ইসলামপুরে স্বাস্থ্য বিভাগের তদারকিতে ভুয়া ডাক্তারের অবৈধ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র বন্ধ হলো

ওসমান হারুনী,জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরের ইসলামপুরে স্বাস্থ্য বিভাগের তদারকিতে ভুয়া
ডাক্তারের মা ও শিশু মেডিকেল সার্ভিসেস নামে একটি অবৈধ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, কোন প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র খোলতে হলে শর্ত হচ্ছে-বেসরকারী ক্লিনিক/হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের লাইসেন্সের কপি উক্ত প্রতিষ্ঠানের মূল প্রবেশ পথের সামনে দৃশ্যমান স্থানে অবশ্যই স্থায়ীভাবে প্রদর্শন করতে হবে।
সকল বেসরকারী স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে উক্ত প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় তথ্যাদি সংরক্ষণ ও সরবরাহের জন্য একজন নির্ধারিত দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা/কর্মচারী থাকতে হবে এবং তার ছবি ও মোবাইল নম্বর দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন করতে হবে। যে সকল প্রতিষ্ঠানের নাম ডায়াগনস্টিক ও হাসপাতাল হিসেবে আছে, কিন্তু শুধু ডায়াগনষ্টিক অথবা হাসপাতালের লাইসেন্স রয়েছে, তারা লাইসেন্স প্রাপ্ত ব্যতিরেকে কোনেভাবেই নামের বাইরে কোনো ধরনের সেবা প্রদান করতে পারবে না। ডায়াগনষ্টিক সেন্টার/প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরীর ক্ষেত্রে যে ক্যাটারগরীতে লাইসেন্স প্রাপ্ত শুধুমাত্র সে ক্যাটারগীতে নির্ধারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ব্যতীত কোনভাবেই অন্যান্য পরীক্ষা—নিরীক্ষা করা যাবে না এবং ক্যাটারগরী অনুযায়ী প্যাথলজি/মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমিস্ট্রি ও রেডিওলজি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করতে হবে। বেসরকারী ক্লিনিক/হাসপাতালের ক্ষেত্রে লাইসেন্স এর প্রকারভেদ ও শয্যা সংখ্যা অনুযায়ী সকল শর্তাবলী বাধ্যতামূলকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। হাসপাতাল/ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে নিযোজিত সকল চিকিৎসকের পেশাগত ডিগ্রীর সনদসমূহ, বিএমডিসির হালনাগাদ নিবন্ধন ও নিয়োগপত্রের কপি অবশ্যই সংরক্ষণ করতে হবে। হাসপাতাল/ক্লিনিক এর ক্ষেত্রে যে কোনো ধরনের অপারেশন/সার্জারী/প্রসিডিউর এর জন্য অবশ্যই রেজিষ্ট্রার্ড চিকিৎসককে সার্জনের সহকারী হিসেবে রাখতে হবে। কোন অবস্থাতেই লাইসেন্স প্রাপ্ত/নিবন্ধিত হাসপাতাল ও ক্লিনিক ব্যতীত চেম্বারে অথবা ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে এ্যানেসথেশিয়া প্রদান করা যাবে না। বিএমডিসি স্বীকৃত বিশেষজ্ঞ অবেদনবিদ ছাড়া যে কোনো ধরনের অপারেশন/সার্জারী/ইন্টারভেনশনাল প্রসিডিওর করা যাবে না।
সকল বেসরকারী নিবন্ধিত/লাইসেন্স প্রাপ্ত হাসপাতাল/ক্লিনিকে লেবার রুম প্রটোকল অবশ্যই মেনে চলতে হবে। নিবন্ধিত/লাইসেন্স প্রাপ্ত হাসপাতাল/ক্লিনিকে অপারেশন থিয়েটারে অবশ্যই অপারেশন থিয়েটারের সকল নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে।
কিন্তু এসব শর্ত নিয়ম নীতির কোন তোয়াক্কা না করে
ইসলামপুর পৌর এলাকার গেরস্তান মোড়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমতি না নিয়েই
টিনসেট ঘর ভাড়া নিয়ে অবৈধ ভাবে মা ও শিশু মেডিকেল সার্ভিসেস সেন্টার খোলে আবুল কালাম নামে এক ভুয়া ডাক্তার রোগী দেখা ও বিভিন্ন পরীক্ষা নিরিক্ষার নামে নিরীহ রোগীদের সাথে প্রতারণা করে আসছিল। মেডিকেল অফিসার না হয়েও নিজের নামের আগে ডাক্তার লিখে নিজেই রুগী দেখে , আলতা করেন আবার রোগীর মূলমুত্র পরীক্ষা কাজও করে আসছিল সে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভুয়া ডাক্তার কামাল হোসেনের বাড়ী কুমিল্লা জেলার দাউদ কান্দি গ্রামে।
প্রতারিত পলবান্ধা সিরাজাবাদ গ্রামের ভুক্তভোগী ইসমাইল হোসেন জানান,ওই ভুয়া ডাক্তার এলাকার গিয়ে নিজেকে সর্বরোগের বড় ডাক্তার পরিচয় দিয়ে মেডিকেল সার্ভিডেস সেন্টারে ডেকে নিয়ে এসে কোন প্রেসক্রিপশন করা ছাড়াই তার আলতা, ইসিজি, রক্ত ও মলমূত্রের পরীক্ষা করে ২৩শত টাকা বিল নেয়। পরবর্তীতে রিপোর্ট নিতে এসে জানতে পারে সে ভুয়া ডাক্তার। পরে প্রশাসনের নিকট তিনি মিডিয়ার মাধ্যমে এসব ভুয়া ডাক্তার ও স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় প্রয়োজনীয় ব্যাবস্হা নেওয়ার দাবী জানান। এই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা ডা.এএএম আবু তাহের মঙ্গলবার দুপুরে অবৈধ স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রটি পরিদর্শন করে কোন অনুমোদনের কাগজ ও ভুয়া ডাক্তার কে না পেয়ে মা ও শিশু মেডিক্যাল সার্ভিসে সেন্টারটি বন্ধ করে দেন।

এব্যাপারে ইসলাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.এএএম আবু তাহের জানান,যেহেতু অভিযুক্ত ডাক্তার ডাক্তার প্রকৃত ডাক্তার হয়ে থাকলে সে পরিদর্শন সময় উপস্থিত থাকতো। তাকে পেলাম না। আর এই স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রটির অনুমোদনের কোন কাগজ নেই তাই অনুমোদন না হওয়া পর্যন্ত কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *