ধুনট থানার ওসির বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ
বগুড়া প্রতিনিধি:
বগুড়ার ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলমের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী এক নারীকে মামলা আপসের জন্য চাপ দেওয়া ও ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আদালতের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করা হয়, একজন সাংবাদিকের ফেসবুক প্রোফাইলে ভুক্তভোগীর একটি ভিডিও দেখে ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ধারা ১৯০(১)(সি) অনুযায়ী বিচারক এই বিষয়ে স্বপ্রণোদিত হয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন বিচারকের কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওসি সাইদুল আদালতে করা মামলাটি আপসের মাধ্যমে নিষ্পত্তির জন্য চাপ দেন। পাশাপাশি পুলিশের ওই কর্মকর্তা মামলা আপষের খরচ বাবদ তার কাছে ঘুষ চেয়েছেন বলেও দাবি করেন তাসলিমা। পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তাসলিমার অপর অভিযোগ, তিনি ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকৃত সিএনজি চালিত অটোরিকশাটি টাকার বিনিময়ে অভিযুক্তের কাছে হস্তান্তর করেছেন।
এ বিষয়ে তাসলিমা খাতন বলেন, আমার স্বামী একজন নেশাগ্রস্থ ব্যক্তি। প্রায় এক বছর আগে আমি আমার দুই ছেলে সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসি। এরপর বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল ২ এ সন্তানের ভরণপোষণ দাবিতে মামলা করি।
এরপর থেকে আমার স্বামী আমাকে এক লাখ টাকা নিয়ে তালাক দিতে বলে। তবে আমি এতে রাজি হইনি, কারণ বিয়েতে দেনমোহর ছিল আড়াই লাখ টাকা। তিন মাস আগে আমার বাবার বাড়িতে সিএনজি নিয়ে এসে সন্তানদের নিয়ে যেতে চাইলে আমি বাধা দেই। এরপর তিনি আমাকে মারধর করার চেষ্টা করে। এ সময় গ্রামের মানুষ ছুটে আসলে তিনি পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে মারধরের অভিযোগ নিয়ে ধুনট থানায় গেলে ওসি মামলা নিয়ে আপোষের দিন ধার্য করে এবং আমার স্বামীর সিএনজিটি ঘটনাস্থল থেকে থানায় নিয়ে আসে। তবে নির্ধারিত দিনে থানায় গিয়ে তিনি জানতে পারেন, টাকার বিনিময়ে সিএনজিটি তার স্বামীকে ফিরিয়ে দিয়েছেন ওই ওসি। তারপর থেকে থানায় গেলে ওসি এক লাখ টাকার বিনিময়ে কোর্ট থেকে অভিযোগ তুলে নিতে বলে এবং আপোষ-নিষ্পত্তি করে দেওয়ার বিনিময়ে কিছু খরচ চায়।
ধুনট থানার ওসি সাইদুল আলমের বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাসলিমা খাতুন ও তার স্বামী মঞ্জুর মধ্যে গণ্ডগোল চলছিল। দীর্ঘদিন ধরে তাসলিমা তার দুই সন্তান নিয়ে ধুনটে বাবা-মা’র কাছে থাকেন। প্রায় তিন মাস আগে তার সিএনজি চালক স্বামী সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে আসে। তখন মারামারির ঘটনা ঘটলে সিএনজি চালিত অটোরিকশা রেখে পালিয়ে যায় স্বামী মঞ্জুর। এর পরে সিএনজি থানায় আনা হয়। পরবর্তীতে মঞ্জুর তার কাগজ পত্র দেখিয়ে সিএনজি নিয়ে যায়। পরে তাসলিমা ভরণপোষণের জন্য আমার কাছে মামলা করতে আসলে আমি বলি ভরণপোষণের মামলা তো সরাসরি আদালতে করতে হবে। মামলা আপোষ করার জন্য আমি চাপ দেইনি এবং কোনো টাকা-পয়সা চাইনি।