চালের দামে নড়চড় নেই কমেছে আলু ও মুরগির

প্রধান প্রতিবেদক
শীত মৌসুমের সুবাদে সবজির বাজারে স্বস্তি বিরাজ করছে। এর মধ্যে সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারে মুরগি ও আলুর দাম কমেছে। তবে চালের বাজার এখনও চড়া। এ নিয়ে সমস্যায় আছেন স্বল্পআয়ের মানুষ। অপরদিকে সয়াবিন তেলে সরবরাহ এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। ফলে দোকানে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে ক্রেতাদের।

মাস দেড়েক আগে চালের দাম কেজিতে পাঁচ থেকে আট টাকা পর্যন্ত বেড়েছিল। এ সময় ৭২ থেকে ৭৪ টাকা দামে বিক্রি হওয়া মিনিকেটের দাম বেড়ে ৮০ টাকায় পৌঁছায়। এর পর দাম আর কমেনি। সরকার শুল্ক কমিয়ে আমদানির অনুমতি দিলেও চালের বাজারে এসব উদ্যোগের তেমন প্রভাব পড়েনি। রাজধানীর খুচরা বাজারে এখনও প্রতিকেজি মিনিকেট ও নাজিরশাইলের মতো সরু চাল ৮০ থেকে ৯০ টাকা এবং মাঝারি ধরনের ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ চাল ৬২-৬৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর দরিদ্রদের ভরসা মোটা চালের কেজি ৫৪ থেকে ৫৮ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, চালকলগুলো অস্বীকার করলেও তারাই

দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। নানা অজুহাতে বড় মিলগুলো দাম বাড়ানোর পর তাদের দেখাদেখি অন্যরাও বাড়িয়ে দেয়। দীর্ঘদিন ধরে চালের বাজার এভাবেই চলে আসছে। দুই সপ্তাহ আগে ২০০-২১০ টাকায় পৌঁছে যাওয়া। ব্রয়লার মুরগির দাম কমে গতকাল ১৮৫-১৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অর্থাৎ দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির কেজিতে দাম কমেছে ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। অন্যদিকে, সোনালি মুরগির দাম ৩০০-৩৩০ টাকা থেকে কমে গতকাল বিক্রি হয়েছে ২৯০-৩১০ টাকা দরে। মুরগির বাজারে দাম কমলেও ফার্মের মুরগির ডিমের দাম কমেনি। প্রোটিনের সহজলভ্য উৎস হিসেবে পরিচিত এ ডিমের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজারভেদে এক ডজন ফার্মের ডিমের দাম পড়ছে ১২৫-১৩০ টাকা। পাড়া-মহল্লার দোকানে অবশ্য আরও একটু বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

কদমতলী এলাকার খুচরা বিক্রেতা মো. জিসান বলেন, চাহিদা আগের মতোই রয়েছে; কিন্তু সরবরাহ বেড়েছে। ফলে পাইকারি বাজারে কিছুটা কমেই মুরগি কেনা যাচ্ছে। যার প্রভাব খুচরা দামেও পড়েছে। বাজারে আলুর দাম কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকা দরে। গত সপ্তহে যা বিক্রি হয়েছে ২৫-৩০ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে নতুন আলুর সরবরাহ অনেকখানি বেড়েছে। এ কারণে দামও পড়তির দিকে রয়েছে।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুসারে, গত এক মাসে আলুর দাম কমে প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। এমনকি গত বছরের এই সময়ের তুলনায়ও এখন আলু কম দামে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে বাজারের স্বস্তির নাম এখন সবজি। বেশিরভাগ সবজিই নাগালে রয়েছে। শীত মৌসুমে সবজির সরবরাহ বাড়ায় বাজারভরা এখন তরিতরকারি। সবজির মধ্যে টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রকলি, শালগম, মুলা প্রভৃতি পণ্যের চাহিদা বেশি; দামও কম। খুচরা পর্যায়ে এখন প্রতি পিস ফুলকপি ১৫-২০ টাকা, বাঁধাকপি ও ব্রকলি ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতিকেজি মুলা ২০ টাকা; মিষ্টিকুমড়া, শালগম ও পেঁয়াজ কলি ৩০-৩৫ টাকা; শিম ২০-৪০ টাকা; শসা, বেগুন, টমেটো ও লাউ ৩০-৬০ টাকা এবং কাঁচামরিচ ৪০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যদিও পেঁপের দাম এখন অনেকটা বেশি। প্রতিকেজি পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা। সবজির বাজারে স্বস্তি বিরাজ করলেও মাছের বাজারে দাম অনেকটাই অপরিবর্তিত রয়েছে।

এদিকে রাজধানীর খুচরা বাজারে বেশিরভাগ দোকানে বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। অভিযোগও রয়েছে, অনেক দোকানি নিয়মিত ক্রেতাদের জন্য বোতল সরিয়ে রাখছেন। আবার কোনো কোনো দোকানে বেশি দামেও বিক্রি হচ্ছে। এতে বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনতে গিয়ে এখনও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ক্রেতাদের।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগামী রমজানের আগে সয়াবিনের দাম আরেক দফা বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে কোম্পানিগুলো। তাই দাম বাড়ানোর পরও বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। যদিও ডিলারদের দাবি, তারা তেল সরবরাহ করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *