ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা শিক্ষা অফিসার দুর্নীতির দায়ে এখন প্রধান শিক্ষক
জসীমউদ্দীন ইতি ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : জেলার বহুল আলোচিত নাম খন্দকার মোঃ আলাউদ্দীন আল আজাদ। তিনি ঠাকুরগাঁও
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অভিযোগ রয়েছে তিনি নিয়মনীতির
তোয়াক্কা না করে, প্রকাশ্যে একের পর এক করে অনিয়ম দূর্নীতি গেছেন।
আর এ কারণে তার পদাবনতি হয়েছে বলে জানা গেছে। তিনি আগে ছিলেন শিক্ষা
অফিসার, এখন পদাবনতি করে তাকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে বদলি করেছে মাধ্যমিক
ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। যদিও তিনি এখন পর্যন্ত কর্মস্থলে যোগ
দেননি।
মাউশি’র এক আদেশ থেকে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও জেলা শিক্ষা অফিসার আলাউদ্দীন
আল আজাদের বদলীর আদেশ হয় গত ২৩ আগষ্ট এবং ২৯ আগষ্টের মধ্যে পঞ্চগড় জেলার
দেবীগঞ্জ উপজেলার নিপেন্দ্র নারায়ণ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান
শিক্ষক হিসেবে যোগদান করার কথা কিন্তু তিনি ২৪ সেপ্টেম্বর-রবিবার পর্যন্ত
নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেননি।
নিপেন্দ্র নারায়ণ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক
(ভারপ্রাপ্ত) জানান, খন্দকার মোঃ আলাউদ্দীন আল আজাদ এখনও যোগদান করেননি।
তিনি তো জেলা শিক্ষা অফিসার ছিলেন, হয়তো অন্য কোথাও যাওয়ার চিন্তা করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক
বলেন, তিনি নতুন কর্মস্থলে যোগদান না করে অন্য কোথাও বদলী নিতে
কর্তৃপক্ষের কাছে তদবীর চালিয়ে যাচ্ছেন।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার একাধিক প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, ওই
শিক্ষা অফিসার এতোই ঘুষখোর ছিলো যে, তিনি টাকা ছাড়া কিছুই বুঝতেন না।
তিনি ঘুষের টাকা চাইতে গিয়ে অনেকের কাছে অপমানিতও হয়েছেন। কেউ শার্টের
কলার ধরেছেন, কেউ আবার কিল ঘুষি মেরেছেন। কেউ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজও
করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার একটি বিদ্যালয়ের এক প্রধান
শিক্ষক বলেন, আমার বিদ্যালয়ে নিয়োগের জন্য এক লাখ টাকা দাবী করায় তার
সাথে আমার বাকবিতন্ডা হয়েছিল এবং এক পর্যায় তার শার্টের কলার ধরতে বাধ্য
হয়েছিলাম।
সদর উপজেলার আরেক প্রধান শিক্ষক বলেন, ওই শিক্ষা অফিসার আমার কাছে এক লাখ
টাকা দাবী করায় আমি তার উপর চেয়ার উঠাতে বাধ্য হয়েছিলাম। এমন চিত্র শুধু
সদর উপজেলায় নয়, জেলার অন্য উপজেলা গুলোতেও একই অবস্থা।
হরিপুর,বালিয়াডাঙ্গী, পীরগঞ্জ ও রাণীশংকৈল উপজেলার একাধিক উচ্চ
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, আলাউদ্দীন আল আজাদ
এতোই দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ছিলেন যে, তার কারণে অনেক শিক্ষক নি:স্ব হয়ে
পড়েছেন। তিনি ঠাকুরগাঁও থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি বেশীর
ভাগ সময় দিনের বেলায় অফিস না করে রাতের বেলায় এবং বন্ধের দিন অফিস করতেন।
আর সবকিছু লেনদেন হতো রাতের বেলায়।
এ ব্যাপারে আলাউদ্দীন আল আজাদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও
তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রংপুর বিভাগের উপ-পরিচালক শফিকুল ইসলাম এ
প্রসঙ্গে বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। আমার তেমন কিছু জানা নেই। তবে
খন্দকার মোঃ আলাউদ্দীন আল আজাদ ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নতুন কর্মস্থলে
যোগদান করেননি এবং এখনও এর কারণ জানা যায়নি।