আন্দোলনে গুলি চালিয়ে সরকার ফৌজদারি অপরাধ করেছে
ডেস্ক রিপোর্ট:কোটা সংস্কার আন্দোলনে গুলি চালিয়ে সরকার ফৌজদারি অপরাধ করেছে। এর বিচার হওয়া উচিত বলে মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা। সোমবার (২৮ জুলাই) সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে তারা এ কথা বলেন।
‘আইনজীবী সমাজ’-এর ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ব্যানারে লেখা ছিল, ‘গণহত্যার বিচার চাই, গায়েবি মামলা-গ্রেপ্তার ও নির্যাতন বন্ধ করো’।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী ছাত্রদের ‘দুষ্কৃতকারী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, ‘পাকিস্তান আমল থেকে আজ পর্যন্ত দেখিনি যে একটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক দাবির কারণে এতগুলো ছাত্রকে হত্যা করা হয়। কোন অধিকারে, কোন আইনে ব্লক রেইড দিয়ে তাদের (ছাত্রদের) তুলে নেওয়া হচ্ছে? আমরা এর ধিক্কার জানাই। রক্তের বিনিময়ে অর্জিত সংবিধানকে পদে পদে বরখেলাপ করছে সরকার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে হেফাজতে নেওয়ার সমালোচনা করে পান্না বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দিকনির্দেশনা আছে। সেই দিকনির্দেশনা অমান্য করে ছয়জন সমন্বয়কারীকে আটকে রাখা হয়েছে। বিবৃতি দেওয়ানো হচ্ছে। এর কৈফিয়ত একদিন দিতে হবে।
’কোটা আন্দোলনে নিহতদের নিয়ে শোক জানিয়ে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন বলেন, ‘আমরা জানতে চাই, কোথায়, কার হাতে, কতজন মারা গেছে। এখন হাজারো শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণ গণগ্রেপ্তারের মুখে পড়েছেন। শুনেছি, তাদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না।’
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তোবারক হোসেন বলেন, ‘ছাত্ররা যখন একটি দাবি নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিল, তখন একজন মন্ত্রী একটি ছাত্রসংগঠনকে লেলিয়ে দিলেন। সেখান থেকে গণ্ডগোল ও অরাজকতার সূত্রপাত।
এরপর নির্বিচার গুলি চালায় পুলিশ। এরপর নামানো হলো বিজিবি। পরে সেনাবাহিনী নামিয়ে দেশে কারফিউ জারি করা হলো। এসব অসাংবিধানিক, অন্যায় ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সরকার এসব করে দেশের মানুষের সঙ্গে ফৌজদারি অপরাধ করেছ। এর বিচার হওয়া উচিত।’
মানববন্ধনে আরো বক্তব্য দেন আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। আর লিখিত বক্তব্যে আইনজীবী অনীক আর হক বলেন, আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের নির্যাতন, গুলি করার পাশাপাশি গণগ্রেপ্তারও করা হয়েছে। এসব ঘটনার কারণ উদ্ঘাটন, সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের আবশ্যকতা রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে দেশের শিক্ষক, আইনজীবী, সংস্কৃতিকর্মী ও সাধারণ অভিভাবকদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের কয়েকজন ব্যক্তির সমন্বয়ে জাতীয় গণতদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।