চকরিয়ায় স্বামীর ছুরিকাঘাতে স্ত্রীর মৃত্যু, মুমূর্ষু অবস্থায় শাশুড়ি
কক্সবাজার, চকরিয়া প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের চকরিয়ায় বিয়ের ৮ মাসের মাথায় ছুরিকাঘাতে স্ত্রীকে হত্যা করেছে ঘাতক স্বামী। এ সময় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে শাশুড়িকেও ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত করা হয়। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শাশুড়ির জ্ঞান ফেরেনি বলে পরিবার সূত্র জানায়।
অন্যদিকে ছুরিকাঘাতের পর পালিয়ে যাওয়া ঘাতক স্বামীকে বান্দরবানের লামা থেকে পুলিশ আটক করেছে বলে জানা গেছে।
এর আগে শুক্রবার বেলা ১টার দিকে চকরিয়া পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড মজিদিয়া মাদরাসা পাড়ার আবদুল হামিদের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
ঘাতক স্বামীর হাতে খুনের শিকার স্ত্রীর নাম উম্মে হাফসা তুহি (১৮) ও গুরুতর আহত শাশুড়ির নাম পারভীন আক্তার (৪২)। তারা সংবাদকর্মী আবদুল হামিদের কন্যা ও স্ত্রী।
ঘাতক স্বামীর নাম শওকত হাসান মেহেদী (২৬)। উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আজিমুল্লাহ পাড়ার আবুল হাশেমের ছেলে। পেশায় সে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি।
উম্মে হাফসা তুহির বাবা আবদুল হামিদ জানান, গত ৮ মাস আগে তার মেয়েকে জোরপূর্বক অপহরণ করে নিয়ে যায় বখাটে মেহেদী।
এনিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। এর জের ধরে মেয়েকে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন নির্যাতন করতো। নির্যাতনের বিষয়টি মেয়ে তাকে জানালে গত বছরের ডিসেম্বর মাসের ৫ তারিখ মেয়ে তুহিকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
আবদুল হামিদ আরো জানান, বৃহস্পতিবার স্বামী মেহেদী তাদের (শ্বশুর) বাড়িতে আসে। শুক্রবার সকালে তুহিকে স্বামী শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে যেতে চাইলে তারা বাধা দেন।
তখন জামাতাকে জানিয়ে দেওয়া হয় অভিভাবক এবং আত্মীয়-স্বজনরা আসলে তাদের সঙ্গে কথা বলেই মেয়েকে পাঠানো হবে। এতে রেগে গিয়ে জামাতা মেহেদী বাড়ি থেকে বের হয়ে যান।
আবদুল হামিদ বলেন, এরই মধ্যে জুমার নামাজের সময় ঘনিয়ে আসলে তিনি মসজিদে চলে যান। এ সুযোগ জামাতা বাড়িতে ঢুকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে মেয়েকে। এ সময় বাধা দিতে চাইলে শ্বাশুড়িকেও ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে তাদের দ্রুত উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক তুহিকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে স্ত্রী পারভীনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মঞ্জুর কাদের ভুইয়া বলেন, ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় লাশ উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আহত পারভীন আক্তারকে পাঠানো হয়েছে চমেক হাসপাতালে। ঘাতক বখাটে স্বামী মেহেদীকে বান্দরবানের লামার পাহাড়ি এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।