শেরপুরের নকলায় যুদ্ধপরাধী মামলায় তারাসহ সকল কারাবন্দীদের নি:শর্ত মুক্তির দাবীতে মানববন্ধন

জাহাঙ্গীর হোসেন, শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুরের নকলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনা কতৃক রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মিথ্যা মামলায় নকলা পৌরসভার সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা মোখলেছুর রহমান তারাসহ নিরপরাধ কারাবন্দীদের নি:শর্ত মুক্তির দাবীতে মানববন্ধন হয়েছে।

২৫ আগষ্ট রবিবার দুপুরে নকলা পৌরশহরে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের সামনে ঢাকা-শেরপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে ওই মানববন্ধন হয়।

নকলা উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ মানববন্ধনের আয়োজন করে।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক খোরশেদুর রহমান, সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুল হক দুলাল, যুগ্ম আহবায়ক মহিউদ্দিন মুক্তার, বিএনপি নেতা আব্দুল হক তালুকদার চান মিয়া প্রমুখ। মানববন্ধনে বক্তাগণ বলেন মোখলেছুর রহমান তারা মুক্তিযুদ্ধের সময়ে কোন মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিলেননা। তাঁকে রাজনৈতিক কারণে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।

উল্লেখ্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়েরকৃত একটি মামলায় ২১/০৬/২০২৩ ইং তারিখ বেলা আনুমানিক ১১ টা ৩৫ মিনিটের সময় র‌্যাব-১৪ এর একটি আভিযানিক দল ময়মনসিংহের কোতোয়ালী থানাধীন ধোপাখোলা এলাকা থেকে নকলা পৌরসভার সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা মোখলেছুর রহমান তারা, পিতা-মৃত ময়েজ উদ্দিন আহম্মদ, মাতা-মৃত মালেকা খাতুন, মহল্লা- কুর্শাবাদাগৈড় খইড়াপাড়া, ৬ নম্বর ওয়ার্ড, নকলা পৌরসভা, থানা-নকলা, জেলা-শেরপুরকে গ্রেপ্তার করে।

১২/০২/২০২৪ ইং তারিখে বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেরপুরের নকলায় মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই মামলায় তারাসহ ৩ জনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়। অন্যান্য দন্ডপ্রাপ্তরা হলেনন নকলা পৌরসভার বাজারদি মহল্লার এফএম আমিনুজ্জামান ফারুক এবং টালকি ইউনিয়নের বিবিরচর গ্রামের একেএম আকরাম হোসেন। দন্ডপ্রাপ্তরা বর্তমানে কারাগারে বন্দি রয়েছেন।

২০১৭ সালের ২৬ জুলাই মানবতাবিরোধী অপরাধে নকলা উপজেলার ৪ আসামীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কমিটি। একই বছর ৩১ অক্টোবর আসামীদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। পরে ২০১৮ সনের ৩০ আগস্ট ৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে ট্রাইব্যুনাল। এদের মধ্যে বিচার চলাকালীন সময়ে নকলা পৌরসভার কুর্শা মহল্লার ডা. এমদাদুল হক খাজা কারাগারে বন্দি থাকাবস্থায় মারা যান।

মামলায় অভিযোগ আনা হয় এই ৩ আসামী মুসলিম লীগের সদস্য ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তাঁরা রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন এবং মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তাঁরা নকলা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে হত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধ করেন।

১১ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল মামলাটি রায়ের জন্য ১২ ফেব্রুয়ারি সোমবার দিন ধার্য করেন। এর আগে ২৪ জানুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামীপক্ষের আইনজীবিদের মধ্যে যুক্তিতর্ক শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রেখেছিল ট্রাইবুনাল।

মামলাটির প্রসিকিউশন পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন এবং আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুস সোবহান তরফদার ও আবদুস সাত্তার পালোয়ান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *