এমপির নাম ভাঙিয়ে পাকড়ি স্কুলে নিয়োগ বাণিজ্যে

রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার পাকড়ি ইউনিয়নের (ইউপি) পাকড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে (জনবল) কর্মচারী নিয়োগে বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ মেধা নয় অর্থের বিনিময়ে জামায়াত-বিএনপি মতাদর্শীদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এমপির নাম ভাঙিয়ে এসব টাকা আদায় করা হয়েছে। এই নিয়োগ বাণিজ্যের খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীর মাঝে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, গত ২০২৩ সালের ৪ জুলাই একটি আঞ্চলিক ও একটি জাতীয় পত্রিকায় তৃতীয়বার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। নিরাপত্তাকর্মী, আয়া ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী ৩টি পদের বিপরীতে আবেদন করেন মোট ১৯ জন। কিন্ত্ত অদৃশ্য কারণে পরীক্ষায় মাত্র ১৪ জন আবেদনকারী অংশগ্রহণ করেছেন। এতে নিয়োগ কার্যক্রম নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। একই সঙ্গে নিয়োগ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ-অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। পরীক্ষা যদি না দেন, তবে দ্রব্যমুল্যের উর্ধগতির দিনে মানুষ কি সখ করে এক হাজার টাকা ব্যাংক ড্রাফ দিয়ে চাকরির আবেদন করবে। এটা অবশ্যই অধিকতর তদন্তের দাবি রাখে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আবেদনকারি জানান, আবেদন করার পর জানতে পারলাম আগে থেকেই সব লেনদেন হয়ে গেছে। এমনকি দরদাম করে প্রার্থী টিক করা হয়েছে। যে বেশি টাকা দিতে রাজি হয়েছে তার চাকরি হবে। তাহলে লোক দেখানো পরীক্ষায় অংশ নিয়ে লাভ কি। যেখানে মেধার কোন মূল্য নেই, মূল্য আছে টাকার তাহলে পরীক্ষা দিয়ে লাভ কি। অপরজন বলেন, তাকে আবেদন করিয়েছেন প্রধান শিক্ষক তিনি ডামি প্রার্থী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। ওই পদে ১৫ লাখ টাকায় প্রধান শিক্ষকের মনোনিত ব্যক্তিকে নিয়োগ করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত ৫ আগষ্ট শনিবার পাকড়ি স্কুলে গোপনে নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হয়। কিন্ত্ত স্কুলে ১৪৪ ধারা জারী বা লাল ফ্ল্যাগ দেয়া হয়নি। প্রশ্নপত্র পরীক্ষার আগে তৈরীর কথা থাকলেও আগেরদিন প্রশ্নপত্র তৈরি করে প্রার্থীদের দেয়া হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সহকারী শিক্ষক জানান গত ৪ আগষ্ট শুক্রবার সন্ধ্যায় স্কুলে যাদের সঙ্গে প্রধান ও সভাপতির আলোচনা হয়েছে। পরের দিন ৫ আগষ্ট কাকতালীয়ভাবে তারাই লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। এছাড়াও শিক্ষকদের চাঁদার টাকায় ডিজির প্রতিনিধি ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সম্মানে প্রায় অর্ধলাখ টাকা খরচ করে স্কুলে রাজকীয় ভুরিভোজ আয়োজন করা হয়েছে। তিনি বলেন,দেওপাড়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান আক্তারের অনুসারী প্রধান শিক্ষক। সরেজমিন অনুসন্ধান করলে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে। স্থানীয়রা সরেজমিন তদন্তপুর্বক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দুলাল আলম এবং ডিজির প্রতিনিধি সিরোইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহাদাৎ হোসেন নিয়োগ সম্পর্কে কোনো বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, মধ্যাহ্ন ভোজ স্কুল করেছে। এবিষয়ে জানতে চাইলে পাকড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুনুর অর রশিদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নিয়োগ কিভাবে হয় সেটা সবাই জানেন। তিনি বলেন, নিয়োগের যাবতীয় কাজ উপর মহল নিয়ন্ত্রণ করেছেন। এবিষয়ে জানতে চাইলে স্কুলের সভাপতি বিপ্লব বাস্কি এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কিছু মানুষ এসব অপপ্রচার করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *