এস আলমকে লেলিয়ে দিয়ে ইসলামী ব্যাংককে ধ্বংস করেছে: শফিকুর রহমান
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেস্ক:
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, সবচেয়ে শক্তিশালী ও দেশের আপামর জনগণের ব্যাংক ছিল ইসলামী ব্যাংক। এস আলমকে লেলিয়ে দিয়ে ভাগ-বাটোয়ারা করে সেই ব্যাংকটাকে শেষ করে দিয়েছে। আমরা শুনেছি, এই ব্যাংকের টাকা চুরি করেছে শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, একই পরিবার। এখন এই চুরির দায়ে তাঁরা লন্ডনেও ধরা খেয়েছে। শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে সেখানে সংসদ সদস্য এবং ভাগ্যক্রমে তিনি হয়েছেন মন্ত্রীও। এখন সেখানকার দুর্নীতি দমন কমিশন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এটা বাংলাদেশ এবং জাতির জন্য লজ্জার। আমাদের লজ্জা হলে কী হবে? ওদের কোনো লজ্জা নেই। শনিবার কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে জেলা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে জামায়াতের আমির বলেন, বাংলাদেশ ছিল তাদের ইনকাম সোর্সের জায়গা। আর তাদের কলিজা ছিল বিশ্বের অন্য জায়গায়। এদেশের লুটপাটের টাকায় বেগমপাড়া গড়ে তুলেছিলো। মেগা উন্নয়নের কথা বলে প্রকল্প থেকে মেগা ডাকাতি করেছে তারা। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর পিয়নের একাউন্টে ছিল সাড়ে চারশ’ কোটি টাকা। পিয়নের এতো টাকা হলে মালিকের কত টাকা? মালিকের টাকাও বের হয়ে আসছে।
রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র থেকে মালিকের পরিবার ৫৭ হাজার কোটি টাকা চুরি করেছে। তাদের সাড়ে ১৫ বছরে লুটপাটের পরিমাণ প্রায় ২৬ লক্ষ কোটি টাকা, যা বাংলাদেশের বার্ষিক বাজেটের প্রায় পাঁচগুণ। শুধু বিদেশে পাচার করেছেন তা নয়, দেশে যেখানেই তাদের হাঁড়িতে হাত ঢুকেছে সেখানেই টাকার খনি। শফিকুর রহমান বলেন, যাঁরা স্বাধীনতার লগ্নে জাতিকে ওয়াদা করেছিলেন, সব অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার। তাঁরা কেউ অধিকার ফিরিয়ে দেননি। তাঁরা কথা রাখেননি। তাঁরা দফায় দফায় জাতির সঙ্গে বেঈমানি করেছেন। জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। এ দেশ আমাদের সব ধর্মের সব বর্ণের মানুষের। আমরা যুগ যুগ ধরে এই দেশে শান্তিপূর্ণভাবে পাশাপাশি বসবাস করে আসছি। পূর্বে আমরা দুই দুবার স্বাধীন হয়েছিলাম, ৪৭-এ, ৭১-এ।
ছাত্রদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, অনেক ত্যাগ তিতিক্ষার বিনিময়ে স্বৈরাচার উৎখাত হয়েছে, কিন্তু এখনো ষড়যন্ত্র চলছে, আরো লড়াই করতে হবে। সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গড়ে তুলতে হবে। ছাত্র সমাজকে কথা দিয়ে বলেন, এমন শিক্ষা ব্যবস্থা তোমাদের হাতে তুলে দেয়া হবে যাতে করে কাগজের টুকরা নিয়ে এই দুয়ারে ওই দুয়ারে দৌড়াদৌড়ি করতে না হয়। শিক্ষার পাঠ চুকিয়ে আসার সাথে সাথে তোমাদের ন্যায্য পাওনা চাকরি তোমাদের হাতে উঠে যাবে। প্রত্যেকটি যুবক-যুবতীর হাতকে আমরা দেশ গড়ার কারিগর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এমন একটা জাতি যখন গড়ে উঠবে তখন এদেশের মানুষ আর বিদেশে চাকরির জন্য যাবে না। নারীদের পোশাকের বিষয়ে শফিকুর রহমান বলেন, বোরকা কালো হবে, না লাল হবে, সাদা হবে, না বেগুনি হবে, এটা আমার দায়িত্ব নয়। বোরকা কাউকেই জোর করে পরানো হবে না। যে মা মনের সন্তুষ্টির সঙ্গে বোরকা পরতে চাইবেন, পর্দা করতে চাইবেন, তিনি করবেন। আমি অন্যান্য ধর্মাবলম্বী মায়েদের কীভাবে বোরকা পরাব। ইসলাম কী আমাকে এই দায়িত্ব দিয়েছে, না অধিকার দিয়েছে? কোনোটাই নয়। তাঁরা যা পছন্দ করেন, সেই রকম তাঁরা চলবেন। এসময় কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক মাওলানা আবুল হাশেমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হোসেন, শামিম সাঈদী। এই কর্মী সম্মেলনে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষের ঢল নামে। সম্মেলন প্রাঙ্গণ ও আশপাশে হাজারো মানুষের সমাগম ঘটে।