জাহাজে খুন নড়াইলের সালাউদ্দিন ও আমিনুল, উপার্জনক্ষমকে হারিয়ে দিশেহারা দুই পরিবার
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেস্ক:
জাহাজে হতাহতের ঘটনায় নিহত সালাউদ্দিন শেখের স্বজনদের আহাজারি।
চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার মেঘনা নদীতে এমভি আল-বাখেরা সারবাহী জাহাজে হতাহতে নিহত সাতজনের মধ্যে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দুজন রয়েছেন। নিহতের গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিদের হারিয়ে দিশেহারা সদস্যরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লাহুড়িয়া ইউনিয়নের এগারোনলি গ্রামের মৃত আবেদ শেখের ছেলে সালাউদ্দিন শেখ (৪০) দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর জাহাজে চাকরি করেন। দীর্ঘ চাকরি জীবনে তিনি জাহাজের মাস্টার ছিলেন। অভাবের সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি।
সংসারে মা, স্ত্রী, এক সন্তান ও দুই মেয়ে রয়েছে তাঁর। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দিশেহারা সালাউদ্দিনের পরিবার। গত ১৪ ডিসেম্বর বাড়ি থেকে কাজে যান তিনি।
সালাউদ্দিন শেখের মামা মো. কমারুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করে আজকের পত্রিকাকে জানান, রাত সাড়ে ৯টার দিকে লাশ বাড়িতে এসে পৌঁছেছে।
গতকাল সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে চাঁদপুরের হাইমচরের মেঘনা নদীতে আল বাখেরা জাহাজ থেকে পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় গুরুতর আহত তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে আহত অবস্থায় দুজনের মৃত্যু হয়। একজন ঢাকায় চিকিৎসাধীন।
এদিকে, একই জাহাজে হত্যাকাণ্ডের শিকার আমিনুল মুন্সীর (৪১) বাড়িও নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার উত্তর লংকারচর গ্রামে। আমিনুল মুন্সী ওই গ্রামের মৃত নান্না মুন্সীর ছেলে।
চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন তিনি। স্ত্রী নাদিরা বেগমসহ দুই ছেলে ও এক মেয়ের রয়েছে তার। সংসারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হিসেবে প্রায় ১২ বছর ধরে জাহাজে সুকানি হিসেবে কাজ করতেন তিনি।
নিহত আমিনুল মুন্সীর বড় ভাই হুমায়ুন মুন্সী জানান, গত শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) ছোট ভাই আমিনুল লোহাগড়া উপজেলার গ্রামের বাড়ি থেকে কাজে যান তিনি। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত যাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. রানা কাজী বলেন, ‘তিনদিন আগে বাড়ি থেকে কর্মস্থলে যাওয়ার সময় ভাবতেও পারিনি লাশ হয়ে বাড়িতে ফিরবে আমিনুল। তার মৃত্যুতে গোটা পরিবার ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।’