বাগেরহাটে প্রকাশ্য দিবালোকে এক পক্ষের ৮ বাড়িতে আগুন ও লুটপাট
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেস্ক:বাগেরহাট উপজেলা সদরের বিষ্ণুপুর কুলিয়াদাইড় গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের ৩ দিন ধরে দফায় দফায় সংঘর্ষের জের ধরে বুধবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আবারও সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় এক পক্ষের বসতঘরসহ ৮/১০ টি ঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এর আগে ওই বাড়ী থেকে নগদ টাকা ও স্বর্নালংকার লুট করা হয়। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হলে নারী ও বৃদ্ধসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। আহতদের বাগেরহাট ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্ত্তি করা হয়েছে। এলাকায় বিএনপির কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে মোল্লা মোস্তাফিজুর রহমান ও শেখ রুহুল আমীন গ্রুপের মধ্যে দফায়-দফায় এ সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনার জের ধরে সন্ধ্যায় শেখ রুহুল আমীনসহ তাদের ৮ ভাইয়ের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর যথানিয়মে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পর্যায়ক্রমে ৩ দফা সংঘর্ষের পর বিএনপির বিবাদমান দুই গ্রুপের মধ্যে ফের সংঘর্ষের আশঙ্কায় এখন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছে। সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের মধ্যে গুরুতর আহতরা হলেন শেখ সায়েল উদ্দিন (৬০), মাহামুদ (৪৫), লিটন শেখ (২৫), মামুন মোল্লা (৪২), কেরামত আলী (৩৮), রোজিনা বেগম (৪৫). হেনা বেগম(৩৩) ও মনিরা বেগম (৪৫)। এদের মধ্যে মাহামুদ (৪৫), মামুন মোল্লা (৪৮) ও সায়েল উদ্দিনের অবস্থা অশংকাজনক। সর্বশেষ হামলার শিকার বাগেরহাট সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য শেখ রুহুল আমীন জানান, বুধবার দুপুরে বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন বিএনপি কমিটি গঠন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে জেলা বিএনপির আহবায়ক আকরাম হোসেন তালিমের সঙ্গে কথা বলে শহর থেকে বাড়ি ফেরার পথে কুলিয়াদাইড় গ্রামের ভিআইপি মোড়ে পৌঁছালে প্রতিপক্ষ মোল্লা মোস্তাফিজুর রহমান গ্রুপের কর্মীরা তাদের উপর হামলা চালায়। এতে তার গ্রুপের কয়েকজন আহত হন এবং আরো ৪টি মুল্যাবান মটরসাইকেল ভাংচুর ও পুড়িয়ে দেয়া হয়। অপর দিকে, বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোল্লা মোস্তাফিজুর রহমান গ্রুপের নেতা মাসুম মোল্লা জানান, তাদের গ্রুপের ওপর হামলার ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিতে আসার পথে শেখ রুহুল আমীন গ্রুপের লোকজন বিকালে তাদের ওপর আবার হামলা চালায়। এতে তাদের গ্রুপের ৫ জন আহত হন। এ ঘটনায় সন্ধ্যায় কুলিয়াদাইড় গ্রামে উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে এবং শেখ রুহুল আমীনসহ তাদের ৮ ভাইয়ের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের নারীসহ আরো ১৫ জন আহত হন। স্থানীয় একাধিক সাধারন মানুষ বলেন গত ৩/৪ দিন ধরে বিষ্ণুপুর এলাকায় বিএনপির দুই গ্রুপে হামলা- পাল্টা হামলা ও সর্বশেষ বসতবাড়ীতে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটলেও দেখা-দৃষ্টিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলি কোন পদক্ষেপ নেয় না। দলীয়ভাবে বিএনপির উর্ধতন নেতারাও এদের নিয়ন্ত্রন করছে না। ফলে এলাকাবাসি চরম আতংকে দিন কাটাচ্ছে। বাগেরহাট সদর থানার ওসি মো. সাইদুর রহমান জানান, বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পেয়ে থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে ফের সংঘর্ষের আশঙ্কায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। বাগেরহাট পুলিশ অফিসের মিডিয়া সেলের পুলিশ পরিদর্শক মোঃ শাহিদুজ্জামান বৃহস্পতিবার দুপুরে জানান, বিষ্ণুপুর এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। এ ঘটনায় কোন পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দেয়নি এবং কাউকে গ্রেফতার করা হয় নি।