একটি মহল উন্নয়ন কাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে
ডেস্ক রিপোর্ট: প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, একটি মহল সরকারের উন্নয়ন কাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। জাতির পিতার বেলায়ও এমন অপপ্রচার চালানো হয়েছে। তার কর্মকাণ্ডকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চালানো হয়েছে। এখন আমার বেলায়ও তাই হচ্ছে। যতই প্রশ্নবিদ্ধ করা হোক না কেন, জনগণের কাছ থেকে আমাকে দূরে সরানো যাবে না। আমার ক্ষমতার মূল শক্তি এ দেশের জনগণ।
বৃহস্পতিবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। টানা চার বারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করি। যে কাজগুলো আমরা করেছি, তার শুভ ফলটা দেশবাসী পাচ্ছে। কিছু লোক সেটাকে স্বীকার করেন না। তারা প্রত্যেকটা কাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করার উদ্দেশ্যে এটা করেন। তাতে তারা কী করতে পারেন, জনগণের কাছ থেকে তো আমাকে দূরে সরাতে পারবেন না। তিনি আরও বলেন, আমার একটাই শক্তি, আর তা হচ্ছে জনগণ। তাদের শক্তি নিয়েই আমি চলি। সেখানে একটা আস্থা সৃষ্টি হয়েছে জনগণের মাঝে যে, আমি তাদের জন্য কাজ করি। কাজেই ওই আস্থা-বিশ্বাসটাই হচ্ছে আমার একমাত্র সম্বল। আর এই সম্বল নিয়েই আমি চলি, এজন্য আমি কাউকে পরোয়া করি না। যতক্ষণ আমার দেশবাসী আমার পাশে আছে, আমি কাউকে পরোয়া করি না।
সরকারি প্রতিষ্ঠান শেয়ারবাজারে আনার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর : সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে পর্যায়ক্রমে শেয়ারবাজারে নিয়ে আসার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ছাতক সিমেন্ট কারখানাসহ সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে শেয়ারবাজারে অন্তর্ভুক্ত করা যায় কি না সে বিষয়ে অর্থ বিভাগ ব্যবস্থা নেবে। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ নির্দেশনা দেন তিনি। বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকার।
ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুস সালাম, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সহিদুজ্জামান সরকারসহ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক বৈঠক ও ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।
একনেক বৈঠকে খুলনা মেডিকেল কলেজ প্রকল্প থেকে ‘শেখ হাসিনা’ নামটি বাদ দেওয়ার নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। পরবর্তীতে উপস্থিত সবার অনুরোধে এই প্রকল্পে তার নামটি থাকলেও আগামীতে কোনো প্রকল্পে নিজের নাম না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। সেইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শেখ হাসিনার ম্যুরাল না করে ওই টাকা অন্য কোনো স্থানে ব্যয় করতেও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া আগামীতে যেকোনো ব্রিজ নির্মাণে বিশেষ সতর্ক হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নদীর পানিপ্রবাহ যাতে নষ্ট না হয় এবং ব্রিজের উচ্চতা ঠিক রাখতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে ‘বিএফডিসি রেডি টু কুক ফিশ’ ও মিল্কিং মেশিন হস্তান্তর : বাসস জানায়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান এমপির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ‘বিএফডিসি রেডি-টু-কুক ফিশ’ সামগ্রী হস্তান্তর করেছে। একই সঙ্গে গরুর দুধ আহরণের কাজে ব্যবহৃত একটি মিল্কিং মেশিনও এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, রেডি টু কুক ফিস কার্যক্রমের ফলে কর্মজীবী মহিলারা অনেক উপকৃত হবেন। তিনি কর্মজীবী মহিলাদের রান্না সহজীকরণে রেডি-টু-কুক ফিশ প্রস্তুতকরণ, বাজারজাতকরণ ও বাজার সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং সংশ্লিষ্টদের প্রতি দিকনির্দেশনা দেন।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, মোট ৪০ প্রজাতির মাছ রেডি টু কুক হিসাবে স্থায়ীভাবে ঢাকার কাওরান বাজারে অবস্থিত বিএফডিসি ভবনের মৎস্য বিতান, যাত্রাবাড়ীর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও চট্টগ্রাম মৎস্য বন্দরে বিপণন করা হচ্ছে। এছাড়া ঢাকা শহরের ১৬টি স্পটে ৬টি ফ্রিজিং ভ্যানের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ ভিত্তিতে ‘বিএফডিসি রেডি ফিস’ বাজারজাত করা হচ্ছে।
ভ্রাম্যমাণ স্পটগুলো হলো- ১) মিরপুর ডিওএইচএস, ২৭ নম্বর রোড, ২) বনানী, নেভী হেডকোয়ার্টার ও গুলশান (আজাদ মসজিদ সংলগ্ন), ৩) সচিবালয়ের দক্ষিণ গেট, ৪) মিরপুর ডিওএইচএস, মিরপুর, ৫) স্বপ্ন নগর আবাসিক এলাকা, ক্যান্টনমেন্ট, ৬) মিরপুর অপরাজিতা ভবন, মিরপুর, ৭) ধানমন্ডি ৬ নম্বর, ৮) আজিমপুর কলোনী, আজিমপুর, ৯) লেডিস ক্লাব, ইস্কাটন, ১০) সচিব কোয়ার্টার, ইস্কাটন (বুধবার ও শনিবার), ১১) দুদক অফিস সংলগ্ন, সেগুনবাগিচা, ১২) এজিবি কলোনী, মতিঝিল, ১৩) শংকর, ধানমন্ডি, ১৪) সেচভবন, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ (শুক্রবার ও শনিবার), ১৫) ধানমন্ডি ২৮ এবং ১৬) মোহাম্মদপুর মা ও শিশু হাসপাতাল সংলগ্ন, মোহাম্মদপুর। এছাড়া অনলাইন, ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমেও ‘বিএফডিসি রেডি টু কুক ফিশ’ বাজারজাত করা হচ্ছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহা. সেলিম উদ্দিন, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আওতাধীন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের চিফ টেকনিক্যাল কো-অর্ডিনেটর ডা. মো. গোলাম রব্বানী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।