টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে মিথ্যা অভিযোগে সাদেক (১৮) নামের এক শিক্ষার্থীকে রাতে আটক করে পরের দিন টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগে এসআই লিটন মিয়াকে বদলী করা হয়েছে।
রাহিদ রানা, টাংগাইল : টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে মিথ্যা অভিযোগে সাদেক (১৮) নামের এক শিক্ষার্থীকে রাতে আটক করে পরের দিন টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগে এসআই লিটন মিয়াকে বদলী করা হয়েছে। অন্যদিকে ঘুষ নিয়ে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগে জেলা পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ দিয়েছে ওই শিক্ষার্থীর বাবা আব্দুল আলীম।
রবিবার (২৩ জুলাই) ভূঞাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. লিটন মিয়াকে ভূঞাপুর থানা থেকে পাশ্ববর্তী বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব থানাতে বদলী করা হয়।
৪৫২৮/১(৩) (আরওআই) স্মারকের বদলীর আদেশে বলা হয়, আদেশ পাওয়ার সাথে সাথে বদলীকৃত কর্মস্থলে যোগদান করে অত্র অফিসকে অবহিত করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হল।
এর আগে গত সোমবার (১৭জুলাই) রাত প্রায় দেড়টার দিকে পূর্ব ভূঞাপুর এলাকার আব্দুল আলীমের ছেলে সাদেককে ভূঞাপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে চোর সন্দেহের অভিযোগে আটক করেন এসআই লিটন মিয়া। পরে তাকে থানায় অন্যান্য আসামীদের সাথে বন্দি রাখা হয়। এরপর মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) বিকেলে সাদেকের বাবা আলীমের কাছ থেকে এক লাখ ১৫ হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
জানা গেছে, উপপরিদর্শক (এসআই) লিটন মিয়া পাশ্ববর্তী গোপালপুর থানার হেমনগর ফাঁড়ি থেকে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভূঞাপুর থানায় যোগদান করেন। এরপর ২০২১ সালে পাশ্ববর্তী বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব থানায় বদলী করা হলেও তদবীর করে আবার গত ২০২২ সালে জুন মাসে তিনি ভূঞাপুর থানায় আসেন। তার বিরুদ্ধে পূর্বে অনেক অভিযোগ রয়েছে। গত ১৭ জুলাই রাতে ভূঞাপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে কলেজ ছাত্র সাদেককে চুরির করার অভিযোগে আটক করেন এস আই লিটন মিয়া। পরে থানার হাজতে রাখার পর পরেরদিন বিকেলে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া হয়। পরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা প্রতিকার চেয়ে গত শনিবার (২২ জুলাই) পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের পর এসআই লিটনকে বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব থানায় বদলীর আদেশ দেয়া হয়।
সাদেকের বাবা আব্দুল আলীম বলেন, অভিযোগের পরে যেহেতু উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্হা নিয়েছেন সেহেতু এই বিষয়ে আর লেখালেখি না হওয়াই ভালো।
এবিষয়ে ভূঞাপুর থানার উপপরিদর্শক (এস আই) লিটন মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন হয়ে গেছে তাই অন্য থানায় বদলী করা হয়েছে। এছাড়া সাদেক নামের ওই ছেলেকে সন্দেহমূলকভাবে আটক করা হয়েছে। পরে প্রমাণিত না হওয়ায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে কোন টাকার লেনদেন হয়নি।
ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফরিদুল ইসলামের মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, অভিযোগ পেয়েছি সেটির তদন্ত হচ্ছে। তদন্তকালীন এসআই লিটন মিয়াকে বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব থানায় বদলী করা হয়েছে। আগামী তিনদিনের মধ্যে তাকে যোগদান করতে বলা হয়েছে।