ঝালকাঠিতে যাত্রীবাহি বাস পুকুরে পড়ে নিহত ১৭ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে
ডেস্ক রিপোর্ট : জেলায় ঝালকাঠি-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ছত্রকান্দা এলাকায় একটি যাত্রীবাহি বাস উল্টে পুকুৃরে পড়ে গিয়ে ১৭ জন নিহত হন এবং ২৫ জন আহত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ ও দমকল বাহিনী। নিহত সবার পরিচয় পাওয়া গেছে।
শনিবার সকাল ১০টার দিকে গাবখান ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ঝালকাঠি থানার অফিসার ইনচার্জ নাসির উদ্দিন সরকার জানান, ঢাকা মেট্রো-ব ১৪-৬৫৪৯ বাশার স্মৃতি পরিবহন নামের বাসটি প্রায় ৬০জন যাত্রী নিয়ে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া থেকে বরিশাল যাচ্ছিল। পথিমধ্যে ছত্রকান্দা ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সামনে দ্রুত গতিতে আসা বাসটি হঠাৎ উল্টে পুকুরে পড়ে যায়। খবর পেয়ে ঝালকাঠি থানা পুলিশ ও দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার কাজ শুরু করে।
তিনি জানান, এখন পর্যন্ত আটজন নারী, ছয়জন পুরুষ ও তিন শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত অবস্থায় ২৫ জনকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে ১৭ জন সবার পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন- ১. তারেক রহমান (৪৫) পিতা পান্না মিয়া ভান্ডারিয়া পৌরসভা থানা ভান্ডারিয়া, ২. সালাম মোল্লা (৬০) পিতা মুজাফফর আলী ভান্ডারিয়া পৌরসভা থানা ভান্ডারিয়া ৩. খাদিজা বেগম (৪৩) স্বামী-মৃত মাওলানা নজরুল ইসলাম ৪. খুশবো আক্তার (১৭) পিতা মাও. নজরুল ইসলা গ্রাম নিজামিয়া থানা রাজাপুর, ৫. শাহীন মোল্লা (২৫) পিতা মৃত সালাম মোল্লা ভান্ডারিয়া পৌরসভা থানা ভান্ডারিয়া, ৬. সুমাইয়া (৬) পিতা জালাল হাওলাদার গ্রাম পশারিবুনিয়া ভান্ডারিয়া ৭. আবদুল্লাহ (৮) পিতা দেলোয়ার হোসেন গ্রাম চর বোয়ালিযা বাখরগঞ্জ ৮. রহিমা বেগম (৬০) স্বামী মৃত লাল মিয়া রিজাভ পুকুর পাড় ভান্ডারিয়া ৯. আবুল কালাম হাওলাদার পিতা মৃত লাল মিয়া হাওলাদার ১০. রিপামনি (২) পিতা- রিপন মেহেদীগঞ্জ সদর ১১. আইরিন আক্তার (২২) স্বামী রিপন হাওলাদার মেহেদীগঞ্জ ১২. নয়ন (১৬) পিতা নজরুল ইসলাম বলাইবাড়ি রাজাপুর, ১৩. রাবেয়া বেগম (৮০) স্বামী মৃত ফজলুল হক মৃধা উত্তর শিয়ালকাঠি ভান্ডারিয়া, ১৪. সালমা আক্তার মিতা (৪২) পিতা তৈয়বুর রহমান বাশবুনিয়া কাঠালিয়া, ১৫. মো. ফারুক হোসেন (৫৫) পিতা-মৃত কাঞ্চন তালুকদার গ্রাম শৌলজালিয়া থানা কাঠালিয়া জেলা ঝালকাঠি, ১৬. সাদিয়া বেগম (২২) স্বামী- রাসেল থানা ভান্ডারিয়া জেলা পিরোজপুর, ১৭. পারভীন (৬০) পিতা- মুখলাল বয়াতি বরিশাল ।।
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত যাদের নাম জানা গেছে তারা হলেন- আবুল বাশার কাঠালিয়া, রাসেল মোল্লা ভান্ডারিয়া, ফাতিমা ভান্ডারিয়া, রাসেল ভান্ডারিয়া, মিফতা নলছিটি, রিজিয়া কাঠালিয়া, রিজিয়া কাঠালিয়া, আরজু কাঠালিয়া, মনোয়ারা রাজাপুর, সুইটি ভোলা, রুকাইয়া বাউফল, আজিজুল নলছিটি, আলাউদ্দিন রাজাপুর, সোহেল রাজাপুর, আবুল কালাম রাজাপুর, আকাশ বরগুনা, সোহাগ সাতক্ষিরা, নাঈমুল মঠবাড়িয়া, সিদ্দিকিুর বাউফল, মনিরুজ্জামান ভান্ডারিয়া, আল-আমিন ঝালকাঠি, সাব্বির বরিশাল।
এ ছাড়া দুইজনকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে যাদের নাম জানা যায়নি। ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম জানান, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মামুন শিবলীকে আহবায়ক করে ৫ সদস্য বিশিস্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি তিনদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবে।
ঝালকাঠি বাসমালিক সমিতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মু. নাসির উদ্দিন বলেন, দুর্ঘটনা কবলিত বাসের ড্রাইভার এবং সুপারভাইজারের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। হেলপার আকাশ (১৭) কে পাওয়া গেছে। ঝালকাঠির পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক টুটুল বলেন, পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের পক্ষ থেকে লাশ দাফন ও পরিবহনের জন্য ১ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে।