। বন্দর থেকে দ্রুত পণ্য খালাশ’র নির্দেশনাও দেয়া হযেছে। মোবাইল স্ক্যানার বসানো হযেছে। আমদানিকৃত পন্য স্ক্যানিং করে দ্রুত খালাশ দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ফলে বন্দরে পন্যজট কমে আমদানি বাড়বে।