চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে হত্যা চেষ্টার ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ায় সান্তাহার রেলওয়ে থানায় মামলা দায়ের
আদমদীঘি প্রতিনিধি :
বগুড়ার আদমদীঘিতে পূর্ব শত্রুতার জেরে মোবাইল ফোন চোর অপবাদ দিয়ে মতিউর রহমান (৪০) নামে এক আদম ব্যবসায়ীকে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় সান্তাহার রেলওয়ে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। গত সোমবার রাতে সান্তাহার রেলওয়ে থানায় ভুক্তভোগী নিজেই বাদী হয়ে এক জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ৬-৭ জনকে আসামী করে মামলাটি দায়ের করে।
সান্তাহার রেলওয়ে থানার মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার পারইল গ্রামের হাবিবুর রহমানে ছেলে মতিউর রহমান মাছ ব্যবসার পাশাপাশি গত দেড় বছর ধরে বৈধ ভাবে বিদেশে মানুষ পাঠিয়ে আসছেন। ইতো মধ্যে ৩-৪ জনকে সৌদি আরব পাঠিয়েছেন। ১৫ দিন আগে আদমদীঘি উপজেলার সদরের তালশন গ্রামের হেলাল প্রমানিকের ছেলে সজিব হোসেনকে পাঠান। এ বাবদ সজিবের কাছ থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু সৌদি আরবে গিয়ে বৈধ কাগজ পত্র পেতে দেরি হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে সজিব তার বাবাকে পাঠিয়ে হুমকি দেন।
মতিউর রহমান বগুড়া শহরের মাটিডালি এলাকায় মেয়ে মনিকার বাসায় বেড়াতে যান। সেখান থেকে বাড়ি ফিরতে রোববার দুপুরে সান্তাহারগামী দোলনচাঁপা কমিউটার ট্রেনে ওঠেন। বগুড়া স্টেশন থেকে ট্রেনে ওঠার পর থেকে একই বগিতে থাকা সজিবের ভাই রাকিব ও ডহরপুরের সিরাজুল ইসলামের ছেলে সুমনের নেতৃত্বে ৬-৭ জন মাস্ক পরিচিত ব্যক্তি মতিউরকে নজরদারি করছিলেন। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ট্রেন আদমদীঘির নসরতপুর স্টেশন এলাকায় পৌঁছলে তারা তাকে মোবাইল চোর আখ্যায়িত করে মারধর ও ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তখন তিনি ৪-৫ মিনিট ট্রেনের সঙ্গে ঝুলতে থাকেন। এক পর্যায়ে তারা মতিউরের কাছে থাকা ব্যবসার ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে হাত ছেড়ে দিতে বাধ্য করেন। ট্রেন নসরতপুর স্টেশনে পৌঁছলে প্লাটফরমের ধাক্কা খেয়ে তিনি নিচে পড়ে যান। এ সময় উৎসুখ জনতা চোর ভেবে তাকে মারধর করেন। তার পুরো শরীর রক্তাক্ত হয়ে যায়। অল্পের জন্য তিনি ট্রেনে কাটা পড়ে নি। পরে মতিউরকে রক্তাক্ত অবস্থায় আদমদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ সংক্রান্ত ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এরপর সোমবার রাতে সান্তাহার রেলওয়ে থানায় ভুক্তভোগী নিজেই বাদী হয়ে উপজেলার ডহরপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে সুমনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৬-৭ জনকে আসামী করে একটি মামলা করেন।
এ বিষয়ে সান্তাহার রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, নসরতপুর রেল স্টেশনের ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।