নালিতাবাড়ীতে পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারী
মোঃ আরিফুর রহমান : নালিতাবাড়ী উপজেলায় সীমান্তবর্তী খরস্ত্রোতা ভোগাই এবং চেল্লাখালী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় বেশ কয়েকদিন ধরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মাসুদ রানা এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: আনিসুর রহমান।
অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীরা তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করার প্রতিবাদে উপজেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে ২৭ অক্টোবর ২৪ ইং তারিখে শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলা পরিষদের সামনে এক বিক্ষোব মিছিল ও মানব বন্ধনে মত কর্মসূচি ঘোষণা করে।
স্হানীয় প্রশাসন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, কর্মসূচি পালনের মধ্যদিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন কারীরা উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন অফিসে হামলা, অগ্নিসংযোগের মতো অ-প্রিতীকর ঘটনা ঘটানোর পায়তারা করছে। তাছাড়া বালু উত্তোলন কারীরা নালিতাবাড়ী উপজেলার প্রভাবশালী একটি মহল।
ভোগাই এবং চেল্লখালী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় পাশের বসতবাড়ি, ভিটা, আবাদি জমি নষ্ট করছে। ভূক্ত ভোগীরা এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনকে বার বার এর প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছেন। প্রভাবশালীদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না।
অপরদিকে, গত ৪ আগস্ট শেরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ছাত্র হত্যা মামলার আসামীদের নিয়ে মাসিক উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভা করার প্রতিবাদে ও আসামীদের গ্রেফতারের দাবীতে বিক্ষোভ কর্মসূচী ঘোষণা করে বিএনপি।
যার ফলে শনিবার (২৬ অক্টোবর) রাতে উপজেলা প্রশাসন শান্তি বজায় রাখতে, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের মানববন্ধন ও বি এন পির ডাকা আসামিদের গ্রেফতারে দাবিতে কর্মসূচি, মানব বন্ধনের ফলে বিশৃঙ্খলা/ সহিংসতা আশঙ্কা রয়েছে। এইসব বিষয়ের উপর ভিত্তি করে নালিতাবাড়ী উপজেলা বাসির জান মালের নিরাপত্তার জন্য ২৭ অক্টোবর থেকে উপজেলায় সকল মানববন্ধন, বিক্ষোভ কর্মসূচির, সভা সমাবেশ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে এবং এর উপর ১৪৪ ধারা জারী করা হয়।
১৪৪ ধারার আওতার বাহিরে থাকবে সকল প্রকার যানবাহন। প্রতিদিনের মতোই স্বাভাবিকভাবে চলবে অনান্য কার্যক্রম।
এদিকে সম্প্রতি ৪ আগস্টের হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত অনেকে প্রকাশ্যে এলে বিএনপি নেতৃবৃন্দ আরও ক্ষুব্ধ হন। এমতাবস্থায় শেরপুর জেলা বিএনপি’র সহসভাপতি ও উপজেলা বিএনপি’র সাবেক আহবায়ক নুরুল আমীনের নেতৃত্বাধীন বিএনপি ও অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ রোববার শহরে বিক্ষোভ কর্মসূচী আহবান করেন। এমতাবস্থায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে এমন আশঙ্কায় উপজেলা প্রশাসন রোববার শহরে দিনব্যাপী ১৪৪ ধারা জারি করে। বর্তমানে শহরে সেনা টহল রয়েছে। ১৪৪ ধারা জারির পর বিএনপি নেতৃবৃন্দ বিক্ষোভ কর্মসূচী বাতিল করেছে।
জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি নুরুল আমীন জানান, সমন্বয় সভায় কি করে হত্যা মামলার আসামীরা উপস্থিত থাকেন? কেন এখনো পর্যন্ত ওইসব চেয়ারম্যানকে বরখাস্ত করা হয়নি। এসব দাবীতে আমাদের বিক্ষোভ কর্মসূচী ছিল। ১৪৪ ধারা জারি করায় তা বাতিল করা হয়েছে। এসময় তিনি পুলিশের প্রতি অভিযোগ তুলে আরও বলেন, সম্প্রতি হত্যা মামলার আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারপরও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানান,
অসাধু বালু উত্তোলন ব্যাবসায়ীদের বিরুদ্ধে যে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে তা বন্ধ করতে এই মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেন। এর ফলে নালিতাবাড়ী একটি অশান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে আশঙ্কায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এবং সমন্বয় সভায় যারা উপস্থিত ছিলেন তারা এ কমিটির সদস্য। তারা আদৌ মামলার আসামী কি না বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তারা যদি মামলার আসামী হয়ে থাকেন তবে মামলার কপি প্রাপ্তি সাপেক্ষে আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।