শেরপুরের নকলায় সরকারি কোয়ার্টার থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার

জাহাঙ্গীর হোসেন আহমেদ, শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুরের নকলায় সরকারি কোয়ার্টার থেকে ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থায় সুমি আক্তার (২৭) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে নকলা থানা পুলিশ।

৭ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার রাতে চরঅষ্টধর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের সরকারি কোয়ার্টার থেকে ওই মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

২ সন্তানের জননী সুমি চরঅষ্টধর ইউনিয়নের চরবসন্তী গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর স্বামীর নাম মোজাম্মেল হোসেন (৩৫)। তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে চরঅষ্টধর ইউনিয়নের নারায়নখোলা বাজারে শাহজাহান বেকারীতে শ্রমিকের কাজ করতেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায় ভুমিহীন মোজাম্মেল প্রায় ৭/৮ বছর ধরে স্ত্রী সুমিকে নিয়ে চরঅষ্টধর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের সরকারি কোয়ার্টারে বসবাস করেন। সুমি ছিল পরকিয়ায় আসক্ত। বিয়ের পর থেকে সে একাধিক পুরুষের সাথে পরকিয়া করত। সম্প্রতি সে মন্ডল মিয়া নামে স্থানীয় এক রাজমিস্ত্রির সাথে পরকিয়ায় জড়িয়ে তাঁর সাথে পালিয়ে যায়। পরে সুমির স্বামী মোজাম্মেল অনেক বুঝিয়ে সুমিকে ঢাকার আটিররাজার এলাকা থেকে নিজের কাছে নিয়ে আসে।

সুমির স্বামী মোজাম্মেল জানান ৭ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সন্ধ্যার আগ মুহুর্তে তিনি খাবার আনতে কোয়ার্টার থেকে বেরিয়ে নারায়নখোলা বাজারে যান। সন্ধ্যার পর কোয়ার্টারে ফিরে ভেতর থেকে কোয়ার্টারের দরজা লাগানো দেখতে পায় মোজাম্মেল। পরে সে বাউন্ডারির ওয়াল টপকে ভেতরে ঢুকে সুমিকে একটি কক্ষের বাঁশের ধন্যার সাথে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে ফাঁসিতে ঝুলতে দেখে পুলিশে খবর দেয়।

নকলা থানাধীন চন্দ্রকোনা পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহিম জানান খবর পেয়ে চরঅষ্টধর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের সরকারি কোয়ার্টারে গিয়ে একটি কক্ষ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় সুমি নামে এক মহিলার মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর জেলাসদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নকলা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডা. মোহাম্মদ উল্লাহ রাব্বী জানান চরঅষ্টধর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে মা ও শিশু সেবার জন্য প্রতিদিন একজন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা বসেন। কিন্তু সরকারি কোয়ার্টারটি ১৫ বছর ধরে পরিত্যাক্ত ঘোষণা করায় সেখানে তিনি থাকেননা। নেই কোন নিরাপত্তা প্রহরী। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল মোজাম্মেলের পরিবারকে সেই পরিত্যাক্ত কোয়ার্টারে থাকতে দিয়েছে। আমরা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কতৃপক্ষ জানিয়েছি। তারপরেও আমরা মোজাম্মেলের পরিবারকে জানিয়ে দিয়েছি এখানে খাকলে নিজ জিম্মায় থাকতে হবে। অপ্রীতিকর কোন কিছু ঘটলে আমরা দায়ী থাকবনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *