যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতারা এখন জিয়া মঞ্চের প্রথম কাতারের নেতা!

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকে “জিয়া মঞ্চের, ফরিদপুর জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ঘোষণা করার পর উপজেলা ও পৌর বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক সমালোচনা ঝড় বইছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমজুড়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। শুধুই কি তাই! ক্ষোভে দুঃখ-কষ্টে ফুঁসছেন বিগত ১৭ বছর যাবৎ নির্যাতিত নেতাকর্মীরা। গতকাল শুক্রবার এ বিষয়ে আলফাডাঙ্গা উপজেলায় সরেজমিনে প্রতিবেদনকালে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. খোশবুর রহমান খোকন গণমাধ্যমকে বলেন, জেলা উপজেলায় এখন বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীদের কোন মুল্য নেই। মিলছে টাকার বিনিময়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিএনপির বিভিন্ন পদ পদবি।
তিনি আরো বলেন, গত ৮ মে রাতে ‘আলমঙ্গীর কবির’ নামের একটি ফেসবুক আইডিতে কদরকে অভিনন্দন জানিয়ে এবং জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদনপত্র প্রকাশ করে একটি পোস্ট দেয়া হয়। এতে স্বাক্ষর রয়েছে সংগঠনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. জামাল হোসেনের।

২০২১ সালের ৫ ডিসেম্বর, কামরুজ্জামান কদর, সেলিমুজ্জামান সেলিম এবং হারিচুর রহমান সোহানকে যথাক্রমে সহ-সভাপতি, সহ-সভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করা হয় আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের কমিটিতে। ওই সময়কার চিঠিতে স্বাক্ষর ছিল দপ্তর সম্পাদক কবির হোসেনের। বর্তমানে কমিটির অপর সদস্য হারিচুর রহমান সোহান কারাগারে রয়েছেন। কদর ফরিদপুর জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন এবং ২ হাজার কোটি টাকা পাচার মামলার আসামি এইচ এম ফুয়াদের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর হঠাৎই তিনি বিএনপি ঘেঁষা অবস্থান নিতে শুরু করেন। তবে একই বছরের ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচনে তিনি কৃষকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের জামাতা আরিফুর রহমান দোলনের পক্ষে সরাসরি কাজ করেন।
দলের অভ্যন্তরে এমন এক বিতর্কিত ব্যক্তির পদপ্রাপ্তিতে প্রশ্ন উঠেছে, বিএনপির আদর্শ, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন নিয়ে। তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত আলোচনায় এসেছে। এটি ত্যাগের নয়, লবিং-টাকার বিজয়।
স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের মতে, এই বিতর্কিত পদায়ন ত্যাগী নেতাকর্মীদের মনোবলে চরম আঘাত হানবে এবং তা বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে বিভক্তি ও হতাশা সৃষ্টি করতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার জামাল হোসেন বলেন, জিয়া মঞ্চ বড় একটি সংগঠন, সারা দেশে কমিটি হচ্ছে। যদি কোনো ফ্যাসিস্ট গোপনে ঢোকার চেষ্টা করে আর সেটা আমরা জানতে পারি, তাহলে তাৎক্ষণিক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। ওই প্যাডে স্বাক্ষর আমার আবার বহিষ্কার আদেশে স্বাক্ষরও আমার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *