তানোরে ইট ভাটায় টপসয়েল বাণিজ্যে কৃষি বিপর্যয়

তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধি : রাজশাহীর তানোরের মুন্ডুমালা পৌর সদরের মাহালীপাড়া মহল্লায় সরকারি নীতিমালা, ইট পোড়ানো আইন লঙ্ঘন ও
লোকালয় হুমকিতে ফেলে তিনফসলী জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে মেসার্স ফাইভ স্টার ইট ভাটা।
স্থানীয়রা জানান, ইট ভাটায় কয়লার পরিবর্তে হাজার হাজার মণ কাঠ পোড়ানো ও শিশু শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। এদিকে ইট তৈরীতে ব্যবহার করা হচ্ছে তিনফসলী জমির উপরিভাগের উর্বর মাটি (টপসয়েল)। এতে ফসলি জমির উর্বতা হ্রাস পাচ্ছ কৃষি বিপর্যয় ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে। লোকালয় ও তিনফসলী জমিতে এই ইট ভাটা গড়ে উঠায় আশপাশের জমিতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত এবং পরিবেশের ওপর বিরুপ প্রভাব পড়ছে।
প্রতিনিয়ত ফসলের মাঠ থেকে অবৈধ ভাবে উপরিভাগের উর্বরা মাটি (টপসয়েল) কেটে ভাটায় জমা করা
হচ্ছে। যার প্রভাব পড়েছে উৎপাদনমূখী কৃষির ওপর। এসব কারণে কৃষক ধানের অধিক ফলন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
অন্যদিকে কৃষি অধিদপ্তর বলছে, জমির উপরিভাগের ৬ থেকে ১০ ইঞ্চি মাটিতে জৈব পদার্থ থাকে। উপরিভাগ কাটার ফলে জমির ফসল উৎপাদনের ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট হয়। তাই ফসলি জমির উপরিভাগের উর্বর মাটি (টপসয়েল) কাটার কোনো সুযোগ নাই এটা দন্ডনীয় অপরাধ। সচেতন মহল এই ইট ভাটার বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানের দাবি করে সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
স্থানীয়রা জানায়, প্রশাসনের একশ্রেণীর কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে তারা দীর্ঘদিন ধরে ইটের ব্যবসা করে চলেছে। আবার
সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে অধিক মুনাফা করতে নিজেদের ইচ্ছেমতো ইটের ওজন ও সাইজ তৈরী করে কারচুপি করছে।
এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ বলেন, বছরের
পর বছর চাষাবাদ করায় ফসলের অবশিষ্ট অংশ পচে এবং সার
প্রয়োগের কারণে জমির উপরিভাগে মুল উর্বরা শক্তি বাড়তে থাকে। কিন্ত্ত জমির উপরিভাগের মাটি (টপসয়েল) কেটে নিয়ে গেলে জমিতে বিদ্যমান উর্বরা শক্তি হারিয়ে যাবে। যা ফিরে পেতে অনেক সময় লাগবে। তিনি বলেন, টপসয়েলের নিচের অংশে চাষাবাদ করলে প্রচুর পরিমানে রাসায়ানিক ও জৈবসার প্রয়োগ করলেও পূর্বের অবস্থায় ফিরতে কম পক্ষে দশ থেকে বার বছর সময়
প্রয়োজন। এবিষয়ে মেসার্স ফাইভ স্টার ইট ভাটার মালিক শামসুল ইসলাম এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সারাদেশে যেভাবে ইট ভাটা চলছে
তারাও সেভাবে চালাচ্ছেন। এবিষয়ে রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বলেন, এ বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয়
ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *