খুলনা ওয়াসায় নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ করায় আক্রোশের শিকার কর্মচারি!

সেখ রাসেল, ব্যুরো চিফ, খুলনা:
​ খুলনা ওয়াসায় রাজনৈতিক প্রভাব, স্বজনপ্রীতি ও শিক্ষাগত যোগ্যতার মূল্যায়ন না করে উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) পদে বাণিজ্যের মাধ্যমে নিয়োগ প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। কর্তৃপক্ষের কাছে এ অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ও প্রতিকার চেয়ে আবেদন করায় ওয়াসায় কর্মরত একজন আউট সোর্সিং কর্মচারি এক কর্মকর্তার ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার হয়েছেন। তাকে তার পদ থেকে সরিয়ে নি¤œস্তরে নিয়োজিত করা হয়েছে। ফলে তিনি ন্যায় বিচার বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগকারী সোহেল হাসান রুমি নগরীর টুটপাড়া মেইন রোড এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধার এবি এম সাত্তারের ছেলে। তিনি খুলনা ওয়াসায় বিগত ৫ বছরেরও অধিক সময় ধরে প্লান্টে চায়না কোম্পানির সঙ্গে আউট সোর্সিং এ কর্মরত রয়েছেন। প্লান্ট পরিচালনার চায়না ট্রেনিং থাকায় খুলনা ওয়াসা তাকে রেখে দেয়।
অভিযোগে বলা হয়, খুলনা ওয়াসায় ২০২০ সালের ২৩ আগষ্ট আবেদনের প্রেক্ষিতে উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) পদে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন ভূক্তভোগী সোহেল হাসান রুমি। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি ৭ নম্বর সিরিয়ালে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন। ভাইবা বোর্ডেও সকল প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেন তিনি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাকে নিয়োগ প্রদান না করে তার সিরিয়াল ভেঙ্গে অন্যদের নিয়োগ প্রদান করেন। এমনকি তার মেধা ও শিক্ষাগত যোগ্যতারও কোন সঠিক মূল্যায়ন করা হয়নি। শুধুমাত্র রাজনৈতিক বিবেচনায় এলাকা ভিত্তিক স্বজনপ্রীতির কারনে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যাদেরকে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে বেশির ভাগই প্রকল্পে নিয়োজিত ছিল। এছাড়া ইতিপূর্বে নিয়োগ প্রদানকারীদেরও কোন মেধার যাচাই করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী আরমান সিদ্দিকী’র মাধ্যমে সিরিয়াল ভেঙ্গে তার এলাকার বাসিন্দা আবু সালেহ মোহাম্মদ সুলতানকে উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। ফলে সোহেল হাসান রুমি চরম বৈষম্যের শিকার হয়েছেন।
এদিকে, নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ও প্রতিকার চেয়ে ভূক্তভোগী সোহেল হাসান রুমি গত ২৯ ডিসেম্বর খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর লিখিত আবেদন করেন। এ আবেদনের পর কোন ধরণের অভিযোগ ছাড়াই তাকে সিসিআর টিম লিডার পদ থেকে প্রসেস অপারেটর পদে পদাবনতি দেওয়া হয়।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে নির্বাহী প্রকৌশলী আরমান সিদ্দিকী বলেন, আবু সালেহ মোহাম্মদ সুলতানকে উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) পদে নিয়োগ প্রদান বা অভিযোগকারী সোহেল হাসান রুমিকে নিয়োগ প্রদানে বঞ্চিত করার সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত নন। এছাড়া অভিযোগ করার পর রুমিকে পদাবনতি দেওয়ার সঙ্গেও তিনি জড়িত নন। তার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অভিযোগ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ খুলনার পরিচালক ও খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. তবিবুর রহমান অভিযোগকারীকে তার সঙ্গে সরাসরি দেখা করে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য এ প্রতিবেদককে পরামর্শ দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *