পাওনা টাকা চাইতে গেলে বন্ধুদের মারধরে যুবক নিহত
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেস্ক:
পঞ্চগড় সদর উপজেলায় বন্ধুদের মারধরে রবিউল ইসলাম (১৮) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। পাওনা টাকা চাইতে গেলে তাকে মারধর করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা করেছে নিহতের মামা।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিউল মারা যান। গত বুধবার রাতে উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের নয়নীবুরুজ উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ঝলইহাট-কালিয়াগঞ্জ সড়কে তাকে মারধরের ঘটনা ঘটে।
মামলার আসামিরা হলেন, নতুনহাট এলাকার মোতালেবের ছেলে জিসান ইসলাম রহমত (২২), একই এলাকার মোতালেব (৫৫), কাজী পাড়া এলাকার হাবেজ আলীর ছেলে আব্দুল্লাহ (১৮), তারজেন ইসলামের ছেলে সবুজ (২৩), রফিকুল ইসলামের ছেলে বক্কর (২০)। এছাড়া মামলায় আরও ৪-৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, বেশ কিছুদিন আগে রবিউলের কাছ থেকে ৬০০ টাকা ধার নেন তার বন্ধু জিসান ইসলাম রহমত। রবিউল পাওনা টাকা চাইলে গেলে জিসান রেগে যেত। এনিয়ে তাদের বিরোধ তৈরি হয়। গত বুধবার রাতে সদর উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের দামুকা পাড়া এলাকার নিজ বাড়ি থেকে ঝলই বাজারে আসছিলেন রবিউল। এ সময় মাগুড়া ইউনিয়নের নয়নীবুরুজ উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ঝলইহাট-কালিয়াগঞ্জ সড়কে রবিউলের পথরোধ করেন জিসানসহ অন্য আসামিরা। এ সময় তাকে এলোপাথারি মারধর শুরু করেন তারা। একপর্যায়ে রবিউলের বাম চোখে জিসান ইট দিয়ে আঘাত করলে মাটিতে পড়ে যায় তিনি। তাকে শ্বাসরোধে হত্যার জন্য গলা টিপে ধরেন আসামিরা। মৃত ভেবে তাকে ফেলে পালিয়ে যান তারা। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বাসায় পাঠিয়ে দেন। রাতে রবিউলের শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে রবিউলের শারিরীক অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। এ সময় দেবীগঞ্জ পৌঁছালে রবিউলের শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে। দ্রুত তাকে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মামলার বাদী ও নিহত রবিউলের মামা জয়নাল ইসলাম বলেন, পাওনা ৬০০ টাকা চাইতে গেলে জিসান ও তার সহযোগীরা আমার ভাগিনাকে মারধর করে হত্যা করেছে। রবিউলের বাবা ছেলেকে হারিয়ে পাগল প্রায়। দিনমজুর পরিবারের সংসারে নিজেরাই কষ্টে দিনাতিপাত করতো। পরিবারের উপার্জনক্ষম একটা ছেলে আজ নাই। পরিবারটি কিভাবে শোক সামলাবে। রবিউলকে হত্যার তিন দিন হয়ে গেলেও আসামিদের ধরতে পুলিশের কোনো পদক্ষেপ নাই। আমরা দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই আমরা।
সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাসুদ পারভেজ বলেন, এ ঘটনায় মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আসামিরা ঘটনার পরপরই পালিয়ে গেছে। তবে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।