মির্জাপুরে বাঁশের বেড়া দিয়ে সরকারি রাস্তা বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ

টাংগাইল জেলা প্রতিনিধি: রাহিদ রানা
টাংগাইলের মির্জাপুরের গোড়াই সৈয়দপুর এলাকায় সরকারি রাস্তায় বাঁশের বেড়া দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে।
‎ছাত্রলীগ ওই নেতার নাম জিহক খান রুদ্র।সে আজগানা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও সৈয়দপুর গ্রামের মৃত আজম খানের ছেলে।গত মঙ্গলবার রাতের আঁধারে সৈয়দপুর গ্রামের সহস্রাধিক জনসাধারণের চলাচলের একমাত্র এ রাস্তাটিতে বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেন।
এতে ভোগান্তিতে পড়েন স্হানীয় জনসাধারণ।স্থানীয়রা জানায়,সরকারি এ রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন প্রায় হাজারো মানুষের চলাফেরা।এ রাস্তাটিতে স্থানীয় এমএসবি ব্রিকস নামের একটি ইটভটার গাড়ীও চলাচল করে।মুলত ইটভাটার গাড়ি চলাচল নিয়েই এ রাস্তাটিতে বাঁশের বেড়া দেন ওই ছাত্রলীগ নেতা।‎স্থানীয়রা আরো জানায়,গত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে ওই রাস্তাটি ব্যবহার করায় এমএসবি ব্রিকসের মালিকের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা নিতেন ছাত্রলীগ নেতা রুদ্র।শেখ হাসিনার পতনের পর সারাদেশের দৃশ্যপট পাল্টে যায়।এবছর ওই ভাটার মালিক টাকা দিতে অস্বীকার করায় রাস্তাটিতে বাঁশের বেড়া দেয়।এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েছে স্হানীয় জনসাধারণ।তারা আরো জানান,সরকারি জমি দখল করে দোকানপাট নির্মান করেন এবং সৈয়দপুর আইডিয়াল স্কুলটিও সরকারি জমিতে গড়ে উঠেছে।‎স্থানীয় বাসিন্দা মেহের আলী, আব্বাছ আলী আব্দুল আলীম ও আনোয়ার হোসেনসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন,রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়ায় তাদের বাসাবাড়িতে কাজের জন্য ইট বালু ও সিমেন্ট নিতে আনতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।‎নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানায়, ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জিহক খান রুদ্র সরকারি খাস খতিয়ানভূক্ত জমিটি দলীয় প্রভাব খাটিয়ে কয়েকটি দোকানপাট গড়ে তোলেন।যথারীতি ভাড়াও তোলেন তিনি এবং রাস্তা ব্যবহার করায় প্রতিবছর ইটভাটার মালিক নুর মোহাম্মদ এর নিকট থেকে মোটা অংকের টাকাও নিতেন তিনি।আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হওয়ায় রাস্তাটি ব্যবহারের টাকা নিতে পারছে না।এজন্য রাতের আঁধারে একটি দোকানঘর নিজেই ভেঙে ইটভাটার মালিক নুর মোহাম্মদ ও তার ছেলে মোশারফকে দোষারোপ করে মামলা দেয়ার পায়তারা করছেন ওই ছাত্রলীগ নেতা। ইটভাটার মালিক নুর মোহাম্মদ জানান, দলীয় প্রভাবে রুদ্র রাস্তা ব্যবহার করার জন্য আমার নিকট থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়েছে।সরকার এবছর জায়গাটি খাস খতিয়ানের সাইবোর্ড টাঙিয়েছে।এ কারণে টাকা দিতে অস্বীকার করায় রাতের আধারে মনির খান,নাজমুল,লেবু খান,মোসলেম উদ্দিন ও নয়ন খানদের নিয়ে রুদ্র নিজের দোকান নিজেই ভেঙে আমার উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে।এর প্রতিবাদে এলাবাসীদের নিয়ে ২২ ডিসেম্বর রোববার সকালে একটি মানবন্ধন করি।‎অভিযুক্ত জিহক খান রুদ্র মুঠোফোনে বলেন, আমরা ২০০৯ সালে ৬৪ শতাংশ জমির ক্রয় করি। সম্প্রতি ২৪ শতাংশ জমি সরকারের নামে রেকর্ড হয়। আমরা ওই রেকর্ড সংশোধনের জন্য মামলা করেছি।সম্প্রতি মির্জাপুর আমলী আদালতে ১৪৪ ধারা মামলা করি।আদালত উভয় পক্ষকে স্থিতিশীল থাকার আদেশ দেন।সেই আদেশকে উপেক্ষা করে ইটভাটার মালিক নুর মোহাম্মদ ভেকু দিয়ে কয়েকটি দোকান ভেঙে ফেলেছে।এবিষয়ে টাংগাইল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছি।‎এবিষয়ে মির্জাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি)ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি জানি।ওই রাস্তাটির বাঁশের বেড়া তোলার জন্য স্থানীয় নায়েব আমিনুর রহমানকে পাঠিয়েছিলেন।বাঁশের বেড়া খুলে না দিলে আদালতকে তিনি অবহিত করবেন বলেও তিনি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *