ভূমি অফিসে বসেই ঘুষ নিলেন কর্মচারী
ডেস্ক রিপোর্ট : কিশোরগঞ্জে দফতরে বসে গুনে গুনে ঘুষ নিলেন ভূমি অফিসের সহকারী। কিশোরগঞ্জে ভূমি অফিসে এক কর্মচারীর ঘুষ নেওয়ার ভিডিও বিভিন্ন মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিষয়টি এখন সবার মুখে মুখে ফিরছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
ঘটনাটি কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মাইজখাপন ইউনিয়ন ভূমি অফিসের।
সম্প্রতি ভূমি অফিসের অফিস সহকারী আবদুল কাদির মিয়া নিজ দফতরে বসে সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি তার দফতরে বসে প্রকাশ্যে সেবা নিতে আসা জনৈক ভোলা মিয়ার কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা গুনে নিচ্ছেন। ভোলা মিয়া বলছেন, সব খারিজ সমান নয়।
গরিব মানুষ কাজটা করে দিয়ে দেন। প্রতি উত্তরে আবদুল কাদির বলছেন, কথা ছিল ৬ হাজার টাকা দিবেন। কম দিতে পারবেন না। পরে হলেও দিতে হবে।
একটা কাজ করে কিছু টাকা পাওয়া না গেলে চলে না। এরপর টাকাগুলো গুনে পকেটে রাখেন আবদুল কাদির। চলে যাওয়ার সময় ভোলা মিয়া আবারও বলেন, আপনি আরও ১ হাজার টাকার আবদার করেছেন একটা বিহিত হবে। আপনি কাজটা করে রাখেন।
এ অফিসে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগটি দীর্ঘদিনের।
সরকারি ফির বাইরে অতিরিক্ত টাকা না দিলে কোনো কাজ হয় না বলে অনেকের অভিযোগ। সে কারণে সেবাগ্রহীতারা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এ বিষয়ে স্থানীয় এক ভুক্তভোগী নুরুল ইসলাম জানান, যে জমি খারিজ করতে তিন হাজার টাকা লাগে, সেখানে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা দিতে হয়। শুধু তাই নয়, টাকা নিয়ে কাজ করে দিতেও হয়রানি করে। মাসের পর মাস ঘুরতে হয়। ভূমি কর্মকর্তা ও অফিস সহকারী দুজনে মিলে লুটেপুটে খাচ্ছে বলে তার অভিযোগ। আরেক ভুক্তভোগী ফুল মিয়া বলেন, আমার একটা জমি খারিজ করতে গিয়েছিলাম। ২৪ শতাংশ জমির জন্য ২৩ হাজার টাকা চেয়েছে। পরে খারিজ না করে চলে যাই। জানা গেছে, ১৯৯৭ সালে পল্লী বিদ্যুতের চাকরি ছেড়ে ভূমি অফিসের অফিস সহকারীর চাকরিতে যোগদান করেন আবদুল কাদির। এরপর থেকে অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছেন তিনি। আবদুল কাদিরের শুধু গ্রামে নয়; ঢাকাতেও বাড়ি রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। গ্রামের বাড়িটিও বেশ সুসজ্জিত। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অফিস সহকারী আবদুল কাদির কিছু বলতে রাজি হননি। মাইজখাপন ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মীর আবুল হাতিম তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন। অফিস সহকারী আবদুল কাদিরের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলতে পারবেন বলে জানান তিনি। এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঘটনাটি নজরে আসার পর সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। ঘুষের বিষয়টি প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।