বাগেরহাটে শেখ হেলাল ও তন্ময়ের নামে ২০০ কোটি টাকা চাঁদাবাজির মামলা
বিভাগীয় প্রতিনিধি খুলনা
এম এ জলিল
বাগেরহাট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দীন ও তার ছেলে বাগেরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়সহ পাঁচজনের নামে ২০০ কোটি টাকার চাঁদাবাজির মামলা দায়ের হয়েছে।
মামলার অন্য আসামিরা হলো- শেখ হেলালের ব্যক্তিগত সহকারী মো. ফিরোজুল ইসলাম, শেখ তন্ময়ের ব্যক্তিগত সহকারী এম এইচ শাহীন ও শেখ শহীদুল ইসলাম। ফিরোজ বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং সদর উপজেলার মুক্ষাইট এলাকার বাসিন্দা, এম এইচ শাহীন ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার বাসিন্দা। এরমধ্যে শেখ শহীদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে বুধবার আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। শেখ শহীদুল ইসলাম বরিশালের গোড়া চাঁদ দাস সড়কের বাসিন্দা। আন্য চার আসামী শেখ হেলাল উদ্দীন, শেখ তন্ময়, ফিরোজ ও শাহীন পালাতক রয়েছে।
বাগেরহাটের ‘নিউ বসুন্ধরা কোম্পনী’ নামে শত শত মানুষের লগ্নীর টাকা মেরে দেয়া বিতর্কিত হায় হায় প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মান্নান তালুকদার বাগেরহাট মডেল থানায় এই মামলাটি করেছেন।
মামলার এজাহারে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর রাতে শেখ হেলাল উদ্দীন, শেখ তন্ময়সহ পাঁচজন আব্দুল মান্নান তালুকদারের শহরের সরুই কার্যালয়ে গিয়ে দুইশত কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া, মিথ্যা মামলায় জড়ানোসহ মেরে ফেলার হুমকি দেন আসামিরা। তখন মামলার বাদী আব্দুল মান্নান তালুকদার নিজের ব্যবসা রক্ষার স্বার্থে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রাহকের রক্ষিত টাকা থেকে ৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা আসামিদের হাতে তুলে দেন। তারা বাকি টাকা দ্রুত দিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তখনকার মতো চলে যান। পরে ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি আসামিরা আবারও তার অফিসে এসে বাকি টাকা পরিশোধের জন্য হুমকি দেন। তখন জীবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রক্ষায় মান্নান তালুকদার শেখ শহিদুল ইসলামের মাধ্যমে আসামিদের আরও ১২ কোটি ৭০ লাখ টাকা চাঁদা দেন। এ নিয়ে দুই দফায় আসামিরা আব্দুল মান্নান তালুকদারের কাছ থেকে ২০ কোটি টাকা চাঁদা নেয় বলে মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে। আসামিরা ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই ও ভাতিজাসহ সরকারের প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় আগে তিনি থানা বা আদালতে মামলা করতে সাহস পাননি। এখন পরিবেশ তৈরি হওয়ায় মামলাটি করেছেন বলে জানান ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান তালুকদার।
বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহামুদ-উল-হাসান জানান, আব্দুল মান্নান তালুকদারের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পেনালকোডের ৩৮৬ ও ৩৮৭ ধারা অনুযায়ী মামলাটি গ্রহণ করা হয়েছে। এ মামলার এজাহারনামীয় ৩ নাম্বার আসামি শহীদুল ইসলামকে (৩৭) গ্রেপ্তার করে বুধবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য পলাতক আসামিদের ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে বলেও জানান ওসি।