বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একাধিক মামলার আসামী আ’লীগ নেতা ফারুকের বাড়িতে ওসিসহ বিএনপি নেতাদের ভোজন! ॥ সর্বত্রই বইছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়!

স্টাফ রিপোর্টার:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে অংশ নেয়া আওয়ামীলীগ নেতা ও এ সংক্রান্তে একাধিক মামলার আসামী ফারুক এখন বিএনপি নেতা,তাই কথিত এই বিএনপি নেতার বাসভবনে ভোজনের অনুষ্ঠানে সাখাওয়াত পন্থী বিএনপি নেতা থেকে শুরু করে বন্দর থানার ওসিসহ যেন কেউ বাদ ছিলেন না। ৫ জানুয়ারী রোববার দুপুরে এমনই ঘটনার বর্হিঃপ্রকাশ ঘটে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বন্দর থানার ২৭নং ওয়ার্ডের কুঁড়িপাড়া এলাকায়। এ ঘটনাকে ঘিরে গোটা বন্দর জুড়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বইতে শুরু করছে। প্রসঙ্গতঃ বন্দরের ২৭নং ওয়ার্ডের কুঁড়িপাড়া এলাকার ফিরোজ মিয়ার ছেলে সাবেক কাউন্সিলর প্রার্থী মোঃ ফারুক মিয়া দীর্ঘ দিন ধরে আওয়ামীলীগের সক্রিয় রাজনীতি করে আসছে। বিভিন্ন দিবসসহ আওয়ামীলীগের সভা সমাবেশে সে প্রতিনিয়তই মিছিল নিয়ে যোগদান করতো। এই ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থীও ছিলেন। গত ৫ আগষ্ট পট পরিবর্তনের পর পরই ফারুক মিয়া নিজেকে বিএনপি নেতা সাজার প্রাণপণ চেষ্টা করে চলেছেন। গা বাঁচাতে ইদানীং সে বিএনপির সভা সমাবেশে অংশগ্রহণ করছেন। তারই ধারাবাহিকতায় ৫ জানুয়ারী রোববার দুপুরে তার নিজ বাড়িতে ভোজনের আয়োজন করে। সেই আয়োজনে অংশ নেয় মহানগর বিএনপির আহবায়ক এ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেনের আস্থাভাজন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য শাহিন আহাম্মেদ,বন্দর থানা বিএনপি নেতা শাহনেওয়াজ,সহ বিএনপির অসংখ্য নেতা-কর্মী। এ সময় বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ তারিকুল ইসলামকেও দেখা যায়। একেতো আওয়ামীলীগের নেতা তার উপরে তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় সিদ্ধিরগঞ্জসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা থাকা স্বত্ত্বেও বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ এবং বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জের অংশগ্রহণের বিষয়টি সর্বত্রই আলোচনা সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাড়িয়েছে। এ ঘটনায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির জনৈক প্রবীণ নেতা জানান,এটা জগণ্যতম অপরাধ। যেখানে আওয়ামীলীগের শাসনামলে ফারুক আওয়ামীলীগের পদের জন্য দৌড়ঝাপ করেছেন। তাদের সভা সমাবেশে বড় বড় মিছিল নিয়ে গিয়েছেন। আওয়ামীলীগ নেতাদের ছবি দিয়ে ব্যানার ফেস্টুন ছাপিয়ে খুঁটিতে খুঁটিতে সাঁটিয়েছেন এখন আওয়ামীলীগের সেই দোসর যদি বিএনপির জার্সি পড়ে রাজপথ চষে বেড়ায় তাহলে এমন বিএনপি না করাই ভাল। এদের কারণে এখন আর রাজনীতি করতে মন চায়না। অপারপর যুবদল নেতা একই শর্তে জানান,এটা কি করে সম্ভব। যেখানে ফারুক একজন চিহ্নিত আওয়ামীলীগ নেতা। আবার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একাধিক মামলাও রয়েছে সেখানে তার আয়োজনে বিএনপি নেতা এবং বন্দর থানার ওসি যায় কি করে। ইদানীং নাকি সে আবার বিএনপির সভা-সমাবেশে মিছিলও নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ তারিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সোনারগাঁয়ে ঠেকানো যাচ্ছে না
বেপরোয়া মকবুল বাহিনীকে
স্টাফ রিপোর্টার:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে জামপুর ইউনিয়নে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সন্ত্রাসী মকবুল বাহিনী। ৫ আগষ্ট পট পরিবর্তনের পর পরই মকবুল ভূইয়া তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের নিয়ে ইউনিয়নের উপজেলার বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে গিয়ে নিজেদেরকে বিএনপির প্রভাবশালী নেতা দাবী করে ব্যাপক চাঁদাবাজী করে বেড়াচ্ছে। সম্প্রতি জামপুর ইউনিয়নের কাহেনা এশিয়ান হাইওয়ের বালিয়াপাড়া গ্রামে নির্মাণাধীন আফরোজা টিস্যু এন্ড পেপার মিলের কাজে বাধা দিয়ে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করার অভিযোগও উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। মকবুল ভূইয়া পাকুন্দা গ্রামের আবুল কাশেম ভূঁইয়ার ছেলে। এ ব্যাপারে মিলের জনৈক শ্রমিক নবির হোসেন,নাজমুল, মনির জানান, আমরা এই পেপার মিলের নির্মাণ শ্রমিক বাউন্ডারির কাজ করছি। কাজ চলাকালীন সময়ে মকবুলের নেতৃত্বে প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন সন্ত্রাসী এসে অতর্কিতভাবে আমাদেরকে কাঠ, লোহার রড দিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করে এবং নির্মাণ সামগ্রী ইটের খোয়া, রড, পাইপ ফেলে দেন মকবুল ও তার সহযোগীরাা। এ বিষয়ে বেঙ্গল টিস্যুর ষ্টোর অফিসার শফিকুল ইসলাম জানান, আমরা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খ সার্কেলকে বিষয়টি অবগত করেছি তারা তদন্ত সাপেক্ষে পদক্ষেপ নিবে বলে জানিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেয়ার প্রাথমিক কাজ ইতোমধ্যে আমরা করেছি।
সোনারগাঁওয়ে ঝালমুড়ি বিক্রেতা লাট
মিয়ার ৬০ বছরের সফলতার গল্প
স্টাফ রিপোর্টার:
নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার মোগরাপাড়া ইউপির ভাটিপাড়া এলাকার লাট মিয়া(৭৫) নামে ঝালমুড়ি বিক্রির সফলতা অর্জন করেছে। রোববার সকাল ১০ টায় পাঁচ পীরের দরগাহ প্রাইমারি স্কুলের সামনে ঝালমুড়ি বিক্রেতা লাট মিয়া শিশু বাচ্চাদের নিকট ঝালমুড়ি বিক্রি করলে তিনি আবেগময় কন্ঠে আইয়ুব খানের আমল থেকে গ্রাম গঞ্জের অলিগলিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পায়ে হেঁটে হেঁটে ৬০ বছরের ঝালমুড়ি বিক্রির জীবনে প্রতিদিন ৭/৮ শত টাকা আয়ের সফলতায় স্বাবলম্বী হয়েছে লাটমিয়ার পরিবার।
উপজেলার মোগরাপাড়া ইউপির ভাটিপাড়া গ্রামের মৃত প্রবালীর ছেলে মোঃ লাট মিয়া গতকাল রোববার সকাল ১০ টার দিকে পাঁচপীরের দরগাহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে দৈনিক বিজয়ের সাক্ষাৎকারে বলেন, আমি গরিব ঘরের গরিব বাবার সন্তান। শৈশব কাল থেকে পরিবারের অভাব অনটনের মধ্যে আমার জীবন চলে। সেই ১৯৬২ সালের আইয়ুব খানের আমলে সামান্য পুজিতে আমি গ্রামগঞ্জের বাজার-ঘাটে অলি- গলিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জীবিকা নির্বাহ করার জন্য ঝালমুড়ি বিক্রির ব্যবসা করে করে সংসারের হাল ধরি। প্রাপ্তবয়স হওয়ার পর আমি সাংসারিক জীবনে আসি। যুগ যুগ ধরে ঝালমুড়ি ব্যবসার জীবনে আমার একপুত্র ৫ কন্যা সন্তানকে যতটুক পেরেছি মসজিদের মক্তবে, স্কুলে লেখাপড়া করাইয়াছি। প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আলহামদুলিল্লাহ আমার ঝালমুড়ি বিক্রির আয় দিয়ে সংসার চালিয়ে ৫ কন্যাকে বিয়ে দেই। বর্তমানে আমার ছেলেটা ছোট্ট একটা চাকরি করেন। তিনি আরো বলেন,আমার মাত্র ২ থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যে অল্প পুজিতে ঝাল মুড়ি বিক্রিতে আমি এখন স্বাবলম্বী। আমার জীবন শুরু থেকে ৬০ বছর কালের আজ অব্দি ঝালমুড়ি ব্যবসাটাকে আঁকড়ে রেখেছি। তবে আগের তুলনায় ঝালমুড়ি বেচাকিনি একটু কম হলেও দৈনন্দিন জীবনে মোটামুটি ৭ থেকে ৮ শত টাকা রোজগার করতে পারি এতে আমার সংসার চলে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *