পাকিস্তানের পাল্টা আক্রমন যুদ্ধবিরতি করতে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বারস্থ হয় ভারত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
দিল্লি ও ইসলামাবাদ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সিএনএনের সাংবাদিক নিক রবার্টসন দাবি করেছেন, পাকিস্তানের শক্তিশালী পাল্টা আক্রমণ ভারতের অবস্থানকে নাড়িয়ে দেয়, যার ফলে ভারত দ্রুত যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতা কামনা করে। সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিক রবার্টসন বলেন, ‘ভারত যখন পাকিস্তানের তিনটি বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায়, তখন পাকিস্তান প্রবল ও লাগাতার মিসাইল ও রকেট হামলা চালায় ভারতের সামরিক স্থাপনা, বিমানঘাঁটি ও অস্ত্র গুদাম লক্ষ্য করে। এতে ভারত চরম বিপাকে পড়ে — তারা বুঝতেই পারেনি কী ঘটেছে।’
দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনা শুরু হয় ৭ মে, যখন ভারত সীমান্ত অতিক্রম করে একটি ‘অপ্ররোচিত’ হামলা চালায় এবং এতে অন্তত ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন, যাদের মধ্যে শিশুও ছিল। এর জবাবে পাকিস্তান পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ধ্বংস করে, যার মধ্যে তিনটি ছিল রাফাল, পাশাপাশি ডজনখানেক ড্রোন গুঁড়িয়ে দেয়।
এ সময় ভারত বেশ কিছু ড্রোন পাকিস্তানের আকাশসীমায় পাঠায়, যেগুলোর মধ্যে প্রায় ৮০টি গুলি করে ভূপাতিত করে পাকিস্তান। এসব ড্রোনের মধ্যে ইসরাইলি-নির্মিত আইএই হেরন ইউএভিও ছিল। শুক্রবার রাতে ভারত পাকিস্তানের তিনটি বিমানঘাঁটি — নূর খান, মুরিদ ও শরকোটে একযোগে মিসাইল হামলা চালায়। এসব মিসাইল বিমান থেকেই ছোড়া হয় বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী।
এর জবাবে শনিবার সকালেই পাকিস্তান চালায় ‘অপারেশন বুনয়া নুম মারসূস’, যার লক্ষ্য ছিল ভারতের একাধিক সামরিক ঘাঁটি ও উত্তর ভারতের একটি মিসাইল সংরক্ষণ কেন্দ্র। এরপর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষণা দেন, ভারত ও পাকিস্তান এক সম্পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। চারদিন ধরে চলা আঘাত ও পাল্টা আঘাতের মধ্যে শেষ পর্যন্ত এ সমঝোতা সম্ভব হয়।
ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল অ্যাকাউন্টে লেখেন, দীর্ঘ রাতব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় আলোচনা শেষে আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে ভারত ও পাকিস্তান সম্পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে। সাধারণ বোধ ও বুদ্ধির সুন্দর ব্যবহারের জন্য দুই দেশকে অভিনন্দন জানাই।
সিএনএনের নিক রবার্টসন বলেন, উচ্চপর্যায়ের এক কূটনৈতিক আলোচনায় উপস্থিত এক সূত্রের বরাতে জানা গেছে, পাকিস্তান প্রাথমিকভাবে ‘সামরিক বিরতি’ দিয়ে কূটনৈতিক পথ খোলা রাখে, কিন্তু ভারত যখন তিনটি বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায়, তখন পাকিস্তান তার সম্পূর্ণ সামরিক শক্তি প্রয়োগে বাধ্য হয়। এরপরই ভারত দ্রুত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, সৌদি আরব ও তুরস্কের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে মধ্যস্থতা চায়। দিনভর কয়েক দফা উত্তেজনা চলার পর শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক চাপেই যুদ্ধবিরতির সমঝোতা হয়। রবার্টসন বলেন, সূত্ররা এই যুদ্ধবিরতিকে ‘এখন না হলে কখনো নয়’ মুহূর্ত হিসেবে বর্ণনা করেছে।
তিনি আরও জানান, পাকিস্তানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে পানির অধিকার এখনো অন্যতম প্রধান ইস্যু হয়ে রয়েছে। নি বলেন, পাকিস্তানের জন্য সামনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে পানি, তবে আপাতত যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে — এরপর পরিস্থিতি ধাপে ধাপে এগোবে।