মোটরবাইক ও ইজিবাইকের কারণে সারাদেশে দুর্ঘটনা ঘটছে : ওবায়দুল কাদের
ডেস্ক রিপোর্ট : ইদানিং বেপরোয়া ড্রাইভিং, মোটরবাইক ও ইজিবাইকের কারণে সারাদেশে দুর্ঘটনা ঘটছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক। ইদানিং যে দুর্ঘটনাগুলো ঘটছে, তার মধ্যেমোটরসাইকেল দুর্ঘটনাই বেশি হচ্ছে। দুর্ঘটনার চিত্র দেখলে দেখা যাবে যে, বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালানোর কারণেই সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এরপর আছে ইজিবাইক। তারাও বেপরোয়া গতিতে এটি চালাচ্ছেন। সড়ক থেকে এ বাহনগুলোকে বাদ দেওয়ার উপায় নেই। এজন্য সচিবকে দ্রুত নীতিমালা করার জন্য বলা হয়েছে।’
ওবায়দুল কাদের আজ বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়কালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন।
সারা দেশে সড়ক-মহাসড়কে লাখ লাখ তিন চাকার যান ও মোটর সাইকেলের জন্য শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে- জানিয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, সেজন্য নীতিমালাটা খুব জরুরি। মানুষের জীবন আগে, জীবিকা পরে। এক্ষেত্রে জীবিকাকে রক্ষা করতে গিয়ে জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ভোটের রাজনীতিতে যারা করেন, তাদের এতে সায় আছে। ইজিবাইক হাইওয়েতে চলে, এটিকে অনেকে সমর্থন করেন অথবাপেছন থেকে মদদ দেন। ঢাকায় যে নিয়ম চালু করা হয়েছে, তাতে ৯৮ শতাংশ মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী তাদের দুজনেরই হেলমেট থাকে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সড়কে ঈদযাত্রা অনেকটা ভালো হয়েছে। কিন্তু ফিরতি পথের বিষয়টি এখনও রয়েছে। এদিকে অনেকের নজর কম থাকে, তাই দুর্ঘটনাও ঘটে অনেক সময়। তাই ফিরতি পথটাও এখন দেখতে হবে।
‘সেন্টমার্টিন ইস্যুতে সরকার নতজানু পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করেছে’- বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিরোধীদলের একটা ভাষা আছে সরকারি দলের সিদ্ধান্তকে তারা নতজানু আখ্যায়িত করে। কিন্তু কীভাবে নতজানু, সেটা একটু ব্যাখ্যা করে দিক না।
তিনি বলেন, সেন্টমার্টিনে যে গুলিটা এসেছে, সেটা মিয়ানমার সরকার করেনি। এটা আরকান আর্মি নামে যে বিদ্রোহীরা আছে, তাদের গুলি। যেকোনো উস্কানির মুখে বাংলাদেশ যুদ্ধে না জড়িয়ে আলাপ-আলোচনায় সমাধানে বিশ্বাসী। সেখানে যে জাহাজের কথা বলা হয়, সে জাহাজ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মিয়ানমার উস্কানি দিলে আমরা তাদের সাথে আলাপ-আলোচনা করবো। একটা সমাধান বের করবো। যুদ্ধে জড়াব না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যদি যুদ্ধে জড়াতে চান, তাহলে উস্কানির ফাঁদে আমরা পড়তে পারি? আমরা সরকারে আছি, আমাদের দায়িত্ব আছে, কর্তব্য আছে। সার্বভৌমত্ব চলে গেলে আমাদেরই ব্যথা লাগবে বেশি। কারণ, এ জাতির মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধিকার লড়াইয়ে আমরা ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম তখন (মুক্তিযুদ্ধের সময়) কী করেছেন, কোন সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন- তা জানি না। এসব কথা বলে লাভ নেই। সার্বভৌমত্ব ঠিক আছে। সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘিত হলে, আলাপ-আলোচনার সময় পেরিয়ে যদি যায়, যদি সত্যিই তারা আক্রমণে আসে- তখন কী আমরা বসে থাকব? তখন আমাদেরও পাল্টা জবাব দিতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা এখনও কোনো আক্রমণ দেখিনি। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ৫৪টি গোষ্ঠী আছে। ওদের অভ্যন্তরীণ অনেক সমস্যা। তাদের নৃতাত্ত্বিক বিদ্রোহীরা আছে। তাদের থেকেই এসব ঘটনা ঘটছে। সেটার জন্য কেন মিয়ানমার সরকারকে দায় দেব? যতদিন সম্ভব শেষ পর্যন্ত আমরা আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যেতে চেষ্টা করবো।
‘মূল্যস্ফীতি ব্যাপকভাবে বাড়ার কারণে মানুষ স্বস্তিতে ঈদ করতে পারেনি’- মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি মির্জা ফখরুল সাহেবকে বলব- কোরবানির ঈদে গত বছরের থেকে এ বছর ৩ লাখ গরু বেশি কোরবানি হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় ছোটখাটো যানজট হয়েছে। সেটা বেশি সময়ের জন্য নয়। তারপরও এবারের ঈদ যাত্রা মানুষ মধ্যে উল্লাস কাজ করেছে। অনেকেই ঈদ যাত্রায় সামিল হয়েছেন।
তিনি বলেন, এবার পদ্মা সেতুতে একদিনে টোল আদায় হয়েছে ৫ কোটি টাকা। বঙ্গবন্ধু সেতুতে এক দিনে টোল আদায় হয়েছে ৪ কোটি টাকা। তাহলে অসুবিধা কোথায়? কোনো হিসেবেই তো ফখরুল সাহেবের বক্তব্য মিলছে না। বাস্তবে যা- তার সাথে ফখরুলের বক্তব্য মিলছে না। এটা বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা, সমালোচনার জন্য সমালোচনা।