দুর্বৃত্তদের হামলায় লন্ড-ভন্ড সুতিরপার হিজড়া পল্লী

মোঃ আরিফুর রহমান স্টাফ রিপোর্টার: শেরপুর সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের আন্ধারীয়া সুতির পার গ্রামের হিজরা পল্লীতে ৪ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক ১০ ঘটিকায় স্হানীয় প্রভাবশালীদের আক্রমণে লন্ড-ভন্ড হয়ে যায় ৪০ টি ঘরের সবকিছু। লুট করে নেওয়া হয় তাদের তিলে তিলে অর্জিত টাকা-পয়সা, টিভি, ফ্রিজ সহ অনান্য ।
শেরপুর সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের আন্ধারীয়া সুতির পার গ্রামে ২০২১সাল থেকে শেরপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলা/গ্রাম থেকে ৪০ জন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষকে স্হায়ী ভাবে আশ্রয় প্রদান করা হয়।
তৃতীয় লিঙ্গের অধিকারীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শেরপুর জেলার সম্মানিত জেলা প্রশাসক জনাব “আনারকলি মাহমুদ” জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৪০ জন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষকে সুতির পার গ্রামে” সাব কবলা” দলিল মূলে স্হায়ী ভাবে বসবাসের ব্যবস্হা করে দেন। তার পর থেকে তারা এ্যালোপাথারী ভাবে না থেকে সেখানেই জীবন যাপন করে আসছে।
ভূক্ত ভোগী একজন বলেন, ঘটনার দিন ও সময়ে গ্রামের প্রভাবশালী কয়েকজনের নেতৃত্বে প্রায় এক-দেড়শ মানুষ অতর্কিত দেশীয় অশ্র-সশ্র নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায় এবং ভাংচুর শুরু করে, আমরা প্রাণের ভয়ে সেখান থেকে যে যেভাবে পেরেছি সেভাবেই সেখান থেকে পালিয়ে আসতে বাধ্য হই। হামলা কারীরা প্রায় ১ দের ঘন্টা সেখানে লুটপাট,ভাংচুর এমনকি ইলেকট্রিক সংযোগ গুলোও ভেঙ্গে চুড়ে তছনছ করে দেয়।

শেরপুর জেলার” হিজড়া কল্যান সংস্থার” সভাপতি “নিশি সরকার ” এক সাক্ষাৎকারে এ্যাহেন ঘৃণ্য বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা দাবি জানান।
সভাপতি বলেন ১/কালাম ৫০, পিতা মুফাজ্জল হোসেন, ২/হাসান ৪০, পিতা মোহাম্মদ ডাক্তার,৩/ নয়ন ২০, পিতা হাসান, ৪/ফরিদুল ৩০, পিতা মকছেদ আালী এই চার জনের নেতৃত্বে গ্রামের প্রায় এক-দেড়শত মানুষ আমাদের উপর হামলা চালায় এবং ভাংচুর শুরু করে, লুট করে নিয়ে যায় ঘরে থাকা টাকা পয়সা, টিভি,ফ্রিজ ও অনান্য সবকিছু।
স্হানীয় জনগণের সুত্রে জানা যায়, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরা আমাদের এলাকায় আসার পর তারা কোন ক্ষতি করেনা, বরং সামাজিক বিভিন্ন কাজে যেমন অসুস্থ গরীব রোগীদেরকে,গরীব মানুষের বিয়ে, এমনকি মসজিদ মাদ্রাসা সহ নানা কাজে তারা সহযোগিতা করে থাকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানান তার এই পল্লীতে নানা ধরনে অসামাজিক কার্যকলাপের সাথে জড়িত রয়েছে।

স্হানীয় বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, যে জায়গায় তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদেরকে পূর্ণবাসন করা হয়েছে, সেই জায়গাটি হামলা কারীরা ভুগ দখল করে আসছিলো। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদেরকে পূর্ণবাসনের ফলে হামলাকারীরা তাঁদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং বিভিন্ন সময় হিজরাদের উপর নানা অপপ্রচার থেকে শুরু করে হুমকি দেবার মতো ঘটনাও ঘটে আসছে। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর তারা আরও আক্রমণাত্বক হয়ে উঠে এবং ৪সেপ্টেম্বর রাতে এই নেক্কার জনক ঘটনা ঘটে।

শেরপুর জেলার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক জনাব মনিরুল হাসান বলেন হিজরাদের নিরাপত্তার জন্য আমরা সব ধরনের ব্যবস্হা নিয়েছে, ইতি মধ্যেই কর্মরত সেনাবাহিনী ও পুলিশ বিভাগের সংঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছি। তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে সর্বোচ্চ ব্যবষ্হা নিয়েছি।
৪সেপ্টেম্বরের বিষয়টি আরও তদন্তের জন্য সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাকে সেখানে পাঠানো হয়েছে। তদন্তে যারা দোষী সাব্যস্ত হবেন তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আমরা কঠিন পদক্ষেপে যাবো। সরকার তাদের পুনর্বাসন করেছে, এখন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করবো।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *