খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটিতে মাদকের রমরমা ব্যবসা ধরাছোঁয়ার বাইরে অদৃশ্য গডফাদাররা
সেখ রাসেল, ব্যুরো চিফ, খুলনা:
খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি ইউনিয়নে মাদকে ছয়লাব হয়ে পড়েছে। প্রশাসনকে টাকা দিয়ে চলছে মাদক ব্যবসা। হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক গাজা ও ইয়াবা ট্যাবলেট। সেনহাটিতে অদৃশ্য এক গডফাদারের ছত্রছায়ায় গড়ে তুলেছেন মাদকের শক্তিশালী সিন্ডিকেট। সহজেই মাদক পাওয়া যায় যেসব স্থান হলো সেনহাটি আলহাজ্ব সরোয়ার খান কলেজ মাঠের পশ্চিম পাশে রবের বাগান, অজিতের বাঁশ বাগান, নতুন পাড়া মহাব্বাতের পুকুর পাড়ে, লিচুতলা মোর চায়ের দোকানের পিছনে, বাইদে পাড়া বালির মাঠের পশ্চিম পাশে, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স এর পাশে দিন-রাত সমানভাবে চলে মাদক কেনাবেচা। সেই সাথে চলে সেখানে বসেই সেবন। টাকা দিলেই যে কোনো বয়সের যে কেউ পায় গাজা, ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদক। অনেক স্কুল কলেজের ড্রেস পরিহিত ছাত্ররা সেবন করছে মাদক। তাদের এই মাদক বিক্রির হাটে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ। এদের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই চলে নির্যাতন।এ মন অনেক ভুক্তভোগীরা বলছেন অদৃশ্য এক শক্তি তাদের ছায়া দিয়ে রেখেছে। সেই শক্তি বলয়ে থানা পুলিশও অসহায় এদের কাছে। এদের বিরুদ্ধেও মাদক হত্যাসহ নানা অপকর্মের একাধিক মামলা আছে।
বর্তমানে জোড়া হত্যার পালাতোক আসামি মুঠো ফোনে মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছে। ওই অদৃশ্য শক্তির নিকট থানা পুলিশও কিছুটা জিম্মি হয়ে পড়েছে, কেউ বলছে অসহায়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রকাশ্যেই চলছে মাদক বিক্রি। তাদের ভয়ে মিডিয়ার সামনে মুখ খুলছে না প্রতিবেশীরা। তবে সেখানকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বলছে এসকল মাদক কারবারীর আশ্রয়ে রয়েছে সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারী ও চোর। যারা তাদের নিয়মিত কাস্টমার। কেউ এদের বিরুদ্ধে মুখ খুললে নেমে আসে নির্যাতন ও হয়রানি। তাদের কারণে এলাকায় চুরি, ছিনতাই বেড়েছে। যুব সমাজ আজ ধংসের মুখে। কেউ প্রতিবাদ না করায় দিন দিন তাদের সাহস বেড়েই চলছে। গোপনে মাদকের নিরাপদ স্থান সেনহাটি রেজার মোড় থেকে কলেজ মাঠ যেতে ১০০ গজ দূরে একটি বাড়িতে অনেকটা প্রকাশেই মাঝে মধ্যে এক নারীকে মাদক সেবনকারীকে মাদক ও পুরিয়া দিচ্ছেন। সন্ধ্যার পর বেদে পাড়ায় বালুর মাঠে এ ভাবেই প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করছে ওই এলাকার মাদক ব্যবসায়ী টাকা নিচ্ছে গাজা ইয়াবা ট্যাবলেট দিচ্ছে। এক নাম্বার কলোনি ইউনুস মিয়ার বাড়ির পিছনে সেলিমের নতুন বাড়ির ভবনে সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় গভীর রাত পর্যন্ত মাদকের আসর। দিনরাত ২৪ ঘন্টা চলে রমরমা মাদক ব্যবসা। বালির মাঠ বাড়ির সামনেই এ যেন মাদকের হাট বসেছে এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর।প্রতিদিন হেরোইন, গাঁজা, ট্যাপান্টাডল টেবলেটসহ বিভিন্ন মাদক কিনতে আসছে দিঘলিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে ওই মাদক বিক্রির স্পর্টে। এ সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন মাদক কারবারি রয়েছে। দীর্ঘদিন যাবত মাদক ব্যবসা করলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে আছে অনেকেই।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী বলেন, মাদক ব্যবসার প্রতিবাদ করলেই উল্টা মাদক কারবারিরা হুমকি দিয়ে থাকে, বেশি কথা বললে উল্টো মাদক দিয়ে জেলে ঢুকিয়ে দেবে বলে হুমকি দেয়।প্রকাশ্যে তারা বলেন পুলিশ, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রনসহ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ব্যবসা করি। মাদক ব্যবসায়ীদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। তাদের মাদক বিক্রির কারনে এলাকার যুবকরা মাদকে জড়িয়ে পড়ছে। দ্রুত এসব মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে যুবসমাজ ধংস হয়ে যাবে। সামাজিক সংগঠন গ্রীন লাইফ এর পরিচালক শেখ রওশন আজাদ বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে সবসময় অবস্থান নিয়ে থাকি। কিছু শক্তিশালী চক্র এসব মাদক কারবারিকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মদদ দিচ্ছে। আমি এসব বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। প্রশাসন চাইলে আমিও সহযোগীতা করবো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মধ্য বয়সী ৪ জন ব্যক্তির ভাষ্য, এ মাদক ব্যবসার সাথে পুলিশ প্রশাসন জড়িত। যে কারণে মামলা ও হয়রানির ভয়ে প্রতিবাদ করতে ভয় পায়। এ বিষয়ে দিঘলিয়া থানা ইনচার্জ এইচ এম শাহীন বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে। মাদক কারবারিরা আটক হয়, আবার তারা জেল থেকে বের হয়ে মাদক ব্যবসায় লিপ্ত হয়। অন্য এক প্রশ্নে তিনি বলেন, যদি কোনো পুলিশ সদস্য এসব মাদক কারবারিকে সহযোগিতা করার প্রমান পায় তাহলে মাদক ব্যবসায়ী সহ তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।