পেট্রোল পাম্পের অযৌক্তিক ধর্মঘটে ভোগান্তিতে কৃষক ও যানবাহন চালকদের ; বিকেল ৪ টায় ধর্মঘট প্রত্যাহার

আদমদীঘি প্রতিনিধি:
বগুড়ার আদমদীঘিতে পেট্রোল পাম্প মালিকদের অযৌক্তিক ধর্মঘটে ভোগান্তিতে পড়েছে ছোট-বড় যানবাহন চালকরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮ টায় এই ধর্মঘটের কারনে উপজেলার সান্তাহার হা-মীম ফিলিং স্টেশন, আনিকা ফিলিং স্টেশন, আশা ফিলিং স্টেশন, নশরতপুর এলাকায় জয় ফিলিং স্টেশনে জ্বালানি তেল বিক্রি বন্ধ করা হয়৷ শুধু তাই নয় জ্বালানি তেলের জন্য বন্ধ হয়েছে কৃষকদের সেচ পাম্প৷ ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষক সহ ছোট-বড় যানবাহন চালকরা। অনেকেই পাম্পের সামনে উত্তেজিত হয়ে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এই ঘটনার ৮ ঘন্টা পর বিকেল ৪ টায় ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেয় পেট্রোল পাম্প মালিকরা।
জানা যায়, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহারে রাস্তার দুই পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনার উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সান্তাহার পশ্চিম ঢাকা রোড থেকে আদমদীঘি হয়ে নওগাঁ-বগুড়া মহাসড়কে ৪৩ কিলিমিটার পর্যন্ত দুইপাশে পাকা-আধাপাকা বসত বাড়ি, পেট্রোল পাম্প, কলকারখানা ও দোকানসহ অবৈধভাবে বিভিন্ন স্থাপনা উচ্ছেদ করেন তারা। অভিযোগ উঠেছে দীর্ঘদিন ধরে এই জায়গাগুলো কেউ ক্ষমতার জোরে, কেউবা কৌশলে, আবার কেউ পেশি শক্তির বলে দখল করে রেখেছেন৷ এতে করে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বাধাবিঘ্নতা সৃষ্টি হচ্ছিল। যার ফলে এসব অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে গত ২৩ জানুয়ারি সড়ক ও জনপথের রাস্তার দুইপাশে অবৈধ স্থাপনা অপসারণের বিষয়ে গণ-বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন সওজ কর্তৃপক্ষ। এবং সাত দিন ধরে মাইকিং করে অবৈধ স্থাপনাগুলো নিজ নিজ দায়িত্বে সড়িয়ে ফেলতে বলা হয়। এরপর বগুড়া সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা হয়। অভিযানে সান্তাহার আনিকা ফিলিং স্টেশন ও হা-মীম ফিলিং স্টেশনসহ কয়েক শত অবৈধ স্থাপনা বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দখলমুক্ত করেন। কিন্তু উচ্ছেদ অভিযানের পরদিন সকালে সান্তাহার আনিকা ফিলিং স্টেশন ও হা-মীম ফিলিং স্টেশনের স্বত্বাধিকারী সওজের জায়গা নিজের মালিকানা দাবী করে সওজের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং রাজশাহী-রংপুর বিভাগে পেট্রোল পাম্প মালিকরা ধর্মঘটের ডাক দেন। এতে ভোগান্তি পোহাতে হয় জনসাধারণসহ ছোট-বড় যানবাহন চালকদের। ফলে এই পেট্রোল পাম্প মালিকদের এমন ধর্মঘটকে অযৌক্তিক বলে মনে করছেন সচেতন এলাকাবাসী। অনেকেই মনে করছেন পেট্রোল পাম্প মালিকদের এটা স্বেচ্ছাচারীরতা ছাড়া আর কিছুই নয়।
মোটরসাইকেল আরোহী রোকনুজ্জামান রুকু জানান, পাম্পে এসে তেল না পাওয়ায় ফিরে যেতে হচ্ছে। তেলের পাম্প বন্ধ থাকায় আশপাশের দোকানেও পেট্রোল পাওয়া যাচ্ছেনা। এদিকে সকাল থেকে বহু জ্বালানি চালিত বিভিন্ন যানবাহনগুলো পাম্পে এসে বন্ধ থাকায় চলে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে জনসাধারণের ভোগান্তি চরমে উঠবে। পাম্প বন্ধ থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
সান্তাহার আনিকা ফিলিং স্টেশনের স্বত্বাধিকারী আব্দুল জলিল তেলের ধর্মঘট বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে কোন মন্তব্য করতেই চায়নি।
এ ব্যাপারে আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আফরোজ জানান, ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে এসেছিলাম। পেট্রোল পাম্পের মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জেলা প্রশাসক স্যারকে জানানো পর বিকেল ৪ টায় ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বগুড়া সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান জানান, আমরা সঠিক সীমানা নির্ণয় করে অপসারণ করছি। যেগুলো জায়গা অপসারণ করা হচ্ছে সব সওজের জায়গা। দীর্ঘদিন দখলে ছিলো এটা মুক্ত করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *