বেনাপোলে জাল দলিল করে অসহায় এক বৃদ্ধার বসতবাটির জমি আত্মসাত
বেনাপোলে জাল দলিল করে অসহায় এক বৃদ্ধার বসতবাটির জমি আত্মসাত কারার ঘটনা ধরা পড়েছে। আত্মসাতকারী সক্রিয় চক্রটি জেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসের কতিপয় কর্মচারীর সহযোগীতায় এ ধরনের জালিয়াতি তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে।
রেহেজা খাতুনের মালিকানাধীন বেনাপোলের ভবারবেড় ৮৮ নম্বর মৌজার ১৪ শতক জমি জাল দলিল করে আত্মসাত করার একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা উদঘাটন করেছে শার্শা উপজেলা ভূমি অফিস।
রেহেজা খাতুন জেলা প্রশাসকের বরাবর এক অভিযোগে জানান,ভবারবেড় মৌজার ৭ নম্বর এসএ খতিয়ান,আরএস ৬১৩ ,হাল দাগ-১১০,সাবেক দাগ ৪৬ হোল্ডিং নম্বর-১৪ এর ১৪ শতক জমি একই এলাকার আব্দুল কাদের মোল্লা ওরফে কাদু মিয়া গং ২০১৬ সালের ২৪ আগস্টে জেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিস থেকে সই মোহরী ১৮৪৯ ও ১১৪৭৯ নম্বর দলিল উত্তোলন করে জাল দলিল তৈরী করে। তারা ২২ সেপ্টেম্বর-১৬ শার্শা উপজেলা ভূমি অফিসের মাধ্যমে বেনাপোল ভূমি অফিসে নাম পত্তনের জন্য আবেদন করেন। স্থানীয় ভূমি অফিস সরেজমিন তদন্তে গেলে জাল দলিলকারীদের আত্মসাতের ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়। পরে ভূমি অফিস জাল দলিলের বিষয়টি লিখিতভাবে উপজেলা ভূমি অফিসকে জানালে শার্শা উপজেলা এসি ল্যান্ড তা বাতিল করে দেন। যার নাম পত্তনের মামলা নম্বর ৫৬৫। অসহায় রেহেজা খাতুন তার ক্রয়কৃত ওই জমির উপর তার ৮ সন্তান ও বৃদ্ধ স্বামী নিয়ে গত ৪৪ বছর ধরে বসবাস করে আসছে। হঠাৎ করে তার বসতবাটি আত্মসাত করে তার পরিবারকে পথে বসানোর খবর শুনে রেহেজা ও তার বৃদ্ধ স্বামী অসুস্থ হয়ে বাড়িতে পড়ে রয়েছে।
যশোর জেলার বালাম বইতে দাতা,গ্রহীতার,জমির পরিমান ও খতিয়ান রেজিস্ট্রি অফিসের কতিপয় কর্মচারীর সহযোগীতায় ঘষামাজা করে জাল দলিল তৈরী করা হয়। জালিয়াত চক্রের মুল হোতা কাদু গংরা জাল দলিলে জেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসের লেখক লক্ষিরানী,ফারুক ও নার্গিস পারভিন’র সই স্বাক্ষর জাল করে যার না¤া^র-১৮৪৯ তারিখ ১১/০৩/১৯৮২।
সাব রেজিস্ট্রি অফিস ঝিকরগাছা ও শার্শা অফিসে যোগাযোগ করা হলে তারা এই জমি সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে জানান। ইতিপূর্বে কাদু গংরা একই দলিলের মাধ্যমে একই মৌজার সরকারী ২২ শতক জমি আত্মসাত করতে গিয়ে ধরা পড়ে। সরকার তার রেকর্ড মঞ্জুর না করায় তিনি রেহেজা খাতনের তফসিল ভূক্ত সম্পত্তি আত্মসাত করার প্রক্রিয়া শুরু করে। ইতি মধ্যে রেহেজা খাতুন গত ১৫ মার্চ ২০১৭ তারিখে জেলা বিজ্ঞ জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রি আমলী আদালতে আব্দুল কাদের মোল্লা ওরফে কাদু গংদের নামে একটি জালিয়াতির মামলা দায়ের করেছেন, যার নম্বর পি-০৪/১৭। মামলাটি আদালত জেলা পিবিআই কর্তৃপক্ষকে তদন্তকরে প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশনা দেন।জমি আত্মসাতকারী কাদু গংদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবী জানিয়েছেন অসহায় রেহেজা খাতুনের পরিবার।