পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়োগে যোগ্যতা নির্ধারণ হচ্ছে
নিজস্ব প্রতিনিধি: অপরাধ তথ্যচিত্র:
দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়োগে যোগ্যতা নির্ধারণ করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এর আগে অবশ্য ভিসি নিয়োগের সার্চ কমিটি গঠন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এবার যোগ্যতা নির্ধারণ করতে যাচ্ছে সরকার। সংশ্লিষ্টরা জানান, এখন থেকে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়োগের ক্ষেত্রে এ মানদণ্ড নির্ধারণ করে সবকিছু সেই আলোকেই বিচার বিশ্লেষণ করা হবে। নির্ধারিত যোগ্যতার বাইরে এ পদে কাউকে নিয়োগের সুপারিশ করবে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়-২) শারমিনা নাসরীন সাংবাদিকদের বলেন, ভিসি নিয়োগের যোগ্যতার বিষয়টি আমার পর্যায় থেকে নির্ধারণ করা হয় না। এ বিষয়ে আমাদের সিনিয়র সচিব ভালো বলতে পারবেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, ভিসি নিয়োগের অন্যতম শর্ত রাখা হয়েছে পিএইচডি ডিগ্রি। যিনি যত ভালো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করবেন, ভিসি নিয়োগের ক্ষেত্রে তিনি ততোটাই এগিয়ে থাকবেন। ভিসিদের গবেষণার বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।
জানা গেছে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি হওয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা ও গবেষণা-প্রশাসনিক অভিজ্ঞতার মাপকাঠির কোনো সুনির্দিষ্ট ফ্রেমওয়ার্ক নেই। ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী পরিচালিত চারটি স্বায়ত্তশাসিত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজ নিজ আইনে বিধান রয়েছে যে, এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরা সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট দ্বারা নির্বাচিত হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট কর্তৃক নিয়োগ পাবেন। যদিও বর্তমানে এটিও মানা হয় না। আর অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়োগের কোনো মানদণ্ডই নেই। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট ভিসি নিয়োগ দিলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা পাঠানোর পর প্রধান উপদেষ্টার (প্রধানমন্ত্রী) সম্মতিক্রমে তিনি তা করে থাকেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ভিসি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান। তাদের বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণে সরকারকে বিপদে পড়তে হচ্ছে। এ অবস্থায় তাদের নিয়োগ নিয়েও বিতর্ক তৈরি হচ্ছে। যোগ্য এবং সৎ ব্যক্তিকে ভিসি হিসেবে নিয়োগ দিতেই সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এখন থেকে ভিসিদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, প্রশাসনিক দক্ষতা এবং গবেষণা কার্যক্রম বিবেচনায় নেয়া হবে। ভিসি নিয়োগের যোগ্যতা নির্ধারণ নীতিমালা তৈরির সাথে যুক্ত এক কর্মকর্তা জানান, পিএইচডি ডিগ্রি ও গবেষণা ছাড়াও কিছু মৌলিক বিষয় রাখা হয়েছে। এর মধ্যে কমপক্ষে ২০ বছর শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তবে কারো যদি ১৫ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা এবং ৫ বছর গবেষণার সাথে যুক্ত থাকার অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে তিনিও আবেদন করতে পারবেন।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, খুব অল্প বয়সে ভিসি হওয়া যাবে না। ভিসি পদে আবেদনকারীদের বয়স ন্যূনতম ৪৫ বছর হতে হবে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসিক ও অ্যাকাডেমিক দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। কারো যদি বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে সেটি অতিরিক্ত যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে পাণ্ডিত্যের অভিজ্ঞতা থাকলে সেটিও বিবেচিত হবে অতিরিক্ত যোগ্যতা বলে।