খুলনার বটিয়াঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক জনাব সাইদুজ্জামান বদলীর আদেশ পেয়ে ৪১ লক্ষ 25 হাজার টাকা নিয়ে আত্মগোপনে।

সেখ মোঃ রাসেল হোসেন : বটিয়াঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক জনাব সাইদুজ্জামান বদলীর আদেশ পেয়ে ৪১ লক্ষ 25 হাজার টাকা নিয়ে আত্মগোপনে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ বাণিজ্য করে আসছিল । নানা অনিয়মের পাল্লা ভারী হয়ে উঠলে তার বিরুদ্ধে উক্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ পরিচালক (প্রশাসন), স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মহাখালী, ঢাকা বরাবর একটি গণ পিটিশন দায়ের করলে তদন্ত স্বাপেক্ষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে অনত্র বদলী করা হয়। পরবর্তীতে সে বিভিন্নভাবে তদবীর করে খুলনা সিভিল সার্জনের নিকট মুছেলিকা/অঙ্গীকার নামা দিয়ে বটিয়াঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পূনরায় যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে লাগামহীনভাবে তিনি তার দূর্নীতির ঘুষ বানিজ্য চালিয়ে যেতে থাকে। সম্প্রতি তিনি তার অনিয়মের অর্থ দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় 3টি নির্মানাধীন বাড়ী করেছে, 1) হোগলাডাঙা, নিজখামার জলমা ইউনিয়ন ,বটিয়াঘাটা উপজেলা 4তলা বাড়ী, 2) সাতক্ষীরা আশাশুনি থানা গদায়পুর ইউনিয়ন ১ তলা পাকা বাড়ি, 3) সাতক্ষীরা শহরে টেক্সটাইল মিল বৌবাজার সংলগ্ন ৩ তলা বিশিষ্ঠ বাড়ি রয়েছে। দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থাকার সুবাধে তিনি অনিয়ম ও ঘুষ বানিজ্যের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যায়। এ বিষয়ে সাইদুজ্জামান কে তার ব্যক্তিগত মোবাইল: 01717 72872 ও ০১৬৭১ ১৫১৯৭৬ নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করলে সংযোগটি বন্ধ পাওয়া যায়।

বটিয়াঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিভিন্ন ফাইলে স্বাক্ষর ও বিল ভাউচার করে একের পর এক অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছিল । গত ২৯ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক তাকে ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করেন। পরের দিন তাকে কর্মস্থল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। উক্ত ছাড়পত্রে তিনি স্বাক্ষরও করেন। একই দিনে অফিস সহকারী কাম হিসেবে মাহমুদকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘ ২১ দিন অতিবাহিত হলেও তিনি তার পূর্ব কর্মস্থলের দায়িত্ব হস্তান্তর না করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার ব্যবহৃত কক্ষে তালা মেরে অর্থ নিয়ে লাপাত্তা হয় । এমনকি বর্তমান কর্মস্থল ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদেননি। বটিয়াঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের যাবতীয় মালামাল ক্রয়ের জন্য হাসপাতালে এম,এস,আর ক্রয়ের 39 লক্ষ টাকা মোট 41 লক্ষ 25 হাজার টাকা’র চেক তার নিকট থাকায় স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এছাড়া জানুয়ারি ও জুন মাসের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সকল আয়ের ২ লাখ ২৫ হাজার টাকার সরকারি কোষাগারে জমা না দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তৃপক্ষ । দপ্তরের যাবতীয় কাগজপত্র তার কক্ষে বন্দী রয়েছে। ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার জেসমিন আরা বলেন দীর্ঘ ২২ দিনেও সাইদুজ্জামান ফুলতলায় যোগদান করেননি। এমনকি কোন কথাও বলেননি।

বটিয়াঘাটা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মিজানুর রহমান বলেন, বিভাগীয়-পরিচালক স্বাস্থ্য গত ২৯ শে জুলাই সাইদুজ্জামানকে বদলি করেন। তিনি এখনো কোন দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছেন । এবং পুনরায় বটিয়াঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদানের জন্য উচ্চ মহলে দৌড় ঝাপ শুরু করেছেন। এ বিষয়ে হাসাপাতালের কর্মকর্তা, কর্মচারী বৃন্দ বলেন, পুনরায় যদি সাইুদজ্জমান বটিয়াঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করনে তাহলে আমরা সকলেই কর্মবিরতী তে যেতে বাধ্য হবো।

খুলনা জেলা সিভিল সার্জন (সিএস) ডাক্তার শফিকুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি বিভাগীয় পরিচালককে জানানো হয়েছে। তার সঙ্গে কথা বলেন। খুলনা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডাঃ মঞ্জুরুল মুর্শিদ বলেন, অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। উল্লেখ্য, বটিয়াঘাটা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ মিজানুর রহমান যোগদানের পরে ওই হিসাব রক্ষক সাইদুজ্জামান বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্র এবং বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে নতুন যোগদান, ছুটি,বদলী, আউটসোর্সিং কর্মচারী,এমনকি অবসরে যাওয়া কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ফাইল আটকিয়ে অর্থ আদায় করার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *