যশোরে পুলিশের পোশাকসহ আটক ৩
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেস্ক:যশোরসহ আশেপাশে বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ পরিচয় ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে যশোর ডিবি পুলিশ ছিনতাইকারী চক্রের তিন সদস্যকে আটক এবং তাদের কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত পুলিশ রিফলেকটিং ভেস্ট, চাকু এবং ছিনতাইকৃত তিনটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে।গত বুধবার রাতে তাদেরকে আলাদা আলাদা অভিযানে খুলনা যশোর থেকে আটক করা হয়। গত ডিসেম্বর ও চলতি জানুয়ারি মাসে যশোরের বাঘারপাড়া কয়েকটি স্থানে পুলিশ পরিচয় ও ডাকাতির ঘটনা ঘটে। যশোর ডিবি পুলিশ মনে করছে আটককৃতরা এসব অপরাধ সংঘটিত করেছে। আটককৃতরা হচ্ছে, যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের হাসান হোসেন মোল্লার ছেলে বর্তমানে খুলনার সোনাডাঙ্গা ট্রাকস্ট্যান্ড এলাকার বাসিন্দা সাগর হোসেন রাজ, খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার মাঝিগাতি গ্রামের মৃত মনোরঞ্জন বিশ্বাসের ছেলে বর্তমানে সোনাডাঙ্গার বাসিন্দা মিথুন বিশ্বাস ও বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার শোগুনা গ্রামের বিমল কৃষ্ণ পালের ছেলে বর্তমানে খুলনার লবণচরার জিন্নাপাড়া বউবাজার এলাকার সুশীল কুমার পাল। পুলিশ বলছে তাদের অন্যতম সহযোগি মহুরি পরচয়দানকারী মাসুদ নামের এক যুবক পালিয়েছে।ডিবি পুলিশ জানায় মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে এসআই খান মাইদুল ইসলাম রাজিব গোপন সূত্রে জানতে খবর পেয়ে যশোর শহরের জজ কোর্ট মোড়ের ম্যাক্স কোচিং সেন্টারের সামনে অভিযান চালান। এ সময় ডিবি পুলিশ সাগর হোসেন রাজ এবং মিথুন বিশ্বাসকে আটক করে। পরে ডিবি পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, তাদের আরেক সহযোগী সুশীল কুমার পালসহ অন্যরা পুলিশ পরিচয়ে বরিশাল থেকে নাম্বার বিহীন লাল কালো রঙের ১টি বাজাজ ডিসকভার মোটরসাইকেল, ফরিদপুরের মধুখালী থেকে রেজিস্ট্রেশন বিহীন কালো রঙের ১টি বাজাজ পালসার মোটরসাইকেল ও মাগুরা থেকে রেজিস্ট্রেশন বিহীন ১টি ইয়াহামা মোটরসাইকেল এবং ২টি মোবাইল ফোনসেট ছিনতাই করে এনেছেন। ছিনতাইকৃত ২টি মোটরসাইকেল তাদের হেফাজতে রয়েছে এবং অপর ১টি মোটরসাইকেল খুলনার সোনাডাঙ্গা ট্রাকস্ট্যান্ড এলাকায় রাখা আছে। এছাড়া যশোরের তাদের সহায়তাকারী জজ কোর্ট মোড়স্থ ম্যাক্স কোচিং সেন্টার ভবনের নিচতলায় মহুরি মাসুদের চেম্বারে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত ১টি পুলিশ রিফলেকটিং ভেস্ট ও ১টি চাকু রেখে দিয়েছেন। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২টি মোটরসাইকেল জব্দ এবং পরে মাসুদ মহুরির চেম্বারে তল্লাশি চালিয়ে ১টি পুলিশ রিফলেকটিং ভেস্ট, ১টি চাকু ও ১টি এন্ডোয়েড মোবাইল ফোনসেট উদ্ধার করা হয়। সূত্র জানায়, পরদিন বুধবার সকাল ৭টায় আটক দুই জনের স্বীকারোক্তিতে খুলনার রুপসার ইস্পাহানি গলি থেকে তাদের সহযোগী সুশীল কুমার পালকে আটক করা হয়। পরে আটক ৩ জনের স্বীকারোক্তিতে সোনাডাঙ্গা ট্রাকস্ট্যান্ড এলাকার লেবার অফিসের সামনে থেকে ছিনতাইকৃত অপর মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়।গত ডিসেম্বর মাসে ও চলতি জানুয়ারি মাসে যশোরের বাঘারপাড়া এলাকায় পুলিশ পরিচয় দিয়ে এক এক হিন্দু পরিবারের কয়েক বাড়িতে ডাকাতি করে। এছাড়া গত ২২ ডিসেম্বর যশোর নড়াইল সড়কের বাঘারপাড়া ছাতিয়ান তলার সড়কে পুলিশ পরিচয় মইনুদ্দিন নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় ৬০ টাকা কয়েকটি মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। এ সময় তারা মোটরসাইকেল ও পুলিশের ওয়ারলেস ও পোশাক ব্যবহার করে। একই মাসে বাঘারপাড়ার এক প্রবাসীর বাড়িতে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ডাকাতি করে অপরাধীরা। এদিকে এসব ঘটনার ব্যাপারে যশোরের বাঘারপাড়া থানা পুলিশ ভুক্তভোগীদের অভিযোগ গ্রহণ করলেও কোন আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে অপরাধীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।