উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় মিধিলা
ডেস্ক রিপোর্ট : উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় মিধিলা।বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও ঘণীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’তে রূপ নিয়েছে। মোংলা সমুদ্রবন্দর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার সকল প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই গ্রহন করা হয়েছে।এব্যাপারে প্রস্তুতি গ্রহনের জন্য একইসঙ্গে সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উপকূলবাসীকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিতে বলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র শুকনো খাবার ও পানির ব্যবস্থা করতে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বলা হয়েছে। এছাড়া ১ হাজার ৯২০ জন সিপিবি সদস্য এবং রেড ক্রিসেন্ট, বিএনসিসিসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ৫০০ জন সদস্য উপকূলে কাজ শুরু করেছেন। এর পাশাপাশি বিভিন্ন এনজিও, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও জনপ্রতিনিধিরা কাজ করছেন।
দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলায় নগদ ৯ লাখ টাকা, ৬৫০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ ও ৩৫৯টি ঘূণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
এদিকে উপকূল বাসিকে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবকদের পক্ষ থেকে মাইকিং শুরু হয়েছে। শরণখোলা, মোংলা ও মোরেলগঞ্জ উপজেলায় স্থানীয়রা আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়া শুরু করেছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় মিধিলি’র প্রভাবে মোংলা সমুদ্র বন্দরে পন্য ওঠানামা বন্ধ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) রাত থেকে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর নাগাদ বৃষ্টির সাথে ঝড়ো বাতাস অব্যাহত আছে। নদ-নদীতে স্বাভাবিকের থেকল ১ থেকে ২ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সাগর উত্তাল রয়েছ।
শরণখোলার গাবতলিতে ঝুকিপূর্ণ বাঁধ এলাকা পর্যবেক্ষণ করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। উত্তর বঙ্গোপসাগর, গভীর সাগর ও সুন্দরবন উপকূলে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহ নিরাপদে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। তবে বেশ কিছু মাছ ধরা ট্রলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
অন্যদিকে সুন্দরবনের দুবলার চরে শুটকির জন্য আহারিত মাছ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন জেলে-মহাজনরা। বৃষ্টির স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পেলে দুবলার শুটকি পল্লীতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন জেলেরা। ১ নভেম্বর থেকে সুন্দরবনের দুবলাসহ কয়েকটি চরে ১০ হাজারের অধিক জেলে মহাজন অবস্থান করছেন শুটকি প্রক্রিয়াজাতকরণে।
সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলা জেলে পল্লী টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিলীপ মজুমদার মুঠোফোনে জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ের ফলে দুবলারচর সংলগ্ন এলাকায় বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে বৃষ্টিপাত হচ্ছে তাই শুঁটকির ক্ষতির পাশাপাশি সাগর উত্তাল থাকায় জেলেদের মাছ ধরাও বন্ধ করে দিয়েছে জেলেরা। মৌসুমের শুরুতেই দুর্যোগের কবলে পড়ায় আর্থিক ক্ষতিতে পড়বেন জেলেরা।