সাপাহারে চাকরি দেবার নামে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
সাপাহারে চাকরি দেবার নামে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
নয়ন বাবু, সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর সাপাহারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রার্থীদের নিকট বিপুল পরিমাণ আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে গোয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিনের বিরুদ্ধে । পরবর্তী সময়ে চাকুরী দিতে পারেন নি তিনি। প্রার্থীরা প্রদেয় অর্থ ফেরৎ চাইলে টাকা ফেরত দিতে গড়িমসি করে। যার ফলস্বরূপ বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন কৈবর্তগ্রামের ভুক্তভোগী আব্দুল মান্নান। তিনি মৃত আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে বলে জানা গেছে ।
বিজ্ঞ আদালতের মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ ডিসেম্বর-২০২৩ তারিখে “দৈনিক যায়যায়দিন” ও “দৈনিক সাতমাথা” পত্রিকায় ১ জন সহকারী শিক্ষক,একজন নিরাপত্তা কর্মী, ১ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী, ১ জন নৈশ প্রহরী ও ১জন আয়া পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞাপন ছাপানো হয়। সেই বিজ্ঞাপনের প্রেক্ষিতে অনেকে আবেদন করেন। তারই সূত্র ধরে বাদীর পুত্রবধূ আয়া পদে আবেদন করেন। ওই শিক্ষকের সাথে বাদি আব্দুল মতিনের চলাফেরা ভালো এবং সুসম্পর্ক ছিলো। যার ফলে বাদীর বৌমাকে আয়া পদে নিয়োগ দেওয়ার প্রলোভন দেখায়। চাকরী নিতে হলে প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিনকে তিন লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা দিতে হবে।
বাদী সহজ সরল হবার ফলে বউমার চাকরীর জন্য সেই টাকা স্বাক্ষীদের সামনে প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিনকে দেন। এর পর বাদীর পুত্রবধূ উক্ত পদে আবেদন করেন। যথারীতি ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। কিন্তু পরীক্ষায় টিকে যাবার পর এবং টাকা নেবার পরও ওই চতুর প্রধান শিক্ষক সহ নিয়োগবোর্ড অন্য আরেকজনকে নিয়োগ প্রদান করেন।
বিষয়টি নিয়ে আব্দুল মতিনের কাছে কারন জানতে চাইলে বাদীর কথায় কর্ণপাত করে না। এতে করে বাদী নিরুপায় হয়ে স্থানীয় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে আপোষ মিমাংসায় বসা হলে আব্দুল মতিন দলীয় ও গায়ের জোরে টাকা দিবেন না বলে অস্বীকার করেন। পরে বাদী নিরুপায় হয়ে বিজ্ঞ আদালতের এডভোকেট দ্বারা একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। কিন্তু ওই প্রধান শিক্ষক না থাকায় নোটিশটি ফেরৎ আসে। পরে বাদী নিরুপায় হয়ে বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেন।
অন্যদিকে উপজেলার কৈর্বতগ্রাম (ডুমুরিয়া) পাড়ার রমজান আলীরপুত্র এমরান আলী অভিযোগ, আমাকে চাকুরী দিবে মর্মে আমার ১ বিঘা জমি বিক্রি করে ৫ লাখ টাকা দিই আব্দুল মতিন, স্থানীয় আইনুল মাস্টার সহ আরেক জনকে। পরবর্তী সময়ে তারা আমাকে ২০২৪ সাল থেকে খাটিয়ে নিয়েছে। এমনকি নিজের বাড়ির কাজও করে নিয়েছে।
বিনিময়ে আমাকে এক টাকাও বেতন দেওয়া হয় নি। পরে পাঁচ লাখ টাকার মধ্যে একবার দুই লাখ পঞ্চাশ হাজার, ২য় বার ২০ হাজার মোট ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা ফেরত দেন। কিন্তু বাঁকি টাকা দিবো দিচ্ছি বলে সময়ক্ষেপণ করতেই থাকেন আব্দুল মতিন।
এ বিষয়ে আব্দুল মতিন সাংবাদিকদের সাথে কথা বলবে না মর্মে জানিয়ে দেন।
এই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হোক এমনটা দাবী করছেন ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীরা।