সুউচ্চ মিনার আর দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্যে নজর কাড়ছে খুলনার তালাবওয়ালা মসজিদ
আহমাদ মুছা রঞ্জু: প্রায় ৭০ বছর বয়সী খুলনার ঐতিহ্যবাহী তালাবওয়ালা জামে মসজিদ। অসাধারণ কৃত্তিম কারুকার্য এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মিশেল ঘটিয়েছে মসজিদটি। সাদা টাইলসে মোড়ানো নান্দনিক মিনার। আছে দৃষ্টিনন্দন শাহী গেট। মিনার থেকে প্রধান ফটক পর্যন্ত কারুকার্য যেন একটি থেকে আরেকটি উচ্চতর। রয়েছে সুসজ্জিত বাগান, যেখানে দেখা মিলবে শোভাবর্ধনকারী দেশি-বিদেশি নানা উদ্ভিদের। ভেতরে রয়েছে আলো ঝলমলে লাইটিং ব্যবস্থা। সব মিলে খুলনা শহরের প্রাণকেন্দ্রে থাকা মসজীদটি দেখতে আসেন দুরদুরান্তের মুসল্লিরা।
১৯৬৭ সালে খুলনা মহানগরীর মুসলমানপাড়ায় প্রতিষ্ঠিত হয় ‘জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া দারুল উলুম মাদরাসা’। এই মাদরাসার দৃষ্টিনন্দন মসজিদ তালাবওয়ালা জামে মসজিদ। আল্লামা শামছুল হক ফরিদপুরী (রহ.)-এর অনুপ্রেরণায় বিশিষ্ট সমাজসেবক মরহুম হাজী আবদুল হাকিম জমাদ্দারের পৃষ্ঠপোষকতায় মাওলানা মুজিবুর রহমান (রহ.) এটি প্রতিষ্ঠা করেন। এই মসজিদের নির্মাণকাজ, নির্মাণশৈলী এবং চারপাশের পরিবেশের জন্য দর্শনার্থীদের কাছে বিখ্যাত। ফলে দূরদূরান্ত থেকে মুসল্লিরা এখানে নামাজ পড়তে আসেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও সাংবাদিক শেখ দিদারুল আলম বলেন, মসজিদটি খুলনার ইতিহাসের সাক্ষী। যুগ যুগ ধরে এই মাদরাসা ও মসজিদটি ইসলামের আলোকবর্তিকা ছড়িয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় করতে দূরদূরান্ত থেকে মুসল্লিরা আসেন এই মসজিদে। বিশেষ করে মসজিদ সংলগ্ন মাদরাসাটি বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মাদরাসা। এই মাদরাসায় যারা লেখাপড়া করে তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা। এই মাদরাসা খুলনা অঞ্চলের আলেম-ওলামা সৃষ্টিতে অবদান রেখে চলেছে।
নজরকাড়া মসজিদে প্রবেশ করতেই চোখ জুড়িয়ে যায় সবার। মসজিদের সৌন্দর্য বাড়াতে চারদিকে স্থাপন করা হয়েছে লাইটপোস্ট। নির্মাণ করা হয়েছে বিভিন্ন স্থাপনা। এ মসজিদটিতে রয়েছে ২২৬.৫ ফুট উচ্চতার বিশাল মিনার। দক্ষিণাঞ্চলের সর্বোচ্চ মিনার এটি। মসজিদ ও মিনারটির পুরোটাই সাদা টাইলস দিয়ে মোড়ানো। সুউচ্চ মিনার ছাড়াও মসজিদটিতে রয়েছে চারটি গম্বুজ। মসজিদের তিন পাশের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় সর্বোচ্চ এবং অন্যতম সুন্দর মিনার দেখে মুগ্ধ হন সবাই। মসজিদ অভ্যন্তরে রয়েছে নানা ধরনের উদ্ভিদের সুসজ্জিত বাগান। সেখানে মিলবে অর্কিড, বনসাই, সাইকাস, পাইনাসসহ নানা ধরনের শোভা বর্ধনকারী উদ্ভিদের দেখা। এ ছাড়া চারপাশে রয়েছে বিভিন্ন জাতের সুপারি ও নারকেল গাছ।