আদমদীঘিতে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে ক্লাস বর্জন বিক্ষোভ
আদমদীঘি প্রতিনিধি : বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসহাক আলী প্রাং এর বিরুদ্ধে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারির নিয়োগে ঘুষ বানিজ্যেসহ অর্ধকোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পদত্যাগ আর সেই সাথে সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফার পদত্যাগের দাবিতে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় স্কুলের সামনে সড়কে অবস্থান নিয়ে ১২ টা পযর্ন্ত দুই ঘন্টা ব্যাপী সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
আন্দোলনকারী সম্রাট, রাহিত, সুচনা, শিফা, জয়, তানজিলা, সুমিতাসহ একাধিক শিক্ষার্থীর অভিযোগ করে বলেন, প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ছাত্র বৈষম্য আন্দোলনে যেতে শিক্ষার্থীদের বাঁধা দেয়াসহ সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফা, শিক্ষক ও কর্মচারি পদে নিয়োগ বানিজ্য, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি করে কমপক্ষে অর্ধকোটি টাকা আত্মসাত করেছে। স্কুলের নিয়োগের প্রতিটি পদে মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহণ করেছে। এছাড়া স্কুলে শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ, নিয়মিত ক্লাস করা, শিক্ষার্থীদের উপর কোন জুলুম না করা, স্কুলে কোন প্রকার কোচিং না করা ও স্কুলে দক্ষ ইংরেজী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়াসহ বিভিন্ন দাবী করেন।
ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা গোলাম মোস্তফা বলেন, প্রধান শিক্ষক এসহাক আলী দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই একের পর এক অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও নিয়োগ বাণিজ্যসহ অস্থির প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করেছেন। যোগ্যতা, দক্ষতা যাচাই না করে নিকটাত্মীয়কে টাকার বিনিময়ে স্কুলে চাকরি দেয়। ওই স্কুলের ১০ম শ্রেনীর ছাত্রী তানজিলা আখতার জানান, আমাদের বড় ভাই- বোনেরা সার্টিফিকেট নিতে গেলে তাদের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা করে আদায় করতো। সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফা স্যার স্কুলে কোচিং চালায় এবং তার কাছে কোচিং না করলে পরীক্ষায় ফেল করে দেওয়ার হুমকি দেয়। নুর এ জান্নাত তুলি নামে আরেক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে জানান, প্রধান শিক্ষক এসহাক আলী স্যার শিক্ষক-কর্মচারির নিয়োগ বানিজ্য করে প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাত করেছে। স্কুলে কোন উন্নয়ন না করে তিনি নিজের উন্নয়ন করেছে।
প্রধান শিক্ষক এসহাক আলী প্রাং কাছে জানতে চাইনে তিনি বলেন, কোন টাকায় আমি নেয়নি। আমি শুধু কাগজপত্র ঠিক করে দিয়েছি। আর স্কুলের সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হক আবুসহ পরিচালনা কমিটির সদস্যরা সব নিয়োগ প্রক্রিয়া ঠিক করেছে।
স্কুলের পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হক আবুর সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফা জানান, ওই এলাকার একটি মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে তা আদৌ সত্য না বলেও দাবী করেন তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা ম্যাধমিক একাডেমিক সুপারভাইজার জাহিদুল ইসলাম বলেন, ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ মিছিলের খবর পেয়ে স্কুলে এসে শিক্ষার্থীর সব অভিযোগগুলো শুনে সমাধানের আশ্বাস প্রদান করলে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে যান। শিক্ষার্থীদের হাতে লেখা একটি লিখিত অভিযোগও পেয়েছি। বিয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।