খুলনা নগরীর ‘রূপান্তর ক্লিনিকে’ অপারেশনের পর রোগীর মৃত্যু

সেখ রাসেল, বূরো চিফ, খুলনা:
খুলনা নগরীর আহসান আহমেদ রোডস্থ রূপান্তর ক্লনিকে জরায়ু টিউমার অপারেশনের পরদিন শিরিনা আক্তার (৩৮) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। ভিকটিম বাগেরহাটের মোংলা উজেলার কানাই নগর গ্রামের তালতলা এলাকাবাসি। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৮ জুন ওই রোগীকে রূপন্তর ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। এরপর নানা পরীক্ষা নিরিক্ষা শেষে তার জরায়ুতে টিউমার শনাক্ত হয়। ৯ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় গাইনি বিশেষক্ষ ডাঃ মৌসুমী সাহা (লোপা) তার অপারেশন করেন। ১০ জুন সন্ধ্যা ৭ টার দিকে তিনি ওই ক্লিনিকে হাটাহাটি করার সময় তাকে সাথে করে আনা ওই নারীকে বলেন-শরীরের ভীষণ জ্বালা-পোড়া হচ্ছে। এরপর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ৮ টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

নিহত শিরিনা অন্তত ২ বছর হচ্ছে তিনি স্বামী পরিত্যক্তা। তখন থেকেই তিনি ওই গ্রামে বাবার বাড়ীতে বসত করতেন। তার গোপনাঙ্গ দিয়ে কয়েকদিন ধরে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। এক পর্যায়ে দরিদ্র ওই পরিবারটি পার্শ্ববর্তী এলাকার আদ্বেশ হালদার নামে এক নারীর সাথে যোগাযোগ করেন। তিনি ওই ক্লিনিকে বিভিন্ন সময় রোগীদের চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন। গত ৮ জুন ওই রোগীকে রূপন্তর ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। এরপর নানা পরীক্ষা নিরিক্ষা শেষে তার জরায়ুতে টিউমার শনাক্ত হয়। ৯ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় গাইনি বিশেষক্ষ ডাঃ মৌসুমী সাহা (লোপা) তার অপারেশন করেন। ১০ জুন সন্ধ্যা ৭ টার দিকে তিনি ওই ক্লিনিকে হাটাহাটি করার সময় তাকে সাথে করে আনা ওই নারীকে বলেন-শরীরের ভীষণ জ্বালা-পোড়া হচ্ছে। এরপর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ৮ টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তীতে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ একটি এমব্যুলেন্সে করে মরদেহটি নিহতের বাড়ী পাঠিয়ে দেন। নিহত নারীকে হাসপাতালে নিয়ে আসা আদ্বেশ হালদার এবং কেএমপি’র এক কর্মকর্তার ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সংগ্রহ করা তথ্যের ভিত্তিতে এসব কথা জানা গেছে।
আহসান আহমেদ রোডস্থ বহুতল একটি ভবনের মাঝের ফ্লাটে রূপান্তর ক্লিনিক। ওপর তলায় এসএ ডায়াগনষ্টিক এন্ড থায়রয়েড সেন্টার। নিচ তলায় ফোকাস নামে একটি কোচিং সেন্টারের সাইন বোর্ড ঝুলতে দেখা গেছে।
রূপান্তর ক্লিনিকের মালিক গোবিন্দ প্রসাদ সাহা বলেন, তার মেয়ে ডাঃ মৌসুমী ওই রোগীর অপারেশন করেন। রোগীর ব্লাড প্রেশার, ইসিজি, এক্সরে সবই স্বাভাবিক ছিল। আলট্রাস্নোসহ সসকল পরীক্ষা ক্লিনিকের ওপর তলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে করা হয়। অস্ত্রপাচারের পরদিন বিকেলে রোগী বাথরুম থেকে বেরিয়ে বেশ কিছু সময় টেলিভিশন দেখেন। এরপর বেডে যাওয়ার পর তিনি পেটে ব্যাথা অনুভব করেন। তখন তাকে একটি গ্যাসের ইনজেকশন দেয়া হয়। পরবর্তীতে তার শ^াস কষ্ট অনুভূত হলে অক্সিজেন দেয়া হয়। কিন্তু কিছু সময় পরেই তিনি মৃত্যু বরণ করেন। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে গোবিন্দ প্রসাদ দাবি করেছেন। তিনি বলেন, রোগীর মৃত্যুর পর ক্লিনিকের পক্ষ থেকে তার দাফন-কাফনের খরচ দিয়ে এমব্যুলেন্সে করে বাড়ী পাঠিয়ে দেয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *