বাগাতিপাড়ার মালঞ্চি স্টেশনে আন্তনগর ট্রেন স্টপেজের দাবী


আব্দুল মজিদ বাগাতিপাড়া (নাটোর): নাটোরের বাগাতিপাড়া মালঞ্চি রেল স্টেশনের উপরদিয়ে বেশ কয়েকটি আন্তনগর ট্রেন চললেও একটিরও স্টপেজ নেই। তাই ট্রেন স্টপেজের দাবীতে উপজেলার বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত দাবী জানানো হয়েছে। সূত্রে জানা যায়, মালঞ্চির এই স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন ঢাকাগামী দ্রুতযান, একতা, নিলসাগর, লালমনী, রংপুর ও খুলনগামী রুপসা এবং সিমান্ত আন্তনগর এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করলও স্টপেজ নেই একটিরও। ফলে ঢাকা ও খুলনাগামী যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। মালঞ্চি স্টেশনটি নাটোর ও ঈশ্বরদীর মাঝখানে স্থাপিত হয় ১৯২৭ সালে। উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভা সংলগ্ন হওয়ায় এই স্টেশনটি অনেক গুরুত্ব বহন করে। অত্র এলাকাটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কৃষি নির্ভর এলাকা। ব্রিটিশ আমলে শিলিগুড়ি হতে শিয়ালদহ রেললাইন প্রস্তুত করার সময়ে স্টেশনটি সৃষ্ট। স্টেশনটিতে রয়েছে তিনটি লাইন, প্লাটফ্রম, যাত্রি ছাউনী, সেত পাথরের তৈরি প্রথম শ্রেনীর ওয়েটিং রুম। জনবল রয়েছে দু’জন স্টেশন মাষ্টার, চারজন পিÑম্যান, তিনজন গেটম্যান, ্একজন পোটার ম্যান। বাঘা, চারঘাট, পুঠিয়া, বড়াইগ্রাম, লালপুর উপজেলা, বনপাড়া ও আড়ানি পৌরসভা এবং কাদিরাবাদ ক্যান্টনম্যেন্ট বোর্ড সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় যোগাযোগের নিকটবর্তী স্থান এই মালঞ্চি রেল স্টেশন। তারপরেও এখানে ঢাকা ও খুলনা গামী আন্তনগর ট্রেনের যাত্রা বিরতি নেই। এলাকার সরকারী বেসরকারী কর্মরত, ব্যবসায়ী, কৃষক সহ সকল শ্রেণীর মানুষকে চরম দূর্ভোগে পড়তে হয়। কাদিরাবাদ ক্যান্টনম্যান্ট ও আর্মি ইউনিভার্সিটি অব ইনঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি (বাউয়েট) এই স্টেশনের পাশে অবস্থিত। সেনাবাহিনী অফিসার ও সদস্য সহ শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের যাবাতীয় যোগাযোগ মালঞ্চি স্টেশন কেন্দ্রিক। এছাড়াও বাউয়েট, কৃষি ডিপ্লোমা ইন্সটিটিউট সহ প্রায় মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক দুই শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বাগাতিপাড়ায় শিক্ষার হার বেশি থাকায় প্রতিদিন শতশত শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক-কর্মচারী, বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানগণ সহ অন্যান্য সাধারণ মানুষ অত্র এলাকা থেকে ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। মালঞ্চী রেল ষ্টেশনে ঢাকাগামী ও খুলনাগামী অন্তনগর এক্সপ্রেস ট্রেনগুলি ষ্টপেজের বিশেষ প্রয়োজন। এই ট্রেন গুলি থামানোর উদ্যোগ গ্রহন করলে এলাকা জনগনের স্বার্থ ও বাগাতিপাড়া এলাকার সাধারন মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা। বিষয়টি জনগুরুত্বপূর্ন হওয়ায় স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য বিনীত অনুরোধ জানিয়ে সম্প্রতি কনজুমারস এসাসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), নিরাপদ সড়ক চাই (নিশচা), বাগাতিপাড়া প্রেসক্লাব, মালঞ্চি বাজার কমিটি, উপজেলার সকল ইউনিয়ন পরিষদ, পোরসভা, উপজেলা পরিষদ এবং নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সংসদ সদস্যের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট মালঞ্চি রেল স্টেশনে আন্তনগর ট্রেন থামাতে লিখিত আবেদন করা হয়েছে। মালঞ্চী বাজার কমিটি সহ-সভাপতি আরিফুল ইসরাম তপু’র দাবী, মালঞ্চি স্টেশনে ঢাকা ও খুলনা গামী ট্রেনের যাত্রা বিরতি দিলে ব্যাবসায়ীরা স্বল্প খরচে পন্য আনা-নেওয়া করার পাশাপাশি ব্যবসায়ীরা আর্থিক ভাবে লাভবান হবে। কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর উপজেলা সভাপতি আব্দুল মজিদ বলেন, ‘বাগাতিপাড়াবাসীকে রাজধানী সহ অন্যান্য বিভাগে যেতে হলে নাটোর স্টেশনে যেতে হয়, সেই ট্রেন আবার বাগাতিপাড়ার উপর দিয়েই গন্তব্য স্থলে যায়। এতে করে অর্থ এবং সময় দুটোই অপচয় হয়। নাটোর ও ঈশ্বরদীর সুদীর্ঘ পথের মাঝখানে মালঞ্চি স্টেশনে যাত্রা বিরতি দেয়া হলে আশ পাশের মানুষ গুলোকে সিমাহীন ভোগান্তি থেকে রেহাই পেত।’ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানান তিনি। উপজেলা পরিষদ চেয়্যারম্যান হাফিজুর রহমান বলেন, ‘এই স্টেশনে ঢাকা ও খুলনা গামী আন্তনগর ট্রেনের যাত্রা বিরতি থাকলে এলাকার সর্বস্তররের জনগনের কষ্ট লাঘব হবে। পাশাপাশি এতে সরকারের অনেক রাজস্ব বৃদ্ধি হবে। ’ নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সংসদ সদস্যে আবুল কালাম বলেন, ‘আমার নির্বাচনী এলাকার কথা চিন্তা করে এই জনগুরুত্ব বিষয়টি বিবেচনা পূর্বক মালঞ্চী স্টেশনে আন্তনগর ট্রেনগুলোর যাত্রা বিরতি দেওয়া একান্ত প্রয়োজন।’ গণদাবিটি বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি। বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি ওব ইনঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি (বাউয়েট) স্টেশনটির খুব নিকটে হওয়ায় মালঞ্চী স্টেশনে ঢাকা ও খুলনা গামী আন্তনগর ট্রেন গুলির যাত্রা বিরতি দিলে শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের নিরাপদ ও আরামদায়ক ভ্রমন নিশ্চিত হবে বলে মনে করেন, বাউয়েট কর্তৃপক্ষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *