দুধ দিয়ে গোসল করে ঘরে উঠলেন নাবিক সাব্বির
টাংগাইল জেলা প্রতিনিধি রাহিদ রানা : সোমালিয়ার জলদস্যুদরে হাতে জিম্মি টাঙ্গাইলের নাবিক সাব্বিরের বাড়িতে আজ ঈদের আনন্দ। মুক্ত হওয়ার পর থেকেই তাকে কাছে পাওয়ার অপেক্ষা করছিল সাব্বিরের বৃদ্ধ মা-বাবা বোন বন্ধুসহ স্বজনরা। ফিরে পাওয়ার আনন্দে তাই দুধ দিয়ে গোসল করিয়ে ঘরে তুলেনেন নাবিক সাব্বিরকে।
সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়ার ৬৫ দিন পর বৃহস্পতিবার সকালে টাঙ্গাইল শহররে আদালত পাড়ার বোনের বাসায় উঠলেন সাব্বির।
সাব্বির কে পেয়ে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঈদের উৎসব আমেজ বিরাজ করছে। সাব্বির ফিরে আসার খবর ছড়িয়ে পড়লে আত্মীয় স্বজন বন্ধু ও প্রতিবেশিরা তাকে এক নজর দেখার জন্য তার বাড়িতে ভীড় জমাচ্ছে।
সাব্বিরকে ফিরে পাওয়ার আনন্দে আর বিপদ আপদ মুক্ত থাকার কামনায় দুধ দিয়ে গোসল করিয়ে ঘরে তোলেন দুই খালা ও বোন।
সাব্বির জানায়, ‘যখন আমাদের জলদস্যুরা তাদের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে নেন, তখন থেকে আমরা তাদের কাছে বন্দি জীবনযাপন করছিলাম। তবে জাহাজে আমরা যে যার কাজ ঠিকঠাক মত করেছি, রোজা রেখেছি, নামাজও পড়েছি।
তিনি বলেন, ভয়ের বিষয় ছিল, জলদস্যুরা সময় অসময়ে ফাঁকা গুলি ছুড়তো, সে সময় আমরা ভীষণ আতঙ্কিত হতাম। নেভির জাহাজ আমাদের জাহাজের আশপাশে আসলে তারা আমাদের সে সময় মুভ করতে দিত না।
সাব্বির জানায়, ছাড়া পেয়ে সেই ঈদের আনন্দটাই এখন আল্লাহ যেন দিয়েছেন। আমাদেরকে ফিরিয়ে আনতে সিও স্যার সহ যারা গুরুত্বর্পূণ ভূমিকা রেখেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
সাব্বিরের বোন মিতু আক্তার বলেন, এখন আমার ভাই ফিরে এসেছে, আমরা অনেক খুশি। ওকে দুধ দিয়ে গোসল করিয়ে ঘরে তুলেছি। ভবিষ্যতে যেন আর ওর বিপদ না আসে।
গত (১৪ এপ্রিল) ভোরে জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হন এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজসহ ২৩ নাবিক। এরপর জাহাজটি পৌছায় দুবাই এর আল হামরিয়া বন্দর। সেখান থেকে মিনা সাকার নামের আরেকটি বন্দরে চুনা পাথর ভর্তী করার পর চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। সব মিলিয়ে ৬৫ দিন পর মুক্ত হয়ে নাবিকরা বাংলাদেশের স্বজনদের কাছে ফিরলেন।
উল্লেখ্য, সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে ভারত মহাসাগর থেকে জিম্মি হন বাংলাদেশী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ জন নাবিক। তাদের মধ্যে ছিলেন টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজলোর সহবতপুর ইউনয়িনরে ডাঙা ধলাপাড়া গ্রামের হারুন অর রশিদের ছেলে সাব্বির। টাঙ্গাইল শহরের কাগমারি এম এম আলী কলেজ থেকে ২০১৬ সালে এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমিতে। সেখান থেকে কৃতিত্বের সাথে পাস করে সর্বশেষ ২০২২ সালের জুন মাসে এমভি আব্দুল্লাহ নামক পণ্য বহনকারী একটি জাহাজে মার্চেন্ট কর্মকর্তা হিসেবে চাকুরী নেন সাব্বির।