তিন ইসিকে বিচারের সুপারিশ
অনলাইন ডেস্ক: ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে পাতানো নির্বাচন করে তিন নির্বাচন কমিশন শপথ ভঙ্গ এবং সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন বলে মত দিয়েছে বিশিষ্ট নাগরিক ও শিক্ষক সমাজ। এজন্য তারা তিন কমিশনের সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারদের বিচারের আওতায় আনার সুপারিশ করেছেন। রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে নাগরিক সমাজ ও শিক্ষক প্রতিনিধিদের বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়। বৈঠক শেষে সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আগের তিন নির্বাচন কমিশন পাতানো নির্বাচন করেছেন। এর মাধ্যমে তারা শপথ ভঙ্গ করেছেন, সংবিধান ভঙ্গ করেছেন। তাই তাদের বিচারের আওতায় আনার কথা বলেছেন সবাই। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের বিষয়ে তারা একমত হয়েছেন। নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন ও শক্তিশালী বিশেষ করে আর্থিক স্বাধীনতা দেওয়ার কথা বলেছেন তারা।
বদিউল আলম বলেন, নাগরিক সমাজের যারা এসেছেন তারা সবাই ‘না’ ভোটের বিধান চালু করা কথা বলেছেন। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্য না বলেও মন্তব্য করেছেন। বৈঠকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়েও আলোচনা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির পদকে শক্তিশালী করার কথা বলেছেন।
বৈঠকে অংশ নেওয়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, আমাদের একটি কনসার্ন হচ্ছে ঠিকঠাক মতো নির্বাচন হয় কিনা? ২০০৮ সালের পর থেকে ঠিকমতো নির্বাচন হচ্ছে না। নির্বাচন যাতে ঠিকমতো হয়, জনগণের মতের প্রতিফলন হয়-সেটি তো আমাদের একটি উদ্বেগে বিষয়। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যে মনোনয়ন বাণিজ্য করে। সেটা কিভাবে বন্ধ করা যায়, দলগুলোর মধ্যে যাতে গণতন্ত্রায়ন হয় সেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনে ‘না’ ভোট পুনঃপ্রবর্তনসহ তিন প্রস্তাব দিয়েছেন নিরাপদ সড়ক চাইর চেয়ারম্যান ও অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, প্রার্থীদের মধ্যে কাউকে পছন্দ না হলে যেন ‘না’ ভোট দেওয়া যায়। নির্বাচনি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে। এজন্য নির্বাচন কমিশনের মধ্যে একটা বিচারের ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে। এই অভিনেতা আরও বলেন, বিগত সরকারের সময় নির্বাচন কমিশন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনসহ (ইভিএম) নানা কিছু কিনে অনেক টাকা তছরুপ করেছে। স্বচ্ছতা কীভাবে নির্বাচন কমিশনে আনা যায়, সে ব্যবস্থা করেন। তা না হলে জনগণের আস্থা ফেরত আসবে না।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আল মাসুদ হাসানুজ্জামান বলেন, সভায় আনুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন মত এসেছে। কেউ কেউ বলেছেন, এটা মিশ্র পদ্ধতিতে আসা উচিত। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনি এলাকা নির্ধারণ করা, স্বচ্ছভাবে দলীয় অর্থায়ন করা, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব অংশীজনের সক্রিয় সংশ্লিষ্টতা থাকার কথা আলোচনা হয়েছে। এছাড়া সভায় নির্বাচনে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার এবং ‘না’ ভোটের প্রসঙ্গ এসেছে।