রাজনৈতিক কর্মী আর সন্ত্রাসী গুলিয়ে ফেলেছেন বিএনপি নেতারা : তথ্যমন্ত্রী
ডেস্ক রিপোর্ট : তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি নেতাদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হচ্ছে যে, তারা রাজনৈতিক কর্মী আর সন্ত্রাসী গুলিয়ে ফেলেছেন।
তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসী কর্মকান্ড আর রাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্যে পার্থক্য আছে, কিন্তু বিএনপির কর্মসূচি হচ্ছে সন্ত্রাস নির্ভর, তারা রাজনীতির নামে সন্ত্রাস করেন। এখানেই হচ্ছে বিপত্তি।’
সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) প্রকাশিত ড. কামরুল হাসান সম্পাদিত ‘সংবাদপত্রে নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। পিআইবি’র মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ ও গ্রন্থকার মোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন।
সাংবাদিকরা বিএনপি মহাসচিবের মন্তব্য ‘সরকারের অত্যাচার-নির্যাতনের কারণে জাতির সব অর্জন অগ্রগতি হারিয়ে যেতে বসেছে’ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘এর অর্থ গত সাড়ে ১৪ বছরে জাতির অনেক অর্জন আছে এটা মির্জা ফখরুল সাহেব স্বীকার করে নিয়েছেন। সরকার কারো ওপর জুলুম-নির্যাতন চালাচ্ছে না। কিন্তু যারা আগুন সন্ত্রাস চালিয়েছে, পুলিশের ওপর হামলা করেছে এবং এখনও করছে, মির্জা ফখরুল সাহেবদের নেতৃত্বে যারা এখনো রাস্তায় গাড়ি-ঘোড়া ভাংচুর করছে, তাদের বিরুদ্ধে তো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’
রুহুল কবির রিজভীর মন্তব্য ‘পদত্যাগের দাবিতে মানুষ রাস্তায় নেমেছে দেখে সরকারের সিংহাসন টলমল করছে’ এর জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘রিজভী সাহেব কি এটা জেগে বলেছেন না ঘুমিয়ে বলেছেন এবং তার মানসিক স্বাস্থ্য কেমন -সেটি আমার প্রশ্ন। দেশে কোথাও তারা তাদের কর্মীদেরও নামাতে পারেনি, সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা। আসলে দুশ’-চারশ’ মানুষ নিয়ে তারা মিটিং করতে অভ্যস্ত এখন দু’-চার হাজার দেখে মাথাটা নষ্ট হয়ে গেছে, এই হচ্ছে সমস্যা।’
চাঁদাবাজি, ব্ল্যাকমেইলসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত অনিবন্ধিত আইপি এবং ক্যাবল টিভি’র বিরুদ্ধে অভিযানের অংশ হিসেবে সম্প্রতি চট্টগ্রামে জেলা প্রশাসন চারটি অবৈধ আইপি টিভি’র অফিস সিলগালা করা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার অনুমোদিত বৈধ টেলিভিশন চ্যানেলগুলো প্রতি মাসে শুধু বিটিআরসিকে ২০ লাখ টাকার বেশি ফি দেয়। এসব টিভিতে অনেক সাংবাদিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। ইতিমধ্যে ৩৬টি বেসরকারি টিভি চ্যানেল সম্প্রচারে আছে, আরো আসবে। কিন্তু কোনো অনুষ্ঠানে গেলেই দেখা যায় যে, এই টিভি চ্যানেলের মতো একই ধরনের বুম আর ছোট একটা ক্যামেরা নিয়ে হাজির হয় অননুমোদিত নানা আইপি টিভি। এদের কোনো অনুমোদন নাই, এরা চাঁদাবাজির সাথে যুক্ত।’
হাছান মাহমুদ জানান, ‘সম্প্রচার নীতিমালা অনুযায়ী আইপি টিভি বা ইউটিউব চ্যানেলের নামে সংবাদ বুলেটিন বা অন্য কৌশল অবলম্বন করে সংবাদ প্রচার করা যায় না, তারপরও তারা এই কাজটি করে এবং সেটি করতে গিয়ে অমুকের পক্ষে সংবাদ প্রকাশ করার জন্য চাঁদা নেয়, বিপক্ষে করার জন্যও হুমকি দিয়ে চাঁদা নেয়। বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় সাংবাদিক নিয়োগ দেয়ার জন্য টাকা নেয়, প্রতি মাসেও প্রতিনিধিদের কাছে উল্টো টাকা দাবি করে। এই কাজগুলো সারাদেশে বিভিন্ন জায়গায় হচ্ছে। আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে এ ব্যাপারে অভিযান পরিচালনা করার জন্য এবং যাদের বৈধ লাইসেন্স নেই যারা চাঁদাবাজি এবং অন্যান্য অপকর্মের সাথে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য।’
রোববার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সেই অভিযান পরিচালনা করেছে এবং কয়েকটি আইপি টিভির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে, তাদের অফিসও সিলগালা করে দিয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘সেটি করতে গিয়ে আবার ‘কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে এসেছে’ অর্থাৎ সেখানে তাদের কার্যালয়ের মধ্যে অবৈধ ও ভেজাল নানা ধরণের খাদ্যসামগ্রী পাওয়া গেছে। অন্যান্য জেলাতেও খুব সহসা এ ধরণের অভিযান পরিচালিত হবে।’