নাটোরের বাগাতিপাড়ায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবি: ফ্যাসিস্ট দোসরদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হোক

বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি
বাগাতিপাড়া উপজেলায় ৩৬ জুলাই ২০২৪-এর গণহত্যায় জড়িত ফ্যাসিস্টদের দোসরদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে বয়কটের দাবি জানিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। উপজেলার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি দপ্তর, অনুষ্ঠান ও সভা-সমাবেশে এই দাবি জানানো হয়।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ গত ২৭ মার্চ বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে তারা উল্লেখ করেন, ৩৬ জুলাই ২০২৪-এর পরিকল্পিত গণহত্যায় সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি বর্তমানে সাংবাদিকতার আড়ালে চাঁদাবাজি, অস্ত্রধারণ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে।
অভিযোগে অভিযুক্তদের মধ্যে উল্লেখিত ব্যক্তিরা হলেন অস্ত্রধারী ও রাজনৈতিক সহিংসতাকারী জাতীয় যুব সংগহতি (জাতীয় পাটির যুব সংগঠন) জেলা সভাপতি এএসএম আল-আফতাব খান সুইট। অস্ত্র বহন ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনাকারী পৌর ছাত্রলীগের স্কুল ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ও ৮ নং ওয়ার্ডের সেক্রিটারি আব্দুল্লাহ-আল-অনিক ওরফে অনিক মাহমুদ। চাঁদাবাজি ও মাদক কারবারি যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান ওরফে ফিটিং মিজান। চাঁদাবাজি ও অবৈধ অস্ত্র প্রদর্শনকারী পৌর যুবলীগ ৫নং ওয়ার্ডের সেক্রিটারি রাশেদুল আলম রূপক।
এছাড়াও রাজনৈতিক সহিংসতা ও অবৈধ্য অস্ত্র ব্যবহারকারী সাবেক পৌর ছাত্রলীগের সেক্রেটারি ফজলে রাব্বি। অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়,অভিযুক্তরা সাংবাদিকতার ছদ্মবেশে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে এবং প্রশাসনিক কাঠামোকে প্রভাবিত করে নিজেদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার হা-মিম তাবাসসুম প্রভা জানান, “বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ আমার দপ্তরে এসেছে।তদন্তের জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি।তদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তবে অভিযোগ দাখিলের পর প্রায় এক মাস হতে চললেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় হতাশা প্রকাশ করেছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
নাটোর জেলার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক মাশরাফি বিন মোস্তফা সাফাত বলেন, “আমরা রীতিমতো হতাশ। প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের সাথে বেইমানি করা হবে।”
নাটোর জেলার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিনিয়ার যুগ্ম আহ্বায়ক মোনায়েম ইসলাম রুমি বলেন, “ফ্যাসিস্টদের দোসরদের বয়কটের দাবি জানানোর পরও প্রশাসন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বরং তাদের প্রভাবশালী করে তোলা হচ্ছে। যা গণতন্ত্র ও জনগণের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।”
উপজেলার সাধারণ জনগণও এসব সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছে।
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছে, প্রশাসনের সঠিক পদক্ষেপ না নিলে অপরাধীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *